আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নকল ভেজাল ওষুধ

দেশের সংবিধানে চিকিৎসাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় বাজেটে চিকিৎসাকে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। চিকিৎসার অপরিহার্য উপকরণ ওষুধ। সঠিক ওষুধ মানুষের জীবন রক্ষায় যেমন অবদান রাখে তেমন নকল ওষুধ বিপদের কারণ ঘটায়। কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির অভাবে দেশের ওষুধ বাজার নকল ও নিম্নমানের ওষুধে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করে দেশের বিপুলসংখ্যক রোগী আরোগ্য লাভের পরিবর্তে স্বাস্থ্যগত জটিলতার শিকার হচ্ছেন। গাঁটের টাকা খরচ করে ওষুধ কিনে তারা কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছেন না। সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মফস্বলে নিম্নমানের ওষুধ বাজারজাত করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। সরকারি হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবাধে বিক্রি হচ্ছে, যা দেখার কেউ নেই। গ্রামাঞ্চলের সহজ-সরল মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। তাদের জীবন নিয়ে চলছে ছিনিমিনি খেলা। জীবন রক্ষায় ব্যবহৃত হয় ওষুধ। বাংলাদেশেই এখন মানসম্মত ওষুধ তৈরি হচ্ছে এবং তা ইউরোপ-আমেরিকায়ও রপ্তানি হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আগামীতে গার্মেন্টের পরই ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে সর্বোচ্চ বৈদশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। তবে হতাশার দিক হলো, দেশে এখন মানসম্মত ওষুধের পাশাপাশি মানহীন ওষুধও উৎপাদিত হচ্ছে, প্রতারিত হচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। অপ্রয়োজনীয় ওষুধে বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। ওষুধ বিপণনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে চলছে যাচ্ছেতাই অবস্থা। ওষুধের ট্রায়াল নিয়ে বিরাজ করছে বিপজ্জনক বিশৃঙ্খলা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ওষুধ মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার আগে কার্যকারিতা পরীক্ষায় পূর্ণাঙ্গ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে ওষুধ বাজারজাতের আগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দেওয়া হয় না। এ অনিয়ম জনস্বাস্থ্যের জন্য যেমন হুমকি সৃষ্টি করছে তেমন ওষুধ শিল্পের সুনামে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি, নকল-ভেজাল রোধে ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে আরও বেশি নজরদারির প্রয়োজন। প্রতিটি ওষুধ মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। নকল ওষুধ তৈরি ও বিপণনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে প্রচলিত আইনে সংস্কার এনে তা আরও কঠোর করার কথা ভাবতে হবে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.