একুশ আমার অহংকার....... হিমু এবং সোহেল রানার একদিন হাজত বাস...
(বি:দ্র: সোহেল রানা কিন্তু হিমুকে চেনে না)
সোহেল রানা হাজতে । তার মেজাজা প্রচুর খারাপ । তাকে সেলের ভিতর নিয়ে যাওয়া হলো । সেলের ভিতর এককোণায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বসে ছিলো হিমু । এই অবস্থায় একজনকে দেখে রানার মেজাজা খারাপ গেলো আরও খারাপ হয়ে ।
রানা : ওই বান্দরের বাচ্চা ঠিকমতো বস ।
হিমু : (তড়িঘড়ি করে উঠে বসে) জি? ওহ্ হো সরি । আপনি আসলেন অবশেষে ?
রানা : আমি আসলাম অবশেষে মানে ? ওই কি কইবার চাস ?
হিমু : না, আসলে গত কয়েতদিন ধরেই থানার লোকেরা বলাবলি করছিলো যে, আপনি আসবেন ২-১ দিনের মধ্যেই । আপনার নাকি বাঙ্গি ফাটবে ।
রানা : (ক্ষেপে গিয়ে) ওই বেয়াদপ ।
সামলে কথা বলবি । তুই চিনস আমারে?
হিমু : না গুলু ভাই । কে আপনি ?
রানা : গুলু ভাই মানে ?
হিমু : একে তো আপনার নাম জানি না, তার উপর আপনার স্বাস্থ্য ও মাশআল্লাহ । দুয়ে মিলে আপনারে নাম দিলাম গুলু ।
রানা : দেখ বেশি তামশা করার চেষ্টা করবি না ।
মেজাজ যদি Out of Control হয়ে যায়, তাইলে কিন্তু এই থানা পুরা গুড়ায়া দিমু । এহানে আইসি কেন জানস তুই ?
হিমু : না গুলু ভাই ।
রানা : আইবার আগে একখান ৯ তালা বিল্ডিং গুড়ায়া দিসি । যদি ও নিজের হাতে না । মিডিয়ার ভূমিকা ও আছে ।
কিন্তু ভালোই লাগতেসে রে…….তোর নাম টা যেন কি ?
হিমু : জ্বী, হিমালয় । ভাই ৯ তালা বিল্ডিং যদি ভাইঙ্গা পড়ে তাহলে তো অনেক লোক মারা গেসে ?
রানা : ১ম কথা, তোর নাম চেইঞ্জ করা হলো । আমার সাথে এখানে থাকতে হলে তোর নাম এখন থেকে হিম জ্ং । মুরাদ ভাই টারে অনেক মিস করতেসি তো । ২য় কথা, যেহেতু বিল্ডিং এ গার্মেন্টস ছিলো কয়েকটা , অনেক লোক তো মারা যাবেই রে পাগল ।
আর মাঝে মাঝে এসবের দরকার আছে । আমার সাভার টা দেখ । মানুষের কোন নজরই পড়ে না । ঢাকার পাশে থাইকাও কেমন জানি আলাদা আলাদা । এইটাও একটা গোপন ক্ষোভ ছিলো আমার ।
আজকে দেখ পুরা দেশের নজর আমগো দিকে । আর প্রকৃতির ইচ্ছায় মাঝে মাঝে এইসব কাহিনি ঘটে সবকিছু একটু ব্যালেন্সড হওয়ার জন্য। আমি তো মনে কর উছিলা মাত্র ।
হিম জ্ং : না গুলু ভাই, যথার্থই বলেছেন । আসলেই দরকার আছে ।
তার চেয়ে বড়কথা ওই গার্মেন্টস কর্মী গুলাও একটু বেশী বেশী । সারাক্ষণ শুধু টাকা টাকা করে । ঠিক না ?
রানা : (ভ্রু কুচকে) ওই ভালো কথা, তুই কি লীগ করস না দল করস ?
