মানুষ মাত্র ভুল নাহ্, ভাবছি এবার ডিজিটাল হয়েই যাবো! পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে আচমকা বলে উঠলো পুলক। আমি ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকালাম। পুলক একটু লজ্জ্বা পেয়ে বলল, না মানে ফেসবুক আর কি! শুনলাম ওখানে নাকি দু-চারটা প্রেম করা কোন ব্যাপারই না। আমাকে একটা একাউন্ট খুলে দিবি?
পুলক হল আমার রুমমেট, কাম ক্লাসমেট। মাস ছয়েক আগের কথা।
গ্রামের ছেলে পুলক শহরে আসে উচ্চশিক্ষার জন্য। ছ্যাঁকা খাওয়ার যদি কোন বিশ্বরেকর্ড থাকত তাহলে সে নিশ্চিত চ্যাম্পিয়ন হত। কোন মেয়ের সাথে চোখাচোখি, কিংবা খানিক কথা হলেই বলত, দোস্ত আজকে একটা প্রেম হয়ে গেছে। আমরা বন্ধুরাও ট্রিট পাবার আশায় তাকে ব্যাপক উৎসাহ দিতাম। এমনকি ছ্যাঁকা খাবার পরেও ট্রিট চাইতাম।
স্বাভাবিকভাবে এখানেও উৎসাহের কমতি ছিল না। উৎফুল্লতার সাথে তাকে একটা ফেসবুক একাউন্ট খুলে দিলাম। তারপর থেকে সে সারাদিন ফেসবুকে পড়ে থাকতো, আর দুনিয়ার মেয়েকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতো। আর এভাবেই কাটতে লাগলো তার দিন। গ্রামের এনালগ পুলকের ডিজিটাল হবার প্রচেষ্টা চলতে লাগলো।
অতঃপর একদিন সে বললো, দোস্ত আমার তো হয়ে গেছে। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়ে গেছে দোস্ত? সদা হাসিমাখা মুখে পুলক বললো, প্রেম হয়ে গেছে, ফেসবুক প্রেম। মেয়ে নিজে আমাকে আই লাভ ইউ বলেছে। আমি আর ঘাটালাম না, মনে মনে হাসলাম।
কিছুদিন পর তারা এসএমএস চালাচালি শুরু করলো।
তবে মেয়েটা ফোনে কথা বলতে চাইতো না। পুলক প্রায়ই নাকি তার মোবাইলে টাকা রিচার্জ করে দিতো। একবার তো মায়ের অসুখের কথা শুনে নিজের মোবাইল বিক্রি করে, আমার কাছ থেকে ২০০০ টাকা ধার নিয়ে পাঠিয়ে দিল।
একদিন হঠাৎ মেয়েটা যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। কী ব্যাপার? আমার সন্দেহ হল।
মেয়েটির ফেসবুক প্রোফাইল দেখতে চাইলাম।
আরে! এই ছবি দিয়ে তো ফেসবুকে হাজারটা ফেক আইডি আছে।
পুলকের এখন মাথায় হাত। সাথে আমারও।
মরাল: ফেক আইডি হইতে সাবধান।
বি.দ্র.: সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক। কাহারো সাথে মিলিয়া গেলে লেখক দায়ী থাকিবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।