জামাত-শিবির দূরে গিয়া মর! একটা অনুরোধঃ এই লেখা পড়ে আমাকে কেউ খারাপ ভাববেন না। আমি এমনই। সবাই এক রকম হয় না। আমি না হয় এমনই হলাম। কারও কোন অবজেকশান-অভিযোগ থাকলে সরাসরি বলবেন।
আমি গ্রামীনফোন পছন্দ করিনা, তবে ক্লিয়ার কাট কথা পছন্দ করি।
সবাইকে খালি প্রেম করতে দেখি। এক বন্ধুরতো একারই চার গার্লফ্রেন্ড।
একদিন বলেই ফেললাম,"দোস্ত! তোর যে কোন একটা গার্লফ্রেন্ড আমারে ধার দিবি? খালি মোবাইলে প্রেম করব। ১০০ টাকা দিমুনে।
" গার্লফ্রেন্ড তো পাই নাই, উল্টা বন্ধু আমার উপর বক্সিং প্রাকটিস করছিলো।
কাল ১২-১২-১২। একটা ইশপিশাল দিন। সাকিব ভাই বিয়ে করতেছেন। আমি তো ছোট।
আমি বিয়ে কেমনে করি? তবে এই দিনে আমার ইশপিসাল প্লান আছে।
আমার বিয়ে করার বয়স হয়নি, তবে প্রেম করার বয়স হয়েছে। কালকে একজনকে প্রপোজ করব। সে রাজি না হলে ব্যাকআপে আরও দুইজন কে ষ্ট্যান্ডবাই করে রেখেছি। কেউ একজন রাজি হলেই হয়।
এ যাবৎ আমার সকল গার্ল ফ্রেন্ড এবং প্রপোজ ষ্টাইলঃ
দুঃখদায়ক হলেও সত্যি আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নাই। তবে কথায় আছে একবার না পারিলে দেখ শতবার । আমি শতবার এখনও করিনি, তবে ১৬ জনকে প্রপোজ করেছি । এবং তাদের একজনও রাজি হয়নি।
১ম জিএফঃ
আমি তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি।
আমার ক্লাসে রিতু নামে এক মেয়ে ছিল। মনে মনে পছন্দ করতাম। আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম। তো ভাবলাম ওকে প্রপোজ করতেই হবে। বাবা তখন প্রতিদিন আমাকে দুই টাকা করে হাত খরচ দিতেন।
আমি টাকা জমিয়ে রাখা শুরু করলাম। ঠিক করলাম, পরীক্ষার রেজাল্টের পর ঐ টাকা দিয়ে কোন খেলনা কিনে ওকে উপহার দিয়ে "আই লা ভু" বলে ফেলব। কিন্তু রেজাল্টের দিনে ও কিন্তু এলনা।
পরে জানলাম সে ইংলিশ মিডিয়ামে এ্যাডমিশন নিয়েছে। কি আর করা.. ঐ টাকা দিয়ে পরে ভিডিও গেমস কিনেছিলাম।
আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। এখন ঐ মেয়ে জাম্বো হয়ে গেছে। ক্লাস সেভেনে দুবার ফেল্টুশ করেছে। নাকের নিচে আবার গোফের মত হালকা হালকা লোমও দেখা যায়।
২য় জি এফঃ
ক্লাস ফাইভে স্কুল বদল করতে হলো।
আমি বেসরকারি স্কুলে পড়তাম, বৃত্তি পরীক্ষা দিবো তাই সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে হলো। স্কুলে ঈশিতা নামে এক মেয়ে পড়ত । ওকে আমার বেশ ভাল লাগতো। তো সামনা সামনি কিছু বলার রিস্ক নিলাম না । পিয়ন পদ্ধতি অবলম্বন করলাম।
কিন্তু পিয়ন ভাইজান আমাকে ব্যাম্বো দিয়ে নিজেই ওকে প্রপোজ করে বসলেন। আল্লাহ যা করেন ভালোই করেন। তাহারা দুজন প্রেম করিলেন, আর আমি ছ্যাকা খাইয়া পড়ায় মন দিলাম । ফলাফল আমি বৃত্তি পাইয়া গেলাম, তাহারা পাইলেন না।
৩য় জি এফঃ
