ধোঁয়ায় মোড়ানো পৃথিবী আমার। যেখানে নেই সত্য মিথ্যার তামায় মোড়ানো কোন খোলস। চারপাশে শুধু ধোঁয়া। ধোঁয়ার মাঝেই আমি তৈরি করেছি আমার স্বপ্নের আগামী। মা বাবার একমাত্র মেয়ে আমি।
অনেক আদর করে বাবা নাম রেখেছিলেন ঈশিতা আর মা আদর করে বলতেন ঈশিমনি। অনেকেই বলতো আমি নাকি মুখচোরা, কারো সাথে কথা বলতে চাই না। হবে হয়ত, কারন আমি চুপচাপ থাকতে ভালবাসতাম। আর ভালবাসতাম খেয়ালে-বেখেয়ালে আনমনে নিজের কল্পনার রাজ্যে ডুব দিতে। স্টুডেন্ট হিসেবে খারাপ ছিলাম না কখনো।
এস.এস.সি-তে গোল্ডেন প্লাস পেয়ে ভর্তি হয়েছিলাম রাজধানীর নাম করা এক কলেজে। এই প্রথম আমার কল্পনার রাজ্য যেন এক বাঁধন ছাড়া সীমানা পেয়ে খুশিতে ডানা মেলে উড়াল দিল। চারিদিকে দেখছিলাম সব বান্ধবীরা একে একে প্রেম সাগরে হাবুডুবু খেতে খেতে কিভাবে উড়ে চলছে। কেউবা আবার প্রিয়জন কে না পাবার বেদনায় নীল হয়ে একাকী নিসঙ্গতা তাকেই বেছে নিয়েছিল।
এসব দেখে মাঝে মাঝে মনে প্রেম করবার ইচ্ছে যে হত না তা নয় কিন্তু এই ভীষণ ইচ্ছেটাকে মনের গহীনে সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিলাম মা-বাবার অমতে কিছু করব না বলে।
মাঝে মাঝেই একাকী রাতগুলো যখন নিঃসঙ্গতার শীতল চাদর হয়ে চারদিকে ধেয়ে আসত তখন কিছুতেই মন বাঁধ মানতো না। মনে হতো আর সবার মত স্বপ্নের পুরুষের সাথে একান্তে কিছু সময় কাটানোর অধিকার আমারও আছে। এভাবেই দিনগুলো চলে যেতে লাগলো। দেখতে দেখতে এইচ.এস.সি পরীক্ষা এসে গেল। সব ভাবনাকে দূরে ঠেলে পরীক্ষা দিলাম আর রেজাল্ট যখন বেরুলো তখন দেখা গেলো আবারো গোল্ডেন এসেছে।
মা-বাবা আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। তারা চাইতেন আমি যেন ডাক্তার হতে পারি। সে অনুযায়ী মেডিকেল কোচিং এ ভর্তিও হলাম। সারাদিন পড়া পড়া আর পরা তবুও খুব একটা খারাপ লাগত না। কারন মেডিকেল এ ভর্তি হবার ইচ্ছে আমার নিজেরও ছিল ভীষণভাবে কিন্তু বিধিবাম আমার, সব রকম প্রচেষ্টাকে বৃথা করে মেডিকেল এ আমার সুযোগ হল না।
প্রথমে খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম যাই হউক মা-বাবা আর আমার সব কাছের মানুষের উৎসাহে বাকি ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা গুলো দিলাম। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটিতে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তিও হয়ে গেলাম।
মা-বাবা চাইছিল যে বাসা থেকেই ক্লাস করি। কিন্তু প্রথম কিছুদিন বাসা থেকে ক্লাস করতে গিয়ে যখন জ্যামে পরে ভীষণ বিরক্তিকর লাগছিলো তখন মা-বাবাই বলল হলে উঠে যেতে। তাই চলে আসলাম আমার হলে।
শুরু হল আমার জীবনের অন্য রকম এক অধ্যায়। কিছু দিন ক্লাস করার পরেই বুঝলাম ক্লাসের এক ছেলে আমাকে আমাকে পছন্দ করেছে। ক্লাসের সারাটা সময় একমনে আমার দিকে তার তাকিয়ে থাকা নিয়ে হাসিঠাট্টাও কম হত না। তবে আমি ওকে কখনই পাত্তা দিতাম না হঠাৎ একটু ফুরসত পেলে সজিব। এতক্ষণ যাকে নিয়ে কথা বলছিলাম, সেই ছেলের নাম সজিব।
