প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মনে করে প্রয়োজনের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেট উচ্চাভিলাষী নয়। এর চেয়েও বড় আকারের বাজেট দরকার। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটের জন্য অর্থ সংগ্রহ-প্রক্রিয়া বাস্তবসম্মত নয় এবং বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক দক্ষতা এই সরকারের নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। দলটি মনে করে, এই বাজেটের ফলে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে।
তাদের ওপর নিত্যনতুন করারোপ করা হবে। এমনিতেই মানুষের ব্যয় গত কয়েক বছরে ৫৮ ভাগ বেড়েছে।
গতকাল রাত আটটার দিকে সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার।
এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মওদুদ আহমদ। তিনি বাজেট সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘এটি সুন্দর একটি বড় বেলুন।
’
বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া প্রসঙ্গে এম কে আনোয়ার বলেন, ‘এটা বরাবরই হয়ে আসছে। এবার সব খাতে সেই সুযোগ রাখা হয়েছে। এটা অনৈতিক। ভোটের জন্য এটা করা হয়েছে কি না, জানি না। ’
এ বিষয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, এই সরকারের সময়ে অনেকে বিপুল পরিমাণ কালোটাকার মালিক হয়েছেন।
তাঁরা যেন এটা সাদা করতে পারেন, সে জন্য এটা করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই সুযোগ বাতিল হবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, ‘তখন দেখা যাবে। ’ তিনি বলেন, এই বাজেটে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। নির্বাচন সামনে রেখে এটা করা হয়েছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির চেয়ে দলের রাজনৈতিক উন্নতির প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এম কে আনোয়ার বলেন, অর্থমন্ত্রীর পাঁচ ঘণ্টার বাজেট বক্তৃতায় সরকারের আত্মতুষ্টি হওয়া ছাড়া জনগণের জন্য তেমন কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে করের আওতায় আনা, অভ্যন্তরীণ ঋণ, বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংকবহির্ভূত ঋণের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের যে উৎসের কথা বলা হয়েছে, তা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। তিনি অভিযোগ করেন, বড় আকারের বাজেট দেখাতে সরকার স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বাজেটকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ কম দেখিয়ে সরকার বুদ্ধিভিত্তিক সততা দেখিয়েছে। এবারও সরকার প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে না।
এম কে আনোয়ার বলেন, কৃষিসহ সব খাতে গত বছরের তুলনায় তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি কমিয়ে সরকার জনগণকে আরও এক দফা বেশি মূল্যে পণ্য ক্রয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তবে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব ঠিক আছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু করাকে সরকার রাজনৈতিক জেদ হিসেবে নিয়েছে। এর ফলে অর্থনীতিতে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, তার বিরূপ প্রভাব দেশকে অনেক বছর বয়ে বেড়াতে হবে। আর ভারতের দেওয়া অর্থে সেতু করার চিন্তা না করাই ভালো।
এর আগেও তারা ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংসদ জয়নাল আবেদিন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, রেহানা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।