আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি ভয়ন্কর এ্যকসিডেন্টের কথা...

পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/ আমি আরো কয়েকজন বন্ধু রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম। হটাৎ পেছন থেকে এক আফ্রিকান আমাকে মাহমুদ মাহমুদ বলে ডাকছিল। প্রথমে বুঝতে পারিনি যে ভদ্রলোক আমাকেই ডাকছে। যখন বুঝতে পারলাম তখন আবিস্কার করলাম তার সাথে বোরখা পরিহিত তার স্ত্রী এবং এক বন্ধু।

আমি কাউকেই চিন্তে পারলাম না। তারপর ও কুশল বিনিময় করে জিজ্ঞেস করলাম 'কি সাহায্য করতে পারি'। ভদ্রলোকটি বলল, আমি নই আমার স্ত্রী তোমাকে ডাকছে। আরো অবাক হলাম। ভদ্র মহিলা বলতে লাগলেন, তুমি বাংলাদেশী না? আমি বললাম, হ্যা।

সে বলতে লাগল, আমার স্বামী আফগানিস্থান যেতে চাচ্ছে। আমি বললাম তাতে আমি কি করতে পারি? সে বলল, কিন্তু আমি চাচ্ছি সে ঢাকা যাক। তাই তোমার সাহায্য চাই। আমি বললাম, ঢাকার সাথে আফগানিস্তানের কী সম্পর্ক? সে বলল, ঢাকায় বিশ্বের সব চেয়ে বেশি তাবলিগ জামাতের কাজ হয়। তখন আমি বুঝতে পারলাম, স্বামী জেহাদি মনা আর স্ত্রী তাবলিগ মনা।

স্বামী আফগান যেতে চাচ্ছে কিন্তু স্ত্রী চাচ্ছে তাকে ঢাকা পাঠাতে। যদিও প্রথমবার এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন হলাম তবুও দেশের নাম শুনে বেশ পুলকিত হলাম। ভদ্রলোককে বলতে লাগলাম, তুমি আফগান গেলে নিজেও শেষ হবে তোমার ফ্যামিলিও শেষ হবে, আর যা করবে তাতে ইসলামের ও বদনাম হবে। বলতে না বলতেই পেছন থেকে একটি গাড়ি এসে ভদ্রলোকে রাস্তায় পিষিয়ে দিয়ে গেলো। মাহিলা চীৎকার করতে লাগল।

বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেল। সন্ধার পূর্বমুহুর্তে তেমন মানুষ এগোলো না। কয়েক জন মানুষ লাশের হেফাজত করার জন্য অন্যান্য গাড়িগুলোকে থামানোর জন্য গাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ালো। একি!!! গাড়ি থামাতে গিয়ে স্লিপ কেটে তাকেও রাস্তায় পিষে দিল। আমার চোখের সামনেই ঘটনা ঘটে গেলো।

রাস্তার দুই ধারে দুই লাশ। গাড়ি প্রচন্ড বেগে আসছে আর যাচ্ছে। তখন লাশগুলোকে সরিয়ে নেয়ার জন্যে আরো দুইজন চলন্ত গাড়িগুলোর সামনে গিয়ে ইশারা দিতে লাগল। এবারও সেই একই অবস্থা। আমার ঠিক দুই হাত দূরে দুইজনকে পিষে একটি বাস বিদ্যুত গতিতে চলে গেল।

আমি গাড়ির নাম্বারটা মাটিতে লিখে রাখলাম। ৯৮৮৫৯, আগের অক্ষর গুলো লিখতে পারি নি। (স্বপ্নে এমনটা হয়, ঘটনার একাংশ এক জায়গায় বাকি অংশ অন্য জায়গায়। ঘটনার একাংসে সাথে একজন অন্য অংশে অন্যজন। এখানেও এমনটাই হলো।

প্রথমে পরিচয় আফ্রিকান লোকের সাথে পরিচয় মিশরে হলো কিন্তু একসিডেন্টের অংশটুকো বাংলাদেশে। ঢাকা আরিচা রোডের একাংশে। ) এতক্ষনে পরিস্থিতি বেশ ভয়ানক রুপ নিয়েছ। প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসছে।

আমার ছোট মামা আমাকে বলতে এখানে থেকে লাভ নাই। চল বাড়িতে যাই। মামার কথা মত একটি গাড়িতে উঠে পরলাম। ঘটনা ঘটল নানার বাড়ি ঢাকা আরিচা রোডের বাথুলি ষ্টেসনের আসে পাশেই। আমরা গাড়িতে চড়লাম।

কিন্তু গাড়ি বাথুলি ষ্টেশন ছেড়ে চলে যাবার একটু পরে খেয়াল করলাম যে আমরা আমাদের গন্তব্য বাথুলি ষ্টেশন ছেড়ে চলে আসছি। ষ্টেশনের কিছুটা পরে একটা ব্রিজ। ব্রিজ পার হয়েই ড্রাইভারকে বললাম আমাদের নামিয়ে দিতে। ব্রিজের ঢাল পার হয়ে আমাদের নামিয়ে দিল। প্রচন্ড বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া বয়ে চলছে।

রাস্তা ঘাট ভিজে পিচ্ছিল হয়ে আছে। আমরা রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ভাবতে লাগলাম কি করা যায়..... এমন সময় ব্রিজের উপর দিয়ে ধেয়ে আসা একটি বাস পিছলে খাদে পরে গেলো। বৃষ্টির মাত্রা আরো প্রবল হতে লাগল। আমরা হা করে ব্রিজের দিকে তাকিয়ে রইলমা। হটাৎ দেখতে পেলাম একটি মটর সাইকেল আসছে।