ও এসে হয়ত জিজ্ঞেস করত কেমন আছি, কেমন লাগছে ইউনিভার্সিটি লাইফ এই সব। আমিও খুব সংক্ষেপে ওর সাথে কথা বলে চলে যেতাম। ওকে নিয়ে কখনই ভাবিনি কিছু। আমার কল্পনা রাজ্যে যে রাজকুমার আমার ঘুমে আমাকে তার ঘোড়ার পীঠে করে নিয়ে ঘুরে বেড়াত তার সাথে সজিব এর কোন মিল ছিলনা। এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো দিনগুলো।
রোজ রোজ ক্লাসে আমার দিকে তাকিয়ে থাকা আর আমার দিক থেকে তার অদম্য উৎসাহে নিদারুণ হতাশার বালি ঢেলে দেয়া।
এভাবেই কেটে গেল আমার ইউনিভার্সিটি জীবনের চার চারটা মাস। সেদিনের দিনটা যেন অন্যরকম হয়ে এসেছিল আমার জীবনে। আকাশ কালো মেঘে ঢেকে ছিল। ঝুমঝুম বৃষ্টি আসার সাথে সাথে হল থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলাম।
জীবনে এই প্রথম বৃষ্টি ধারায় ভিজছিলাম মনের আনন্দে। বাধা দেয়ার কেউ নেই। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এগিয়ে চলছিলাম। হঠাৎ করে পিছন থেকে পুরুষালী কণ্ঠে কেউ একজন ডেকে উঠলেন। এই যে শুনছেন, এই বৃষ্টি তে এভাবে ভিজলে জ্বর আসবে।
ঘুরে তাকালাম আর সেই সাথে যেন এক মুহূর্তে আমার এত দিনের ধীরে ধীরে গড়ে তোলা কল্পনার রাজ্যে একপশলা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এসে সব এলোমেলো করে দিল। আমার স্বপ্নের রাজকুমার মর্তের বুকে নেমে এসেছে। এরপর কি বলেছিল আমার কিছুই খেয়াল নেই। ঐ রাতে ঘুম এল না কিছুতেই, সারারাত তার স্বপ্নেই বিভোর হয়েছিলাম। পরদিন আবার ক্লাস আর ক্লাসে যথারীতি আমার দিকে সাজিবের তাকিয়ে থাকা।
এভাবে দুদিন কেটে গেল। তারপর আবার সেই রাজকুমার এসে দাঁড়ালো আমার সামনে। যেন কতদিনের পরিচিত আমার, এভাবে আমাকে ডেকে বলে উঠলো “আরে, কি ব্যাপার আপনি সেই দিনের মেয়ে না। ঐ যে বৃষ্টি তে ভিজছিলেন” আমি আমতা আমতা করে বললাম হা। এরপর বেশ কিছুক্ষন কথা হল ওর সাথে।
জানতে পারলাম ও Computer Science and Engineering এর থার্ড ইয়ার এ পরছে। এমন আরও অনেক কিছু। যেমন বাসা কোথায়, কোন হলে থাকে। এইসব আর কি। এই রে কি বোকা মেয়ে আমি, এখন পর্যন্ত ওর নামটাই বলা হল না।
ওর নাম অন্তর। এভাবে রোজ বিকেলে অন্তরের সাথে দেখা হতে লাগলো আমার। আমি বুঝতে পারছিলাম মনের গহীনে তার প্রতি অজানা এক টান দিনে দিনে বেড়ে চলেছে দুর্নিবার আকর্ষণে। কিন্তু কি করে ওকে সব খুলে বলব তা ভেবে পারছিলাম না।
এদিকে ঘটে গেলো আমার জীবনের এক আশ্চর্য ঘটনা।
সেদিন রোজকার মত ক্লাস শেষ হতে বেরিয়ে আসবো এই সময় একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো সজিব। কথা নেই বার্তা নেই সোজা আমার সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে আমাকে বলে উঠলো “ঈশিতা আমি তোকে ভালোবাসি, জানি তুই কোনোদিন আমাকে ভালবাসতে পারবি না। কিন্তু শুধু এভেবেই তোকে আজ খুলে বললাম যাতে জীবনের কোন পর্যায়ে গিয়ে আফসোস করতে না হয় যে, হয়ত তোকে বললে তুই রাজি হতেও পারতি। তবুও বলছি জীবনের চলার বাকে যদি একবার মনে হয় আমাকে দরকার শুধু একবার বলে দেখিস, আমি তোর জন্য সব করতে রাজি”। কিন্তু তখন আমি অন্তরের প্রেমে অন্ধ এক দিকে CSE বিভাগের সবথেকে সুদর্শন এবং সবথেকে জিনিয়াস ছাত্র আমার স্বপ্ন পুরুষ অন্তর।
