অরুণালোক আমাদের দেশের পরিবহন সমস্যা দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। নগর জীবনের যানজট তো আছেই, যা আমাদের মূল্যবান কর্মঘণ্টাকে জবাই করে দিচ্ছে, তার উপর আছে যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাব। এ সমস্যা একটু সচেতন হলেই অনেকাংশে কাটানো যায়, কিন্তু তা হচ্ছে না। কেননা, এ সমস্যাগুলোর মূলে এক শ্রেণির পরিবহন কর্মী, মালিকসহ আরও অনেকেই জড়িয়ে রয়েছে। অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ঢাকা শহরে যারা বিভিন্ন কাউন্টার থেকে গাড়িতে চড়েন, তারা বেশ ভালই জানেন যে কাউন্টার থেকে বাসের সিটের তুলনায় বেশি যাত্রীকে টিকিট দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় পর পর বাস আসার কথা থাকলেও মেইন টার্মিনাল থেকে দেরি করে বাস ছাড়া হয় যাতে জমে থাকা যাত্রীরা একই বাসে বেশি করে উঠে। এতে মালিকসহ পরিবহন কর্মীরা অনৈতিকভাবে লাভবান হয়। নাগরিকরা এখন পরিবহন সেক্টরের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আর সারা দেশের পরিবহন সমস্যা সম্পর্কে সচেতন নাগরিকরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল।
বেশি ভাড়া আদায় করা, যাত্রী হয়রানি এগুলো এখন ওদের কাছে ডাল-ভাত হয়ে গেছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে নাগরিক ঐক্য গড়ে তোলা দরকার।
যে ছবিটি এখন দেখছেন, এটি পুরান ঢাকা ভিক্টোরিয়া পার্ক সংলগ্ন কবি নজরুল কলেজের সামনে থেকে তোলা। দেখুন আমাদের মা বোনেরা কীভাবে গাড়িতে উঠছে। বেশি যাত্রী পাওয়ার আশায় গুলিস্তান থেকে বিশেষত সুপ্রভাত, ভিক্টর, ইউনাইটেড, বিহঙ্গ, প্রভাতি বনশ্রী, আজমেরি এসব গাড়িগুলোর বেশিরভাগই গুলিস্তানেই যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আর সদরঘাটের দিকে ঢুকতে চায় না।
যে গাড়িগুলো যানজট ঠেলে ঢুকে তাতে চড়তে গেলে আপনাকে রীতিমত যুদ্ধ করতে হবে। অথচ এখানে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির স্কুল সান গ্রেগরী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, ঢাকা জজ কোট ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে। আর বাংলাদেশের একমাত্র বৃহৎ পুস্তক ব্যবসা পরিচালনা করে যে বাংলাবাজার তার কথা বাদ দিলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দক্ষিণবাংলা থেকে আগত লঞ্চ যাত্রীদের মারাত্মক হয়রানি। এ নিজের চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। প্রচণ্ড ঠেলাঠেলি করে গাড়িতে উঠতে হয় বলে পকেটমারদেরও পোয়া বারো অবস্থা এখানের।
এদের এভাবে গাড়িতে উঠার সুযোগে পকেটমারেরাও লাভবান হচ্ছে। আহ! কী চমৎকার আমাদের দেশের মানুষগুলো! এক ভাই অন্যভাইকে ঠকিয়ে কী করে যে নির্বিকার থাকে, ভাবতেই অবাক লাগে। ওদের বিবেক কী মরে যাচ্ছে!
ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের লোকগুলো প্রায়ই সবাই নিু শিক্ষিত এবং অনেকেই অক্ষরজ্ঞানহীন। নীতি বলতে যে কিছু আছে, তা এদের আচরণ দেখলে বোঝা যায় না। জজ কোর্টের আইনজীবী, শিক্ষার্থী ইত্যাদির একটা অংশ সম্মানিত মহিলারা।
অথচ এসব যানবাহনের হেল্পার ড্রাইভাররা এসব মহিলাদের সামনে যেভাবে অশ্লীল খিস্তি-খেউর করে, তাতে ভদ্রজনদের কানে তুলো দিয়ে পথ চলতে হবে ক’দিন পর।
তাই জনসচেতনার বিকল্প নেই। এসব পরিবহন কর্মীদের নিষ্ঠুর দৌরাত্ম থেকে রক্ষা পেতে হলে ওদের জোর করে হলেও আচরণ বিধির প্রশিক্ষণ দেওয়াটা জরুরী হয়ে পড়েছে।
তৈয়ব খান
৩২/২ সেনপাড়া পর্বতা
সেকশন ১০, মিরপুর, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৯৪২-৮৪৭২০৭
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।