কিন্তু ব্রিজ পার হতেই কেন যেন আর নিয়ন্ত্রন রাখতে পারছে না। মটরসাইকেল পিছলা খেতে খেতে খাদের কিনারায় চলে আসল। পরে লোকটি মটরসাইকেলথেকে নেমে পরল। মটর সাইকেল খাদে পরে গেল, সাথে লোকটিও পরে গেল। ব্রিজের পরে এসে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে আরো কয়েকটা গাড়ি খাদে পরে যেতে দেখলাম।

পরিবেশটা ভৌতিক ভৌতিক মনে হতে লাগল। কোন গাড়িতে করে এই রাস্তা পার হবার সাহস হলো না। তাই হেটেই ব্রিজ হয়ে বাথুলি ষ্টেশনে ব্যাক করালাম কিন্তু ষ্টেশনে এসে আর কিছুই চিন্তে পারতেছিলাম না। এটা বাথুলি ষ্টেশন কি না সেটা নিয়েই দন্দে পরে গেলাম। ছোট্ট একটি ষ্টেশন।

৮/১০টা ছোট দোকান। এক মুদি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম, চাচা এটা কোন ষ্টেশন। সে এমন একটা নাম বলল যা আমি জীবনেও শুনি নাই। তবে কি বাথুলি ষ্টেশন আরো পরে!! বললাম, চাচা এর পরের ষ্টেশনের নাম কি? সে যা বলল সেটাও কখনো শুনি নি। অথচ, ঢাকা থেকে মানিকগন্জ পর্যন্ত প্রতিটি মিটার রাস্তা আমার চেনা জানা।

আবার জিজ্ঞেস করলাম, চাচা মিয়া তাহলে বাথুলি ষ্টেশন কোথায়? তখন মুরুব্বি আমার সাথে ফান করতে লাগল। আমার কেমন যেন মনে হতে লাগল। লোকটাকে সন্দেহ হতে লাগল। কিন্তু মানুষকে সন্দেহ না করে নিজেকে সন্দেহ করাই ভাল মনে হলো। কারন, নিজে অনক বড় মানসিক প্রেসারে আছি।

তাই হয়ত এমন লাগছে। পাশে একটি ফার্মেসি দেখে মনে মনে ভাবলাম হয়তো ফার্মেসির লোকটি ভদ্র হবে। তাই তাকে ভাল করে জিজ্ঞসে করি। দোকানের কাছাকাছি ভিড়তেই পাশে দেখতে পেলাম আমার সেজো মামা। আরে মামা আপনি এখানে? হ, একটা কাজে আসছিলাম।

কিন্তু তোমরা এখানে কেন? বুঝতে পারলাম যে আমরা বাথুলি ষ্টেশনে নাই। চালাকি করে বললাম, আমরাও একটা কাজে এসেছিলাম। কাজ শেষ এখন বাথুলি যাব। মামা বলল, চল এক সাথে যাই। আমি বললাম, মামা কিন্তু বৃষ্টিতে গাড়িতে চড়তে ভয় লাগছে।

মামা বলল, আমার সাথে মটরসাইকেল আছে। মনে মনে চিন্তা করতে লাগলাম, ঠিকাছে ঐ ব্রিজের আগেই মামাকে বলে মটরসাইকেল থেকে নেমে ঐ ভয়ানক রাস্তাটুকু হেটে পার হবো। তাহলে আর সমস্যা থাকবে না। ছোট মামার মুখে টেনশনের ছাপ। তাই ছোট মামাকে আড়ালে ডেকে আমার কৌশল জানিয়ে দিলাম।

আর বললাম, আমাদের সাথে কি ঘটেছে না ঘটেছে তার কিছুই সেজ মামাকে এখন বলা যাবে না। তাহলে মটরসাইকেল চালাতে হাত কাপবে, ফলে বিপত্তি হতে পারে। ছোট মামা এবার একটু সাহস পেল। আমরা তিনজন মটর সাইকেলে উঠে বসলাম। ষ্টেশন থেকে ২০০ মিটার পরে সেই ভয়ানক ব্রিজ।

অঝোর ধারায় বৃষ্টি পরছে। চারিদিকে অন্ধকার। চলন্ত গাড়ির ভয়ানক শব্দ ও হেড লাইটের আলো ছাড়া আশে পাশে কোন শব্দ ও আলো নেই। মামাও বেশ সাবধানে মটর সাইকেল চালাচ্ছে। টু-ওয়ে রাস্তা হওয়াতে কখনো কখনো সামনে থেকেও গাড়ি প্রায় ঘারের উপর এসে পরতে চায়।

কি ভয়ানক এই ঢাকা আরিচা মহাসড়ক। কিছুক্ষনের মাঝেই আমরা ব্রিজের কাছাকাছি চলে এলাম। ব্রিজের ঢাল উঠতে লাগলাম। হটাৎ... .... .... .... .... .... .... .... .... .... কলিং বেলের শব্দ। লাফদিয়ে উঠে মনে হলো বেচে গেলাম।

দারওয়ান নাস্তা নিয়ে এসেছে। যাই নাস্তা খেয়ে আসি। আপনারা একটু ব্যাখ্যা করেন এমন স্বপ্নের মাজেঝা কি??? ঢাকা-আরিচা 'মহা সড়ক'। নিয়ে আমার আরেকটা পোষ্ট ছিল, ইচ্ছে হলে পড়তে পারেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.