অন্যদিকে আমার নিজের বিভাগের এক গড়পড়তা সাধারণ ছেলে সজিব। তাই সাথে সাথে না বলে দিলাম সজিব কে।
পরদিন অন্তরের সাথে দেখা হতেই ওকে বললাম সব। ও তো হেসেই খুন। এরপর ও যা বলল এই কথাগুলো শোনার জন্যই হয়তো এতদিন আমি অপেক্ষা করছিলাম।
আমিও ওকে বলে উঠলাম ওকে কতো ভালবাসি। এরপর থেকে আমার পুরো জীবনটা অন্তরময় হয়ে উঠল ধীরে ধীরে। ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসের বিস্তৃত সবুজ সমারোহে ওর হাতে হাত রেখে হেঁটে যাওয়া মুহূর্তগুলো। কখনও বা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ওর সাথে দূর অজানায় হারিয়ে যাওয়া। জীবন হয়ত কখন এত সুখ নিয়ে আসেনি আমার কাছে।
এভাবেই কেটে গেল আরও দু মাস আমাদের প্রেমের। বেশ ভালই কাটছিল দুজনার দিন। কিন্তু হঠাৎ করে ইউনিভার্সিটিতে আন্দোলন শুরু হল। আমাদের ক্লাস বন্ধ দেয়ার কথা শোনা গেল। এর মাঝেই একদিন অন্তর আমাকে ফোন করে বলল “ঈশিতা হয়ত পরশু থেকে আমাদের সবার ক্লাস বন্ধ হয়ে যাবে।
তুমি বাসা চলে যাবে। কবে আবার দেখা হবে জানি না। চল কাল কোথাও থেকে ঘুরে আসি। “যেখানে শুধু তুমি আর আমি”
পরদিন অন্তরের কথা মত আমি সেজেগুজে হাজির হলাম আমাদের হলের গেটে। ও এসে আমাকে নিয়ে গেল ওর সাথে।
তারপর আগে থেকে ঠিক করে রাখা গাড়িতে করে আমাকে নিয়ে হাজির হল Sugondha Resort-এ আমি বুঝতে পারছিলাম কি হতে পারে আজকে। কিন্তু তবুও ভাবিনি যা হতে যাচ্ছে তা আমার পুরো সাজানো জীবনকে ওলটপালট করে দিবে এক পলকে। ওখানে যেয়ে দেখলাম অন্তর আমাদের জন্য একটা রুম বুকিং দিয়েছে। রুমে যেতেই আমার অবাক হবার পালা শুধু যেটা বুঝতে পারিনি তা হল আমার জীবনের সবথেকে অবাক সেই সাথে নিরবাক হবার পালা আজ। আমি যখন অবাক হয়ে চারদিকে দেখছিলাম তখন আমার পিঠে অন্তরের পুরুষালী হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে তাকালাম ওর দিকে।
এ যেন এক অন্য অন্তর। আমি কিছু বলার আগেই ওর হাত আমার পিঠ বেয়ে আমার ঘাড় স্পর্শ করল। তারপর আমার এতদিনের তিলে তিলে তৈরি বাঁধ একনিমেশে ভেঙ্গে গেল। একজন মেয়ে থেকে নারী হয়ে ওঠার পালা। প্রথম কোন পুরুষের স্পর্শ আর তারপরে অন্তর এর মাঝে ক্রমশ এক অনির্বচনীয় সুখের আবেশে নিজেকে হারিয়ে ফেলা।
কিন্তু এরপর যখন অন্তর বলে উঠল বাহিরে আমার দু জন বন্ধু অপেক্ষা করছে, ওদের আসতে বলব? আমার মাথায় এক মুহূর্তে পুরো আকাশ যেন ভেঙ্গে পরল।
এরপর আর কিছু মনে নেই আমার। শুধু কতোগুলো মানুষরূপী নরপিচাশের লোভের লক লকে তৃষ্ণায় নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত হতে দেখা ছাড়া। যখন জ্ঞান ফিরল তখন পুরো দেহে অসহ্য যন্ত্রণা। কোনোরকম হলে আসলাম।
সাথে সাথে মা-বাবা কে খবর দেয়া হলো। ওরা এসে আমাকে নিয়ে গেল বাড়িতে। এরপর টানা একমাস আমার কিছুই মনে নেই। মা-বাবা ভয়ে আদালত যায়নি পাছে আবার আরও হাজারো মানুষ জানুক এই কথা। নিজেকে মনে হত নর্দমার নিকৃষ্ট কিট।
নিজেকে নিজের ঘরে বদ্ধ করে রেখেছিলাম অজানা ভয়ে। এভাবে কেটে গেল আরও একট মাস।
