কমিশনের কার্যপরিধি স্পষ্ট ও বিস্তৃত করে এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রস্তবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন (সংশোধন) ২০১৩’ এই অনুমোদন পায়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠকে এ আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। চূড়ান্ত অনুমোদনে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।
আইনের সংশোধন নিয়ে পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন পাহাড়ি সংগঠনের অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সচিব বলেন, “প্রতিটি বিষয় পযালোচনা করেই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
”
আইনটি যথার্থ হয়েছে মন্তব্য করে সচিব বলেন, “যারা উদ্বিগ্ন, তারা যদি আইনটি ভালভাবে পর্যালোচনা করেন এবং গভীরে যান, তাহলে বুঝতে পারবেন, এ আইন পাহাড়ি বাঙ্গালী সবার জন্যই কল্যাণকর হবে। কারো ক্ষতির কারণ হবে না। ”
এর আগে গত ২৭ মে এই খসড়ায় নীতিগত অনুমতি দেয় মন্ত্রিসভা।
মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তিতে কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন করা হচ্ছে।
বর্তমান আইনে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে কমিশনের সর্বসম্মতির প্রয়োজন হয় বা চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে ধরা হয়।
আইন সংশোধন হলে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিতে কমিশনের সর্বসম্মতি বা চেয়ারম্যানসহ সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন প্রয়োজন হবে।
কমিশনের পাঁচ সদস্যের মধ্যে চেয়ারম্যানসহ মোট তিন জনের সিদ্ধান্ত এক হলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
২০০৯ সালের জুলাই মাসে ভূমি কমিশন পুনর্গঠনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির জন্য জরিপ চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে জনসংহতি সমিতিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংগঠন, সুশীল সমাজ, তিনটি সার্কেলের প্রধানরা (তিন রাজাসহ) এর বিরোধিতা করে।
তাদের বক্তব্য ছিল, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এই ভূমি কমিশন আইন সংশোধন করা না হলে এই জরিপ সফল হবে না।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় কমিশনে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
চলতি আইনে ‘পুনর্বাসিত শরণার্থীদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ’ পার্বত্য চট্টগামের প্রচলিত আইনে নিষ্পত্তি করার কথা বলা হয়েছে। এর সঙ্গে ‘অবৈধ বন্দোবস্ত ও বেদখল’ জমির বিরোধও যুক্ত করতে বলা হয়েছে খসড়ায়।
প্রচলিত আইনে কোনো বৈধ মালিকদের ভূমি বলতে কেবল জমি বোঝানো হলেও সংশোধিত আইনে ভূমি বলতে জমি ও জলাভূমি বোঝানো হবে।
মূল আইনে সার্কেল প্রধানের একজন প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হলেও তার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ছিল না।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এই প্রতিনিধিও কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
চার বিষয়ে অবহতিকরণ
গত ফেব্রুয়ারি মাসে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ কমিশনের দশম সভা, গত এপিল মাসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের তুরস্ক সফর, গত মে মাসে ইরানে অনুষ্ঠিত এশিয়া কো-অপারেশন ডায়ালগ: মিনিস্ট্রিয়াল মিটিং অন কালচারাল কো-অপারেশন এ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর অংশগ্রহণ এবং গত এপিল মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত প্যাসিফিক এনার্জি সামিট ২০১৩ এ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সোমবার মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।