জীবনেরটানে স্বপ্নেরখোজে, খুজে ফেরা নিজের প্রান, তবু আমি ছুটে চলি, স্পাইসিস্পাই001 গল্পটি আমার এক কলিগ রাজু ভাই এর কাছ থেকে শোনা, শুনে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গিয়েছিল। জানিনা ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারব কিনা তবে চেষ্টা করে দেখিনা হয় কিনা..........
রাজু ভাই এর গ্রামের পাশেই প্রতি সপ্তাহে শুক্রবারে বিশাল হাট বসত, এখনও বসে তবে আগের মত জমজমাট না । ঐসময় হাটের দিনটা একধরনের উৎসবের মত ছিল । অনেক দুরদুরান্ত থেকে লোকজন আসত বানিজ্য করতে । নিত্য-প্রয়োজনীয় এমন কোন জিনিসছিলো না, যা হাটে না পাওয়া যেত ।
হাটের আশেপাশের গ্রামের লোকজন পুরো সপ্তাহের বাজার এখান থেকেই করত ।
বিশাল হাটের এক কোনায় বেশ-খানিকটা জায়গা নিয়ে বসত পাচু কবিরাজ । এমন কোনো রোগ পাওয়া দুষ্কর যার ঔষধ পাচু কবিরাজ এর কাছে নেই । হরেক রকম গাছগাছালির শিকড় ছাল-বাকল দিয়ে সে চর্ম-যৌন-অশ্ব সহ সর্বরোগের ঔষধ বানাত । বিভিন্ন কৌশল, কায়দা, ছলচাতুরী দেখিয়ে সে তার ব্যবসা চালাত, এসব কাজে তার দুই-তিনজন সহকারী তাকে অভিনয় করে সাহয্য করত।
নানা কৌশলের মধ্যে জ্যান্তকবর এর কৌশলটা বেশ জনপ্রিয় ছিল । এই কৌশল দেখার জন্য উৎসুক মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পর্যন্ত থাকত না । এই কৌশলটি পাচু কবিরাজ নিজেই দেখাতো তার অসীম শক্তির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য । দুরদুরান্ত থেকে লোকজন আসত পাচুর কেরামতি দেখার জন্য, তারা শুধু দেখেই শান্ত থাকত না শক্তি-বর্ধক ঔষধ কেনার জন্য লাইনে দাড়াত । ঘন্টাখানেক ঠেলাঠেলির যুদ্ধ শেষে শক্তি-বর্ধক ঔষধ নিয়ে বিজয়ের হাসি দিয়ে তবেই বাড়ি ফিরত ।
জ্যান্তকবর কৌশলটি দেখানোর জন্য পাচুর দলবল মাটি খুরে কবরের ব্যবস্থা করে রাখত, তারপর পাচু কবরে শুয়ে পড়লে তারা পাচুকে জ্যান্তকবর দিতো । এভাবেই পনের-বিশ মিনিট পাচু কবরে থাকত, হয়তো কোনো সুক্ষ ছিদ্রপথ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতো । তারপর সহযোগীরা তাকে কবর থেকে তুলতো । পাচু কবর থেকে উঠে যেনো কিছুই হয়নি ভাবধরে ছোটোখাটো একটা বক্তৃতা দিয়ে ঔষধ বিক্রিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ত ।
এমনি একদিন উৎসুক মানুষের প্রচুর ভীড় জমেছে পাচুর কেরামতি দেখার জন্য, পাচুর দলবলও প্রস্তুতি নিচ্ছে জ্যান্তকবর কৌশল দেখানোর জন্য ।
পাচু যথারীতি কবরে শুয়ে বিড়ি ফুঁকছিল । পাচুর সহযোগীরা পাচুকে বিড়ির ধোঁয়া মুখ থেকে বের করার সুযোগ না দিয়েই মাটি চাপা দিয়ে দিলো । পাচুকে জ্যান্তকবর দিয়ে তারা ব্যবসার খাতিরে পাচুর শক্তির গুণগান উৎসুক মানুষের মাঝে বিলাইতে লাগিলো । এদিকে পাচু কবরের ভেতর পড়ছে ভীষণ ফান্দে, বিড়ির ধোয়ায় তার শ্বাস-প্রশ্বাস এর জন্য বরাদ্দকৃত সুক্ষ ছিদ্রপথ আটকে গেছে । উপায়ন্তর না পেয়ে পাচু কবর থেকে হুংকার দিয়ে বেরিয়ে, দিলো এক দৌড়, আর উৎসুক জনগন তো ভয়ে দিক-বিদিক দৌড়াতে লাগলো, পাচুর সহযোগীরা পর্যন্ত ভয়ে পালালো ।
লোকজন ভয়ে এমনভাবে দৌড়াচ্ছিলো যে তাদের দেখে হাটের সবাই কেনাবেচা বাদ দিয়ে কিছু না বুঝেই প্রানভয়ে যে যার মতো দিক-বিদিক দৌড়ালো ।
আর পাচু কবিরাজ সেই যে দৌড় দিলো তার আর কোন পাত্তাই নেই, কই যে গেলো আল্লাহ মালুম । ওরে যদি জনগন আবার পাইতো শক্তি-বর্ধক পিল সব একবারে খাওয়াইতো, এমনিতেই সহযোগী দুইটারে জুতার মালা পড়িয়ে পরের হাটে ঘুড়ানো হইছিল ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।