তারপর একদিন ধুমকেতুর মত বাসায় এসে হাজির হল একজন কখনই ভাবিনি সে এভাবে আসতে পারে ছুটে আমাকে দেখার জন্য। সেদিন বিকেলে বারান্দার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে সামনের কোলাহল মুখর যান্ত্রিক শহরের মুখ গোমড়া মানুষের ব্যস্ততা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম নিজের অনাহূত ভবিষ্যতের কথা। মিলিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিলাম ফেলে আসা সময়ের ভুলগুলোকে হঠাৎ পায়ের আওয়াজ পেয়ে ঘুরে তাকালাম।
যা দেখলাম নিজের চোখেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। হাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ আর মুখে হাসি হাসি ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যাকে এইতো মাস খানেক আগেও দেখলে ভুরু কুঁচকে যেত আমার। সে আর কেউ না আমাকে প্রেম নিবদন করে বিফল হওয়া সজিব। ওকে দেখে কি বলব বুঝেতেই পারছিলাম না। যেন কিছু হয়নি এমন ভঙ্গিতে খুব সহজ ভাবে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।
তারপর আমার হাতে ওর নিয়ে আসা লাল গোলাপগুচ্ছ গুজে দিল।
আমি তখনো নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ওর কাণ্ড দেখছিলাম। ঐ প্রথম বলে উঠলো, কিরে কি ব্যাপার তোর ঘরে আজ প্রথমবার আসলাম বসতেও বলবি না নাকি? আমি আমতা আমতা করে বললাম না না, তা কেন হবে, আয় বস বলে আমি বিছানায় বসলাম আর ও পাশে এক চেয়ার টেনে বসলো। ঐ জিজ্ঞেস করল আমায় কি ব্যাপার তোর পড়াশুনো সব ছেড়ে সন্ন্যাসী হয়ে গেলি নাকি। আগামি সপ্তাহে ইয়ার ফাইনাল এক্সাম শুরু হচ্ছে আর তোর কোন পাত্তাই নেই।
আমি আসলে কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। সজিব কি কিছুই জানে না। নাকি সব জেনে বুঝে আমাকে অপমান করতে এই বিকেলে এসেছে। আমার ধাঁধা ভাঙল ওর পরের কথাগুলোতে, ওই বলে উঠলো, দেখ যা হবার তা হয়ে গেছে। এই নিয়ে আর কতদিন বসে থাকবি? জীবন থেমে থাকবে না এভাবে, আর তাছাড়া এতে তো তোর কোন দোষও নেই তাই না।
তাহলে এত ভেঙ্গে পড়ছিস কেন তুই? এভাবে যদি নিজেকে শেষ করে দিস তাহলে ঐ শয়তানগুলোর জয় হবে আর তোর হার। তুই কি তাই চাস?
এভাবে ও অনেক অনেক কথা বলল সেদিন প্রায় ৩ ঘণ্টা আমার সাথে আমার ঘরে বসে। তারপর ও চলে গেল। আজ অনেকদিন পর যেন এক অন্ধকার নিঃসীম গুহা পেরিয়ে এসে আলোর রেখা দেখতে পেলাম। পরদিন কাম্পাসে গেলাম, একটা ক্লাসও করলাম।
তারপর সবার সাথে অনেকদিন পর কথা হলো। অনেকেই দেখলাম আগের মত আর সেই প্রান খোলা ব্যবহার নেই। মন খারাপ হয়ে গেল খুব, ঠিক সেই সময় সজিব বলে উঠল ধন্যবাদ ঈশিতা আমার কথা শুনে ক্লাস করতে আসার জন্য। জীবনে এই প্রথম তার কথায় হেসে জবাব দিলাম। আমি বললাম ধন্যবাদ তো তোকে দেয়া উচিত আমার, আমি নিজেকে ধীরে ধীরে যে অন্ধকার এর মাঝে হারিয়ে ফেলছিলাম তুই না বুঝালে হয়ত শেষ হয়ে যেতাম।
এতকিছুর পর ও যে তুই আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিস তা তো আমি কখনই ভাবতেই পারি না। সব শুনে সজিব বলে উঠল নে এসব পুরনো কাহিনী বাদ দে, আগামি সপ্তাহে পরীক্ষা শুরু হবে এখন তার প্রস্তুতি নে ভাল করে।
