আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম বিশ্বাসের পাছা বাঁচানো

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা যারা ধর্মবিষয়ে অতিরিক্ত স্পর্শ্বকাতর তাদের ধর্মবিশ্বাসের গভীরতা কিংবা ধর্ম বিষয়ক অনুধাবনের আন্তরিকতা নিয়ে ঘোরতর সংশয় আছে। বিশ্বাসের মৌলবাদিতার প্রকাশ নিজস্ব ধর্মবিশ্বাস অনুসরণের অদক্ষতা কিংবা অক্ষমতার পরিচায়ক এমনটাই আমার অভিমত। বিশ্বাসকে রক্ষা করতে গিয়ে অন্যের প্রাণ সংহার করতে হবে কিংবা অন্যকে প্রাণভয়ে ভীত রেখে নিজের বিশ্বাসের সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে এমন ধারণা ইসলামের প্রাথমিক যুগে স্বয়ং মুহাম্মদেরও ছিলো না। তার অনুসারীরা অবশ্য বিশ্বাস প্রসঙ্গে মুহাম্মদের দৃঢ়তা অর্জন করতে ব্যর্থ হলেও সে ব্যর্থতা নিজেদের জঙ্গী মানসিকতায় আড়াল করতে পেরেছে। ইনোসেন্স অফ মুসলিম প্রথম যে সময়ে ইউ টিউবে আপলোড করা হয় সে সময়ে এটা তেমন মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে নি, প্রায় ২ মাস পরে সেটাকে মিশরীয় আরবিতে অনুবাদ করে মিশরের ভেতরে অস্থিরতা তৈরি করা হয়।

মাত্র ২ সপ্তাহে সহিংসতার মাত্রা এমনই যে এ ইস্যুতে এখন পর্যন্ত প্রায় শতজন মানুষ হতাহত হয়েছে। মুহাম্মদ বিষয়ে মুসলমানদের এক ধরণের আলাদা সম্মান কিংবা সহানুভুতি থাকাটা আশ্চর্য নয়, নিজস্ব ধর্মের প্রধান পুরুষ বিষয়ে এমন এক ধরণের সহানুভুতি থাকাটাই বরং বিশ্বাসীদের পক্ষে স্বাভাবিক, উল্লেখিত ছবিতে তাকে ভুল ভাবে উপস্থাপন করায় তার মর্যাদা কতটুকু ক্ষুন্ন হয়েছে এটা এক ধরণের তর্কসাপেক্ষ বিষয়। আদৌ মৃত কোনো ব্যক্তির মর্যাদাহানী করা সম্ভব কি না? একজন ধর্মবিশ্বাসী মুসলিমের কাছে মুহাম্মদের যে শ্রদ্ধার আসন সেটা এই ছবিতে বিন্দুমাত্র নীচে নেমে যায় কি না? মুহাম্মদ সকল মানুষের সকল ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের ধর্মের প্রধান পুরুষ না বরং বিশ্বের চার ভাগের তিন ভাগ মুহাম্মডকে কোনো বিশ্বাসের প্রধান পুরুষ হিসেবে গ্রহন করছেন না। বিশ্বাসের তরবারী চালিয়ে সকল অমুসলমানকে কতল করে ইসলামকে একমাত্র ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করলে সেটা অপরাপর ধর্মানুসারীরা মেনে নিবে কি না এ বিষয়েও আলোচনা করা যায়। বাস্তবতা হলো বিশ্বের এই চার ভাগের তিন ভাগ মানুষের কাছে মুহাম্মদের মর্যাদা নির্ভর করে মুহাম্মদের অনুসারীদের আচরণের উপরে।

মুহাম্মদের অনুসারীদের আচরণ যাচাই করে তারা ঠিক করবে আসলে মুহাম্মদকে কতটুকু মর্যাদার আসন দেওয়া যায়। মুহাম্মদের এইসব জঙ্গী অনুসারীরা মুহাম্মদের মর্যাদাহানি বিষয়ে এমন সহিংস আচরণ করে মুহাম্মদের মর্যাদার আসন টেনে কোথায় নামাচ্ছেন এটা তাদেরই ভেবে দেখতে হবে। গত ২ যুগে মুহাম্মদের অনুসারীদের যে পরিচায়টা গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েচে সে পরিচয়টা নিচক উগ্রপন্থী, নিরেটমস্তিক গবেটের পরিচয়। এই গবেটগুলো চিন্তার স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানুষের মর্যাদা এবং মানুষের ব্যক্তিগত পরিসর সম্পর্কে ভীষণ রকম উদাসীন এবং ক্ষেত্র বিষয়ে এসবের উপস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। এরা অল্পেই সহিংস এবং এদের ভেতরে সবচেয়ে গবেট যারা তারা নিজেদের আতশবাজী ভাবে।