বৃত্তি পাইয়া জিলা স্কুলে টেরাই মারলাম।
কেমতে কেমতে চান্সও পায়া গ্যালাম। কিন্তু হায় রাম একি? এতো দেখি বয়েজ স্কুল । কি আর করা পড়তে থাকলাম। ক্লাস এইটে ইংরেজী পড়তে যেতাম ক্লাস টিচার সালাম স্যারের কাছে। সৌভাগ্য বশত তার বাড়ির সামনে গভঃ গার্লস স্কুলের এক গণিত স্যার থাকতেন এবং তিনিও মেয়েদেরকে প্রাইভেট পড়াতেন।
সেখানে একটা মেয়ে আসত (নাম জিজ্ঞেস করা হয় নি) ওকে আমার বিদিক ভালো লাগতো । একদিন ডাক দিয়ে মনের কথা বললাম। হঠাৎ কি হলো জানিনা, আবিস্কার করি আমি গালে হাত দিয়ে মাটিতে বসে আছি আর তার হাতে স্যান্ডেল । বন্ধুদের সবার সামনে এমন বেইজ্জত করায় মন খারাপ হলো । এবং প্রেমের চিন্তা দূর করে দিয়ে পড়া লেখায় মন দিলাম।
এই ঘটনার অনেকদিন পর মার্কেটে তার সাথে দেখা হয়েছিল। আমাকে সে কফি খাওয়ালো এবং সেই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইল। মেয়েটার ক্ষমা চাওয়া দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম। এতদিন আগের ঘটনা সে মনে রেখেছে এবং সেজন্য ক্ষমাও চেয়েছে দেখে ওর উপর আমার সব অভিমান দূর হয়ে গেল । এখন সে কৃষি বিজ্ঞানে পড়ে এবং দেশ একজন অসাধারন মেধাবী ভালো একজন কৃষি বিজ্ঞানী পেতে যাচ্ছে।
আশ্চর্য যে এখনও তার নাম জানি না। ঐদিন ওর ক্ষমা চাওয়া দেখে এত হতবাক হয়েছিলাম, যে নাম পর্যন্ত জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি।
৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ জি এফঃ
২০১০ সালের ১৪ই ফেব্রয়ারী। আমার জীবনের বিভীষিকাময় দিন। তিনজনকে প্রপোজ করার টার্গেট নিয়ে বেরিয়েছিলাম ।
পুরো এক বোতল এ্যাক্স দিয়ে গোসল করেছিলাম । ১ম জনকে একটা গোলাপ ফুল দিয়ে কেবল আইলাভু বলতে যাব এর ভেতর সে আমার বাম গালে একটা রাম চড় মেরে দিলো।
আমি আর কিছু না বলে মেয়েটার হাতের শক্তির প্রশংসা করতে করতে ২য় জনের কাছে গেলাম। তাকে চকোলেট দিলাম, ফুল দিলাম এবং একটা কার্ডও দিলাম। যখনই আইলাভু বল্লাম, সে একধ্যানে একটু তাকিয়ে থেকে কয়েকটা ঝাড়ি মেরে না করে দিলো।
আমি ভদ্র ছেলের মতো উপহার গুলো ফেরত চাইলাম। এখানেই ঘটলো বিপত্তি। বাম গালে আবার......
কি আর করা। এবার তৃত্বীয় জনের পালা। গিয়ে প্রপোজ করলাম।
মেয়েটা ডানহাত উঠাতেই আমি একপা পিছিয়ে গিয়ে বললাম,"বাম গালে মাইরো না। এই গালে অলরেডি দুইটা রাম চটকানা খাইছি। মারতে চাইলে ডান গালে মারো। " মেয়েটা খুব ভালো ছিল। সে আমাকে কোন গালেই চড় মারে নি।
পচা জিএফঃ
মেসি যখন এদেশে এল তখন তো পুরাই পিনিক অবস্থা। ফেসবুকে একের পর এক ষ্ট্যাটাসে জগাখিচুড়ি অবস্থা। একটা মেয়েকে প্রপোজ করবো। গেলাম, মেসির বড় একটা পোষ্টার উপহার দিলাম।
হায় কপাল, তুমি যে রিয়ালের পাগল, রোনালদোর ফ্যান আগে কইলে কি সমস্যা ছিল?