সজিব এর হেল্প নিয়ে আর অন্য বন্ধুদের সাহায্যে বেশ ভালই পরীক্ষা দিলাম। এভাবে বেশ ভালই কেটে যাচ্ছিলো দিনগুলি। আমি ধীরে ধীরে আমার অতীতের ফেলে আসা দুঃসহ আর বেদনাদায়ক সেই অনন্ত নষ্ট মুহূর্তগুলো ভুলছিলাম।
আবার ফিরে আসছিলাম আমার স্বাভাবিক জীবনে। শুরু হল আমার কল্পনা রাজ্যের আবার রাজকুমারের হাতে হাত রেখে হেঁটে যাওয়া মুহূর্ত ভেবে আনমনে হেসে ওঠা। তবে এবার আমার সেই রাজকুমার সজিব। কল্পনায় কতবার দেখলাম রাজকুমার বেশে সজিব ওই হিংস্র নরপিসাচগুলোকে একে একে মেরে আমাকে উদ্ধার করে তার পঙ্খিরাজে করে নিয়ে ছুটে চলেছে দূর তেপান্তরে।
আমি ধীরে ধীরে সজিবকে ভালোবেসে ফেললাম মনের অজান্তেই, কিন্তু খুব ভয় হচ্ছিল ওকে বলতে।
যদি ও না করে দেয়। আবার পরক্ষনেই এত সব কিছু হয়ে যাওয়ার পরো আমার পাশে এসে ও দাঁড়িয়েছে ভেবেই মনের মাঝে সাহস হত, হয়তবা ও এখনও ভালোবাসে আমাকে আগের মতই।
এভাবেই কেটে গেল প্রায় ৬ মাস। সজিব আমাকে বেশ সময় দিতে লাগলো। আমিও ওকে যতটুকু পারি সময় দিতাম।
ওর ব্যবহার ঠিক আগের মতই রইল আমার প্রতি, ক্লাসে আমার দিকে অপলক তাকিয়ে থাকা, ক্লাস শেষে আমার সাথে খোলা মাঠে আড্ডা। আমি ধরেই নিয়েছিলাম ও আমার অতীতের সব ভুলে গিয়ে আমাকে আগের মতই ভালোবাসে এখন।
এরমাঝে একদিন বাসায় কিছু লোক আসলো আমাকে দেখার জন্য, সেদিন বাবা-মার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসি মুখেই ওদের সামনে গিয়েছিলাম। কিন্তু কিসের কি ওরা আমাকে দেখেই উঠে চলে গিয়েছিলো কারন আমি যে সমাজের চোখে ধর্ষিতা। ওরা চলে যাওয়ার পর ফোন দিলাম সজিবকে বললাম কাল সকালেই কাম্পাসে আসবি একবার? ও বলল কেন? হঠাৎ এত তাড়া কিসের? আমি বলে উঠলাম আছে একটা কিছু কারন, তুই আসবি কিনা বল? সজিব বলল ঠিক আছে কাল সকাল ১০টায় আমি ইউনিভার্সিটি ক্যাফেটেরিয়ার সামনে তোর জন্য ওয়েট করব, দেখা হবে ইনশাল্লাহ।
ওইদিন সারারাত নির্ঘুম কাটল আমার, ওকে কি করে সব খুলে বলবো, ওই কি বলবে এই সব হাবিজাবি চিন্তায় নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলাম। আমি জানি ও এখন আমাকে ভালোবাসে সেই আগের মতই। নইলে কেন আমার পাশে এসে দাঁড়াবে, রোজ রোজ আমাকে এত এসএমএস করবে। এভাবে নানারকমের চিন্তা করতে করতে কখন যে ভোর হয়ে গেছে খেয়ালই করিনি। আম্মুর ডাকে সম্বিৎ ফিরে পেলাম।
তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে ছুটলাম ইউনিভার্সিটিতে।
ইউনিভার্সিটি পৌছিয়েই ক্যাফেটেরিয়ার সামনে চলে আসলাম একছুটে। দেখলাম সজিব দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওর সামনে এসে সরাসরি বললাম তোর সাথে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে সজিব, চল কোথাও গিয়ে বসি দুজনে। তারপর আমরা দুজনে কাম্পাসের একটা খোলা জায়গায় যেখানে সাধারনত কেউ যায় না সেখানে গিয়ে বসে পড়লাম।
সজিব বলল, কিরে কি ব্যাপার? এই ভাবে জরুরি তলব দিয়ে ডেকে নিয়ে আসলি আর তোকে খুব বেশি উত্তেজিত মনে হচ্ছে। আমি কোন ভণিতা না করেই ওকে বললাম সজিব তুই কি আমাকে আগের মত ভালবাসিস? আমাকে তোর সারাজীবনের সাথি করে নিতে পারবি?
