আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার সুইজারল্যান্ড ট্যুর....পর্ব-২

প্রথম পর্বের পর....http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29721296 বাইরে অপেক্ষয়মান বিভিন্ন জনগনকে জিগ্ঙাসার পর কেউ খুব একটা বুঝলো কিনা সন্দেহ কারন খুব কম লোকই পেলাম যারা ইংরেজি জানে। এখানের ভাষা সুইস/ফ্রেন্স/জার্মান তারপর ইংরেজি। সঙ্গে বিশাল বিশাল লাগেজ, বাইরে বৃষ্টি, কোন ফোন নাম্বার বা ঠিকানা নাই, ইংরেজি জানা লোকজন খুজে পাচ্ছি না........সত্যিকার অর্থে এই প্রথম আতংক অনুভব করলাম। হঠাৎ ত্রান কর্তা হিসেবে এক ভারতীয় দম্পতিকে পেলাম। তাদেরকে বলতেই বললো, আমরাও IBIS হোটেলে যাচ্ছি আপনারাও হোটেলের গাড়িতে লিফ্ট নিতে পারেন।

যাক... জানে পানি আসলো..... IBIS হোটেলে নামার পর reception থেকে বললো আমরা ভুল হোটেলে এসেছি....IBIS চারটা হোটেল লাল/নীল...এটা লাল আমাদেরটা নীল এ বুকিং, এখান থেকে হাটার পথ ১০ মিনিট। কিভাবে যাবো বলতেই ট্যাক্সি ডেকে দিল সঙ্গে ড্রাইভারকে বুঝিয়ে দিল। অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে ট্যাক্সিতে উঠলাম। কিন্তু তখনও বুঝি নাই এখানকার ড্রাইভারও যে আমাদের সদরঘাটের ড্রাইভার । বেটার গাড়িতো চলছেই আর চলছেই ..থামার লক্ষন নাই...বুঝলাম নতুন চক্করে পড়েছি কারন reception থেকে বলছে হাটার পথ ১০ মিনিট আর এ বেটার তো থামার লক্ষন দেখছি না।

ইংরেজিতে বলতেই আকার ইংগিতে বললো ইংরেজি জানে না। এতো দেখি নতুন বিপদ...কার পাল্লায় পড়লাম..আমার বসতো ফিস ফিস করে বলেই বসলো ..নিশ্চয় বেটা হাইজাকার...প্রত্যেকেরই সাথে প্রচুর ডলার...এটা একটা চক্র। ...চেঁচামেচি যে করবো রাস্তাঘাটেতো মাছি ও দেখছি না...পুলিশের নাম্বার কত ..কিভাবে সাহায্য চাইবো তাও জানি না...আল্লাহ আল্লাহ করা ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। একসময় ট্যাক্সি থামলো কিন্তু ভাড়া আসলো ৩০০ সুইস ফ্রা....মানে পায় ২৮০০০ টাকা.....যাক তা ও তো টাকার উপর দিয়ে যেয়ে...সঠিক যায়গায় পৈাছাতে পেরেছি। IBIS হোটেলে সুইজারল্যান্ড এর সবচেয়ে কমদামী হোটেল।

১২৫-১৩৫ সুইস ফ্রা সঙ্গে ফাটাফাটি নাস্তা ফ্রি ও Transport card ফ্রি, চাইলে দুইজন থাকতে পারবেন একরুমে বা ফ্যামিলি নিয়ে। রুমটা নেহাত মন্দ নয়......টিভি আছে কিন্তু ফোন নেই। তবে নাস্তা আমার দারুন পছন্দ হয়েছে....সুইজারল্যান্ড এ খাবার খুব expensive সে তুলনায় ১২ সুইস ফ্রাতে এ নাস্তা অনেক ভালো। আর Transport card টা খুব উপকারী কারন এটা দিয়ে আপনি পুরো জেনেভা ভ্রমন করতে পারবেন বিনা পয়সায় (বাস, ই-রেল, মেট্রো) নতুবা অনেক ফ্রা গুনতে হবে পকেট থেকে। সুইজারল্যান্ড এ রোববার মানে রোববার ... সবকিছু বন্ধ শুধু কিছু খাবারের দোকান ছাড়া।