ভালো জি এফঃ
কয়েকমাস আগে একটা মেয়েকে প্রপোজ করতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু করিনি। কারন মেয়েটা একটা ছেলেকে অনেক ভালবাসে, ছেলেটাও। আমি কাবাবের মাঝখানে হাড্ডি হতে চাইনি । গত ৪ই নভেম্বর তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। শুভকামনা তাদের জন্য।
ফেসবুকে প্রেমঃ
ফেসবুকে এত সুন্দর সুন্দর মেয়ে, বাপরে বাপ। একদিন একজন কে মেসেজ পাঠাইলাম, "আই লাভ ইউ, আপনার নাম কি? " উল্লেখ্য মেয়েটার প্রোফাইল নাম ছিল "একাকী সকালের পাখি"। মেয়েটা নাতো আমার প্রেমাবেদনে সাড়া দিল, নাতো তার নাম জানাল। উল্টা ব্লক করে দিল। এরপরও অনেককে প্রপোজ করেছি।
কেউ রাজি হয়নি।
আগামী কালের প্রপোজঃ
কাল সকালে দুইজন আর বিকালে একজনকে প্রপোজের চিন্তা করেছি। যে কোন একজন রাজি হলেই হয়।
-----------------------------------------------------------------
কিছু বলি?
আমার গনহারে প্রপোজ ইশটাইল দেখে সবাই খারাপ ভাবছেন, তাই না? ভাবেন ভাই সমস্যা নাই। সত্যি বলতে কি আমি এখনও কাউকে সিরিয়াসলি প্রপোজ করিনি।
তেমন মেয়েই পাইনি । কেমন মেয়ে পছন্দ? বলে কি লাভ, এমন মেয়েরা কি আমায় পছন্দ করবে? তবুও বলি।
১) মেয়েকে এ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হতে হবে।
২) ক্রিকেটের পাগল হতে হবে।
৩) মেসি+বার্সার উড়া-ধুড়া পাগল হতে হবে।
৪) হুমায়ন স্যারের ভক্ত হতে হবে।
৫) শাকিব খানের ভক্ত হলে হবে না।
৬) লম্বা চুল থাকা লাগবে।
৭) হাত-পায়ের নখ ছোট থাকতে হবে।
৮) দাঁত হলুদ হওয়া যাবে না।
৯) মাথায় উকুন থাকা চলবে না।
১০) মুখে গন্ধ থাকলে হবে না।
১১) অবশ্যই খুব মোটা হওয়া যাবে না।
১২) ঝগড়াটে হওয়া যাবে না।
১৩) আমার পিছে মুক্ত হস্তে খরচ করা লাগবে।
১৪) ৫ ফুটের মত লম্বা হতে হবে। পাচ ফুট তিনের বেশি না।
১৫) নম্র-ভদ্র-বিনয়ী হতে হবে।
১৬) বাধ্যতামূলক ভাবে বাংলা গান জানতে হবে এবং প্রতি রাতে আমাকে অন্তত একটা গান গেয়ে শোনাতে হবে।
১৭) লম্বা ওড়না দিয়ে সুন্দর করে মাথা ঢেকে রাখতে হবে।
১৮) হাসি সুন্দর হতে হবে।
১৯) ফর্সা বা শ্যামলা হলে সমস্যা নাই। তবে অবশ্যই পরিস্কার পচ্ছিন্ন থাকতেই হবে।
২০) এত্ত কিউট হতে হবে, এত্ত কিউট হতে হবে, এত্ত কিউট হতে হবে যে চেহারার দিকে তাকালেই সব রাগ মাটি হয়ে যাবে। সব চিন্তা দূর হয়ে যাবে।
সব কিছু ভুলে শুধু তার হাত ধরে সারা জীবন পার করে দেয়া যায়।
আপাতত আর মনে পড়ছে না। মনে হলে আপডেট করে দেবো।
সবাই আমার জন্য দোয়া কইরেন। কেউ ভুল বুইঝেন না প্লিজ! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।