সজিব বলল, “এই ঈশিতা কি হয়েছে তোর, কি পাগলামো শুরু করলি বলতো। খুলে বলবি কি হয়েছে তোর?” আমি সরাসরিই বললাম ওকে আম্মু-আব্বু আমার বিয়ের জন্য পাত্র দেখছে, কাল পাত্রপক্ষ এসেছিল আমাকে দেখতে। ও বলল তো এখন তুই কি করবি? আমি উত্তর দিলাম “আমি আর কি করব, এখন তো যা করার সব তোকেই করতে হবে। আমি তোর হাতেই সবকিছু ছেড়ে দিয়েছি, তুই যাহোক একটা উপায় বের কর ভেবে।
” সজিব আমতা আমতা করে বলে উঠল সব আমার হাতে মানে, কি বলছিস তুই? আমি মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না তোর কথার। এবার আমার অবাক হবার পালা। আমি বেশ খানিকটা অবাক হয়েই ওকে জিজ্ঞেস করলাম তুই সত্যিই কিছু বুজতে পারছিস না, আমি কি বলতে চাইছি? তুই আমাকে ভালবাসিস না? ও বলল হা ভালবাসি তো।
এবার আমি বললাম “তাহলে তোর পছন্দের মানুষটাকে অন্য কেউ একজন বিয়ে করে নিয়ে যাবে তুই কি তা চাস? তাই বলছিলাম যত তাড়াতাড়ি পারিস তোর বাসা থেকে আমাদের বাসায় লোক পাঠানোর বন্দোবস্ত কর তোর আর আমার বিয়ের কথা পাকাপাকি করতে। ” এরপর আমাকে অবাক করে দিয়ে সজিব যা বলল তা যেন নিজের দু কানেই বিশ্বাস হচ্ছিলো না।
ও বলতে লাগলো, “দেখ ঈশিতা, জীবনের সব সিদ্ধান্ত আবেগ দিয়ে হয় না, কখনও কখনও যুক্তি দিয়েও নিতে হয়। তাই বলছিলাম দেখ তুই তোর বাবা-মার পছন্দেই বিয়ে কর। আমাকে বিয়ে করার চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল। এটা কোন দিনই সম্ভব হবে না। আমার বাসা থেকে এটা কোনদিনেই মেনে নিবে না তোর মতো একটা মেয়েকে বিয়ে করার ব্যাপারটা” আমার যেন মুখে কথা আসছিল না তবুও কোনোরকম ওকে জিজ্ঞেস করলাম আমার মতো মেয়ে মানে, তুই কি মিন (mean) করছিস?
দেখ ঈশিতা আমি তোকে ভালবাসি আর সারাজীবন ধরেই ভালবাসবো।
কিন্তু তুই তো আমাকে কোনদিনই ভালবাসিসনি। আজ জীবনের এই পর্যায়ে এসে সমাজের চোখে যখন তুই একজন ধর্ষিতা তখন তুই আমার কাছে এসেছিস ভালবাসার ঝুড়ি নিয়ে। যখন তোর সব ছিল তখন তোর চোখে আমি ছিলাম নিতান্তই সাদামাটা এক সজিব। CSE পড়া স্মার্ট সজিব না। নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের এক সাদামাটা যুবক।
একদিন যখন তোর সব ছিল, তোর মধ্যে যখন ছিল পূর্ণতা তখন এই সাদামাটা ছেলেটাকে দেখে তুই নাক সেটকাতি, ভুরু কুঁচকাতি। কিন্তু আজ যখন তোর নিজের বলতে কিছুই নেই, সমাজের কেউ যখন তোকে গ্রহন করছে না তখন তুই এসেছিস আমাকে ভালবাসার কথা বলতে। সেদিনের সেই সজিবকে তুই ফিরিয়ে দিয়েছিলি কারন সে হয়তো স্মার্ট ছিল না, তার হয়তো দামি দামি কাপড়-চোপর ছিল না, তার ছিল ভালবাসায় ভরা একটি নিরীহ মন। কিন্তু তখন তোর কাছে আমার বাহিরের দিকটাই মুখ্য ছিল। আমার ভালবাসাটা তোর চোখে পরেনি।
তবে আজ কেন??? তুই তো কোনদিনই আমাকে মন থেকে ভালবাসিসনি, তুই সমাজের চার দেয়ালের মাঝে আটকা পরেছিস আর সেখান থেকে বাঁচার জন্য আমাকে তোর প্রয়োজন। তুই যদি আমাকে মন থেকে ভালবাসতি আর তখন তোকে কেউ ধর্ষণ করতো তবে এই সজিব কোনদিন তোকে ফেলে যেতনা। হ্যাঁ আমি তোকে আজও বিয়ে করতে রাজি আছি কিন্তু আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিবি???
সেদিনের সেই সজিব আর আজকের এই সাজিবের মধ্যে পার্থক্য কোথায়??? সেদিন তার কি ছিল না যা আজ তার আছে??? কেন সেদিন আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলি??? কেন আজ আমাকে ভালবাসার কথা বললি???
