আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৈশাখে টো টো

বটমূল, হালখাতা, গ্রীষ্ম, ইলিশ, পান্তা, গান, হইচই, বন্ধু, মেলা, চুড়ি, মুখোশ...
পয়লা বৈশাখ—শুনলেই কোন শব্দটা সবার আগে মাথায় আসে? কিছু তরুণের কাছে এই ছিল প্রশ্ন। কেউ চট করে একটা কিছু বলে ফেললেন। কেউ ভাবতে গিয়ে বেশ খানিকটা সময় নিলেন। একেকজনের কাছে উত্তরটা একেক রকম। তবে সবার একটা মিল আছে।

সবাই বলেছেন, তাঁরা সারাদিন ঘুরবেন, আনন্দ করবেন।
ঘুরে ঘুরে বেড়ানোর পর যে যে শব্দটা মাথায় আসে পয়লা বৈশাখ নিয়ে, তাহলো ‘রং’! চোখ বুজে দিনটা কল্পনা করলেই কত রং দেখা যায়! বাবার আঙুল ধরে যে ছোট্ট ছেলেটা মেলায় ঘুরতে যায়, তার গালে আঁকা একতারার রং। মেয়েদের শাড়ি-চুড়িতে মিলেমিশে এক হওয়া রং। উচ্ছল যুবকের মাথায় বাঁধা গামছার রং। সব মিলিয়ে রঙিন একটা দিন।

যে রং শুধু বাইরে নয়, ছড়িয়ে যায় মনেও।
আসছে সেই রঙের মেলা। প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। আলোকচিত্রীরা হয়তো লেন্সের জোগাড়যন্ত্র করে রাখছেন, নববর্ষের দিনটাতে দারুণ কিছু ‘ক্লিক’ চাই। গানে-নাচে পারদর্শীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে প্রস্তুত।

পছন্দের শাড়ি-পাঞ্জাবিটা বেছে নিতে কেউ কেউ ভিড় করছেন ফ্যাশন হাউসগুলোতে। তরুণদের তো নানা পরিকল্পনা থাকে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আবার কর্মক্ষেত্রের বন্ধু—সবাইকে আলাদা আলাদা করে সময় দিতে হয়। এদিন সময় ব্যবস্থাপনাও একটা কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের কাছে। এক দলের সঙ্গে দেখা করলে আরেক দল অভিমান করে।

প্রস্তুতি আর পরিকল্পনা ভিন্ন হলেও প্রত্যেকের আয়োজনের সার কথা একই—এসো হে বৈশাখ এসো এসো!
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও মজিলা ফাউন্ডেশনের ছাত্র-প্রতিনিধি তানহা ইসলামের কাছে এবারের পয়লা বৈশাখটা একটু বেশিই আনন্দের। মা রাজশাহী থেকে শাড়ি কিনে এনেছেন। নতুন শাড়ি পরে এবারের পয়লা বৈশাখটা উদ্যাপন করবেন নিজের ক্যাম্পাসে, তানহার যেন আর তর সইছে না। ‘আমাদের নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পয়লা বৈশাখে মেলা হয়। নাচ, গান, আরও নানা রকম আয়োজন থাকে।

এবার তাই দিনটা ক্যাম্পাসেই কাটাব। আমার বাসা ধানমন্ডিতে। খুব সকালে ভাইবোনদের নিয়ে রবীন্দ্র সরোবরেও যেতে পারি। ’ বলছিলেন তিনি।
অভিনেতা অ্যালেন শুভ্রর কাছে পয়লা বৈশাখ দিনটা উৎসবমুখর।

সারা বছর শুটিংয়ের ব্যস্ততা থাকলেও এদিনে কোনো কাজ রাখেন না। এমন দিন শুধু বন্ধুর দল আর পরিবারের জন্য। ‘পয়লা বৈশাখে সবার মুখে হাসি থাকে। এটা সবচেয়ে ভালো লাগে। আমার সারা দিন কাটে বন্ধুদের সঙ্গে।

একটা পুনর্মিলনীর মতো হয়ে যায়। সারা দিন ঘোরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া বাইরে হলেও, রাতে বাসায় এসে খাই। ’ বলেন অ্যালেন।
এই একটা দিন মনে হয় ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’ বাজে। কিন্তু পরদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পড়ালেখার চাপ, পরীক্ষার চোখ রাঙানি।

সেই ভয়ে কেউ আবার এমন দিনেও পড়তে বসে যান না তো? এমন কৌতূহল নিয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলো সাদিয়া ইসলামের সঙ্গে। ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ঘ ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম হয়েছিলেন। ভালো ছাত্রী হলেও সাদিয়া অবশ্য নিজেকে ‘পড়ুয়া’ বলতে একদম নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘পয়লা বৈশাখের পরদিন পরীক্ষা থাকলেও পড়তে বসি না। প্রয়োজন হলে আগেই পড়া শেষ করে রাখি।

এবার আমি আর আম্মু এক রকম শাড়ি কিনেছি। দুজন নতুন শাড়ি পরে বের হব। এ ছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে তো ঘুরবই। দিনটার অপেক্ষায় আছি। ’
যাঁরা উৎসবের দিনে শহর ঘুরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান মাতিয়ে রাখেন, তাঁদের কাছে দিনটা কেমন? কথা হলো শূন্য ব্যান্ডের শিল্পী এমিলের সঙ্গে।

বললেন, ‘আমরা এমনিতেও লোকগান করি। পয়লা বৈশাখে গানগুলো আরও জমজমাট হয়। এবারের পয়লা বৈশাখ আমাদের কাছে একটু ভিন্ন। কারণ, নতুন বছরের প্রথম দিনে আমাদের নতুন অ্যালবাম বাজারে আসছে। নাম ভাগো।

প্রতিবারের মতো এবারও কিছু অনুষ্ঠানে গান করব। আশা করছি, দারুণ একটা দিন কাটবে। ’

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।