এমন কি জনমানুষ ও দেখা যায়না খুব একটা। কাজে খাবার নিয়ে পড়লাম ঝামেলায়...এধরনের দেশে আমরা সাধারনত ম্যাকডোনাল্ডের উপর নির্ভর করি.....তাই রুমে ফ্রেশ হয়েই শুরু করলাম নতুন অভিযান ম্যাকডোনাল্ডের খোঁজ। পেয়ে গেলাম খুব তাড়াতাড়ি, রাস্তার উল্টা দিকে। তবে ম্যাকডোনাল্ডের দোকান ছাড়াও অনেক খাবারের দোকান আছে কিন্তু দোকানে ঢুকার পর ১) হারাম হালাল দেখে ২) ম্যানু দেখে ....তারপর সিদ্ধান্ত নিবেন..... খাবেন কিনা খাবেন না নতুবা ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে (যারা ভোজন রসিক ও যাদের পকেটে ডলার আছে তাদের কথা আলাদা)। ইতিমধ্যে আবিষ্কার হলো আমার একজন শ্রদ্ধেও কলিগ নিজের মনে করে আরেকজনের লাগেজ তুলে নিয়ে এসেছে....হাহাহা...নুতন ঝামেলা....আমরাতো তাকে খেপানো শুরু করলাম....... জেনেভাতে ঘুরার মত বলতে সিটি পার্ক, জেনেভা লেক আর ঘড়ির মিউজিয়াম।

দেশটি এতো সুন্দর তা দেখেও কদিন কাটাতে পারবেন। কিন্তু ঘড়ি কিনতে হলে পকেটের জোর লাগবে সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড নাম্বার। অদ্ভুত অবস্থা টাকা দিমু কিন্তু ঘড়ি বেচবে না.......তবে অন্যান্য শহরে আপনি কিনতে পারবেন ক্রেডিট কার্ড নাম্বার ছাড়া। গার্মেস্টস আইটেম হাত দেয়া্র অবস্থা নেই..সোনার থেকেও মূল্যবান। একটা জিনিস দেখে খুব ভালো লাগলো কাপড়ের গায়ে "Made in Bangladesh" দেখে।

অন্যান্য জিনিস ও আকাশচুম্বি দাম...কেনার আগে মূল্য দেখে নিবেন। তবে কিনতে চাইলে সুইস ফ্রাকে কখনই টাকাতে কনভার্ট করবেন না তাহলে ৯৫ গুন দিয়ে জিনিস কেনার সাহস হবে না। সুইস ফ্রাকে টাকার সমান মূল্য দিলেই একমাত্র কিছু কিনতে পারবেন। জেনেভা লেক দেখে যতনা ভালো লেগেছে লেকের পাড়ের ভিক্ষুক দেখে তত খারাপ লেগেছে...ভিক্ষুক শুধু আমাদের Sole agent না...জেনেভার মত জায়গায় ও আছে। পার্থক্য শুধু তাদের ড্রেসআপ চমৎকার আমাদেরটা করুন।

Lousanne সিটিতে ৩ বাচ্চা নিয়ে মা ভিক্ষুক দেখেছি এবং বাচ্চাগুলো আমাদের ভিক্ষুকের বাচ্চার মত আমার জামা ধরে টানাটানি শুরু করেছিল এবং নাছোড়বান্দার মত পিছনে লেগে ছিল। (ছবিতে গ্রীন ড্রেস) জেনেভার weather খুব uncertain, যেকোন সময় বৃষ্টি আবার ভালো হলে দারুন রোদ। Weather forecast দেখে সিটির লোকজন বের হয়। আমরা দুদিন ঝড় বৃষ্টি পেলেও বাকি দিনের weather খুবভালো ছিল। নভেম্বর শুরুতেও ঠান্ডা অনুভব হয় কিন্তু ভয়াবহ নয় কারন তেমন বাতাস নেই বলে তবে বৃষ্টি হলে আলাদা কথা।

এরকম ঠান্ডায় ক্যাফেতে কফি খেতে গেলে সঙ্গে অবশ্যই ফ্রি রুটি খেতে ভুলবেন না। আজ এটুকু....পরবর্তীতে ....চলবে............................. ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.