ঈশিতা সজিবকে বিয়ে করেনি কিন্তু সে করেছে চারটি খুন।
“হ্যাঁ, আজ আমি সমাজের প্রচলিত নিয়মে আর ধর্মের বেড়াজালে দোষী। কেন আমি ভালবেসেছি।
কেন আমি নিজের সতীত্ব বিকিয়ে দিয়েছি আমার ভালবাসার সেই মানুষকে, হয়তবা আপানাদের চোখে অন্তর আর ওর দুই নরপিচাস বন্ধু কিংবা সজিব এরা সবাই মানুষ। তাই আজ আমি দোষী। আমি ধর্ষিতা, নষ্টা মেয়েমানুষ। আপনারা বলবেন আমি যদি ঐ নির্জন sughondha resort এ অন্তরের আহ্বানে সাড়া না দিতাম তাহলে হয়ত এসব হত না। আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমাকে চার চারটা খুনের কারন ব্যাখ্যা করতে হত না।
খুন???
কাদের খুন আমি কোন খুন করিনি। আপনাদের চোখে ওরা সবাই মানুষ হতে পারে কিন্তু আমার চোখে না। অন্তর আর ওর দুই নরপিচাস বন্ধু মিলে হয়ত আমার শারীরিক ধর্ষণ করেছে আর তাই হয়তো মাননীয় আদালত আমাকে ঐ তিন মানুষের ছদ্মবেশধারী শয়তানের অনুচরের খুনের জন্য প্রাপ্য শাস্তি কিছুটা লাঘব করিয়ে দিবেন। কিন্তু আমি জানি সজিব এর খুনের কারনে হয়ত আমার ফাঁসি হবে। হোক তাতে আমার এতটুকু কষ্ট নেই।
আমার এই জীবনের তো কোন মূল্যই নেই এই সমাজ এর কাছে। আমি তো নষ্টা মেয়েমানুষ তোমাদের দৃষ্টিতে। কিন্তু আপনারা বিশ্বাস করুন সজিব আর ঐ তিন শয়তানের মাঝে আমি কোন পার্থক্য খুঁজে পাই না। ওরা আমার শরীর কে নিয়ে আদিম সুখ অনুভব করেছে আমাকে ধর্ষণ করেছে কিন্তু সজিব আমার মন-মানসিকতা-আবেগ নিয়ে যা করেছে তার ব্যথা ওই শারীরিক নির্যাতনের থেকেও অনেক নিষ্ঠুর, কষ্টকর আর মর্মান্তিক। সে আমার ভালাবাসাকে অপমান করেছে।
আমি জানি আমাদের এই প্রচলিত সমাজের চোখে সজিব হয়তবা নিরাপরাধ। কিন্তু আমার কাছে সেই সবথেকে বড় অপরাধী। ওর সেই দিনের কথাগুলো শুনেই আমি সিদ্ধান্ত নেই। আর আজ সেই সিদ্ধান্তের ফল হিসেবে আমি আদালতের সামনে। মাননীয় আদালত আমি চাই না আমার এই কোথাগুলো শুনে আমার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে আমার শাস্তি কম করুন।
আমি চাই আমার ফাঁসি হোক। কারন এই প্রচলিত সমাজ আর ধর্মীয় নিয়মের আড়ালে যতদিন আমি বেঁচে থাকবো ততদিন আমি প্রতিনিয়ত আজ যারা আমার এই কথাগুলো শুনছে তাদের দৃষ্টিতে ধর্ষিতা হবো। আমি আজ সমাজের আস্তাকুরে ফেলে দেয়া আবর্জনা ছাড়া তোমাদের কাছে কিছুই নই। কিন্তু আমার কোন আফসোস নেই এতে কারন একজন মানুষ হিসেবে যাকে ভালবেসেছিলাম যাকে সারাজীবনের জন্য একান্তই নিজের আপন করে পেতে চেয়েছিলাম তার মত নরপিসাচের জন্য। তার লোভের কাছে আমি কেন হার মানব? আমি তো সৃষ্টি যুগের আদিম থেকেই মানুষের যে সহজাত আকাঙ্খা তার থেকেই নিজেকে সপে দিয়েছিলাম।
কিন্তু আমার দুর্বলতার সুযোগে যা করেছে তার জন্য কেন আমি নিজেকে দোষী ভাবতে যাব? তোমরা সমাজের নিময়ের পূজারী আর ধর্মের একান্ত অনুসারীদের কাছে শুধু আজ বিদায় বেলায় একটাই প্রশ্ন, আমি কি আসলেই নষ্ট মেয়েমানুষ, জীবনের চলার বাঁকে আমার নিতান্ত অনিচ্ছায় ঘটে যাওয়া ভুল শুধরিয়ে কি আমি একটা স্বাভাবিক জীবনের অধিকারী হতে পারতাম না? এর জন্য কি আমি একা দায়ী???