হিম জ্ং : লীগ ভাই লীগ । আপনি পাগল হইসেন আমি করবো দল ? বাবালীগ করি আমি ।
রানা : বাবালীগ ! এটা আবার কোন লীগ ?
হিম জ্ং: গুলুভাই আমার বাবার দেখানো পথেই আমি চলি ।
তার আইডিওলোজি ই আমার আইডিওলোজি । মহাপুরুষ আমার হতেই হবে ।
রানা : মহাপুরুষ হইবো ? এহহহহ মহাপুরুষ ? আগে তো মুসা ইব্রাহিম হ পারলে ?
হিম জ্ং: না গুলু ভাই , আমি বরং আপনার কথা মতো হিম জং ই হবো তাও মুসা ইব্রাহিম না ।
রানা : আচ্ছা শোন, সবাই ভাবতেসে যে আমার মনে হয় অনেক বড় কোন শাস্তি হবে ।
হিম জ্ং: অনেকে তো গুলু ভাই, অনেকে তো ফাসি ফাসি ও বলতেসে ।
রানা : আহা, ওটা হলো গিয়ে অতি উত্তেজনার ফল । আমার বেশি হলে কিছু বছরের কারাদণ্ড হবে । তারপর তো আবার আমি আগের মতোই সাভার নিয়ে এগোবো । তো তোর শাস্তি কি ?
হিম জ্ং: ভাই, আমি হয়তো এখনই ছাড়া পাবো, নযতো বেশি হলে ১ ঘন্টা পর ।
রানা : তুই করসিলি কি ?
হিম জ্ং: তেমন কিছু না, এক এম.পির চোখে মরিচ ডলা দিসি ।
বেচারার চোখের অবস্থা খারাপ তার মধ্যে তারে জানালাম যে তার মেয়েরে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না । পুরাই অস্থির হয়ে গেসে ।
রানা : তাহলে তো তোর খবর হবে । মেয়েরে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না, তুই জানলি কিভাবে ?
হিম জ্ং: ঐ যে বললাম না, বাবালীগ । বাবা এসে বলে দিসে ।
আর আমারে ঐ এম.পি এসেই ছাড়ায়া নেবে গুলু ভাই ।
রানা : তুই আসলেই পাগল শালা । আচ্ছা, তোর বাবারে জিগাতো, আমার ভাগ্যে কি হবে ?
হিম জ্ং: যদিও গুলু ভাই, এটা ফিউচার এর ব্যাপার, তাও বলি । আমি দিব্যচোখে দেখতে পাচ্ছি যে , আপনি এবং আপনার বিল্ডিং এর ঐ গার্মেন্টস মালিকগুলোর আদৌ তেমন কোন শাস্তি হবে না ।
রানা : হুমম তোর বাবা তো দেখি সত্যিই বলতেসে ।
আরকিসু ?
হিম জ্ং: জ্বী আছে গুলুভাই । কোটি কোটি অভিশাপের দরূন খুব শীঘ্রই যেসব লোক মারা গিয়েছে তাদের অতৃপ্ত আত্মাদের জালা-যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আপনি এবং আপনার বিল্ডিং এর ঐ গার্মেন্টস মালিকদ্বয়ের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে ।
রানা : (হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে) হিমালয়ের বাচ্চা, তোরে আমি এখনই ফালায়া দিবো ।
একথা বলেই তার দিকে ছুটে গেলো.
হিম জ্ং অ্ট্টহাসি দিতে থাকলো । রানা হঠাৎ অবাক হয়ে দেখলো হিম জ্ং হাজতে একা না ।
তাকে ঘিরে সাভার ট্র্যাজেডীতে মারা যাওয়া সব অতৃপ্ত আত্মারা তার দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে । রানা বুঝতে পারলো তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে ।
আজ আমার এক বন্ধু এই আমারে পাঠাইছে.........
(সংগ্রহিত) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।