তারা যেকোনো ইস্যু পেলেই বুকে বোমা বেধে রাস্তায় গিয়ে নিজেকে ফুটিয়ে দেয়। নিজে তো মারা যায়ই একই সাথে উপস্থিত নিরীহ মানুষদেরও তারা হত্যা করে। সুতরাং মুহাম্মদের মৌল অনুসারীদের পরিচয় গণমাধ্যমে মূলত হত্যাকারীর পরিচয়। মুহাম্মদ হত্যাউন্মাদ গবেটদের নেতা এ বদ্ধমূল ধারণাটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার পর মুসলমানরা নিয়মিত সে ধারণাকে আরও প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর। এর আগে মুহাম্মদের অনুসারীদের আচরণের উপরে ভিত্তি করে যে কার্টুনগুলো প্রকাশিত হয়েছিলো সেখানে ব্যক্তি মুহাম্মদকে আক্রমন করতে গিয়ে কার্টুনিস্টরা এই গবেট জঙ্গী মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী মুহাম্মদের ক্যারিকেচার এঁকেছেন এবং সেই কার্টুনগুলো মূলত এই জঙ্গীবাদী মুসলমানদের বিভিন্ন সহিংসতায় ভীত এক দল মানুষের ভীতির হাস্যকর প্রকাশ।

ভয়কে হাস্যরসে উপস্থাপনের বিষয়টিও অবশ্য জঙ্গিবাদীদের পছন্দ হয় নি। তারা আরও বেশী সহিংসতা দেখিয়ে সেসব কার্টুন আঁকার যথার্থতা প্রমাণ করেছেন। ইনোসেন্স অফ মুসলিম বিষয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে যাওয়ার পর মুসলমান ইমাম বলেছেন এইসব সহিংস আচরনকারী ব্যক্তি প্রকৃত মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা ইনোসেন্স অফ মুসলিম নির্মাণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন যেকোনো ধর্মের প্রধান পুরুষদের নিয়ে এমন হীন চলচিত্র নির্মাণ বিশ্বের ধর্মীয় সহনশীলতাকে আহত করে। তারা মুসলমানদের সংযত আচরন করতে অনুরোধ করেছেন।

ভ্যাটিকানের পোপের মুখপত্র জানিয়েছেন যে ব্যক্তি এমন হীন আচরণ করেছে সে মূলত বিশ্বের ধর্মীয় সহনশীলতাকে আঘাত করেছে। সে কোনো ধর্মের মৌলভাবনার প্রতিনিধিত্ব করে না। তারাও ক্ষুব্ধ এবং এর নিন্দা জানিয়ে মুসলমানদের সংযত আচরণ করতে অনুরোধ করেছেন। ইহুদি যাজকও প্রায় একই ভাষায়ও একই ধরণের বক্তব্য প্রকাশ করেছেন । সবাই ইনোসেন্স অফ মুসলিম নির্মাণের নিন্দা জানিয়ে মুসলমানদের সংযত আচরণ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিষয়টা অন্য ভাবে দেখলে বলা যায় তারা নিজ নিজ ধর্মের অনুসারীদের বিষয়ে নিশ্চিত যে তারা এমন উগ্র গবেটের মতো সহিংস আচরণ করবে না, শুধুমাত্র মুসলমানদেরই সংযত আচরণ করার প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান। নোটিশ বোর্ডের পোস্টে দেখলাম জনৈক উজবুক বলেছে সে সামহোয়্যার ইনের কয়েকটি নির্বাচিত লেখার প্রিন্টেড কপি বায়তুল মোকাররমের খতিবকে দিয়ে আসবে এবং বায়তুল মোকাররমের খতিবই নির্ধারণ করবে সেখানে ইসলাম অবমাননা হয়েছে কি হয় নি। আমি এটা পড়ে ভেবে দেখলাম যে উজবুকটা এই প্রস্তাবনাটুকু উপস্থাপন করছে সে মুলত মুসলমানদের জঙ্গীবাদী সংঘটির ভীতি দেখিয়ে কাবু করতে চাইছে। এখানে কয়েকটা প্রোটোটাইপ প্রতিষ্ঠিত হলো কিংবা যে ভাবনাটুকু গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হচ্ছে সেটার যথার্থতা প্রমাণিত হলো। প্রথমত এই গবেট মুসলিমেরা বাক স্বাধীনতা- চিন্তার স্বাধীনতা বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল নয়, দ্বিতীয়ত তারা সহিংসতা কিংবা সহিংসতার ভীতিকর উপস্থাপন দেখিয়ে সব বিরুদ্ধমত ডমন করতে চায় ।

তৃতীয়ত গবেট একটা হাঁক দিলে অপরাপর সকল গবেট লাঠিসোটা নিয়ে প্রাণ সংহারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেতে পারে। বায়তুল মোকাররমের খতিব সব দিক বিবেচনা করে রায় দিলেন এখানে ইসলাম অবমাননা হয়েছে, এটার প্রতিক্রিয়া কি হবে? এক দল গবেট বুকে ব্যানার ঝুলিয়ে গুলশানে গিয়ে সামহোয়্যার ইন ব্লগের অফিসের সামনে শ্লোগান দিবে, উৎসাহী উজবুকেরা ঢিল ছুড়বে, আরও নিরেট গবেটগুলো ভেতরে ঢুকে এখানকার কর্মচারীদের আহত করার চেষ্টা করবে- সম্পূর্ন বিষয়টি এক ধরণের মৃদু সহিংসতার হুমকি। এই সহিংস আচরণের হুমকিতে ভীত হওয়াটাই স্বাভাবিক, কিন্তু মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভাবনাকে নিয়ন্ত্রন করার এমন হীন প্রচেষ্টা একটা বিষয়ই প্রমাণ করে, স্বীয় বিশ্বাসের বলিষ্ঠতা নিয়ে এরা সংশয়ী। নিজের ধর্ম বিশ্বাসের পাছা বাঁচাতে এরা প্রয়োজনে হত্যাকারী হয়ে যেতে পারে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.