(এটি কোন গল্প নয় এটি একটি বাস্তব ঘটনা)
আমার ব্যক্তিগত মন্তব্যঃ- ঈশিতার চোখে সজিব অপরাধি। কিন্তু আমার চোখে সজিব কোন অপরাধ করেনি। একটা সময় ছিল যখন ঈশিতার কাছে সবছিলো ঠিক সেই সময়টায় সজিবকে ঈশিতার ভাল লাগতনা। সজিবের ভালবাসার কোন মূল্যই ছিল না তার কাছে। আজ জীবনের এই পর্যায়ে এসে যখন সে সব হারিয়ে শূন্য, ধর্ষিতা বলে যখন সমাজ তাকে গ্রহন করছেনা তখন সে সাজিবের দুয়ারে ভালবাসার ঝুড়ি নিয়ে হাজির হয়।
সজিব যখন তাকে ফিরিয়ে দেয় তখন সজিব হয়ে যায় তার চোখে দোষী। কিন্তু কেন??? সে সজিবের মাঝে পূর্ণতা খুঁজেছিল তার বাহিরের দিকটা দেখে তাই সে সজিবকে ফিরিয়ে দিয়েছিল, এতে ঈশিতা যদি দোষী না হয় তবে সজিব কেন দোষী হবে। সজিবের কি তার জীবনে এমন কাউকে চাইতে পারেনা যেমনটি ঈশিতা চেয়েছিল। আজ যদি ঈশিতা এমন অবস্থায় না পরতো তবে কি সে আসতো সজিবের কাছে??? তখন কি সজিবের ভালবাসার অপমান হতো না।
“নারীরা” যখন সব কিছুতে পূর্ণতা পায় তখন সে সমাজকে গ্রাহ্য করেনা, কে তাকে ভালবাসলো, কতোটুকু ভালবাসলো সেটার কোন মূল্য নেই তার কাছে।
কিন্তু যখন সে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয় তখন কেউ তাকে না চাইলে তার চোখে সমাজ হয়ে যায় খারাপ আর পুরুষরা হয়ে যায় স্বার্থপর। তাদের চোখে পুরুষরা তাদের দেহকে ভালবাসে মনকে নয়। তারা কি দেখে ভালবাসে???
টাকা, স্ট্যাটাস, দামি গাড়ি, নাকি একটি সুদর্শন শরীর। আপনি যদি এসব দিয়ে পুরুষদের মূল্যায়ন করেন তবে তারা মূল্যায়ন করলে দোষটা কোথায়???
তারা পুরুষ এটাই কি তাদের দোষ???
পুরুষরা কি মানুষ না??? তারা কি ভগবান??? প্রথমে তাদের ভালবাসাকে প্যাকিং করে ফেরত দেওয়া হবে সে স্মার্ট নয় বলে, তাকে দেখে নাক স্যাঁতকাবে সে সুদর্শন নয় বলে। একসময় নিজে সব হারিয়ে সেই আনস্মার্ট পুরুষের কাছে আসবে ভালবাসার ঝুড়ি নিয়ে যদি সে ফেরত দেয় তবে পুরুষ হয়ে যাবে স্বার্থপর।
কেন বলতে পারেন???
একজন ধর্ষিতা নারীকে সমাজের একজন সুদর্শন, বি.সি.এস প্রাপ্ত পুরুষ বিনা বাক্যে বিয়ে করতে পারে এবং করে। কিন্তু সমাজের একজন সুন্দরী বি.সি.এস প্রাপ্ত নারী আনস্মার্ট কম বেতনের কোন কর্মচারীকে বিনা বাক্যে বিয়ে করে/কোনদিন করেছিল যদি তাদের মধ্যে কোন প্রেম সম্পর্ক থাকে সেটাও ভেঙ্গে দেয়। হয়তো বলবেন “সমাজ কি বলবে, ফ্যামিলি মেনে নেবে না”। এই কথাটা যদি কোন পুরুষ বলে তখন??? তাদের কি সমাজ নেই, তাদের কি ফ্যামিলি নেই???
সমাজটাকে এতোটা সংকীর্ণ করেছে ঈশিতারাই। আর বলির পাঁঠা হচ্ছে সজিবরা।
সজিব যদি ইশিতাকে বিয়ে করে তবে সর্বপ্রথম আপত্তি তুলবে কে???
সজিবের মা (তিনি একজন নারী)। ঈশিতা যদি মা হয় তবে সে কি তার ছেলেকে কোন ধর্ষিতার সাথে বিয়ে দেবে??? (ঈশিতা একজন নারী)।
“তবুও নারীরা মায়ের জাত। ”
যাহ্ শালা। ।
। । । । ।
মায়ের নাম বেঁচে এই ব্যবসা আর কতদিন???
-আসলে সব থেকে বড় অপরাধি কে???
ঈশিতা নাকি সজিব (উত্তর চাই)
@ জিসান মুনতাসির রিয়াদ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।