আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আলাপচারিতা



(অনেকদিন থেকে ভাবছি হিমি কে একটি দীর্ঘ চিঠি দিব। আমার সমস্ত আবেগ দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে। এই কম্পিউটার ইন্টারনেটের যুগে। এখন ভালোবাসা সেও যন্ত-কম্পিউটার। চিঠির অন্য রকম একটা আবেদন আছে আকর্ষন আছে।

হিমি কখনো বুঝতেই পারবে না আমার লেখায় হিমি কে চিরস্থায়ী করে দিলাম। 'বুক জুড়ে- রাখি আমি তাকে মুড়ে,পৃথিবীটা ভালোবাসায় ভরে যাক !) আজ অনেকদিন পর আবার তোমাকে লিখছি। মইনুল আহসান সাবের(আমাদের সাবের ভাই)এর একটা ছোট গল্প আছে তার নাম 'ব্যবচ্ছেদ'। তুমি পড়েছো?সাবের ভাই এর এই গল্পটা পড়েই আমি ঠিক করেছি,তোমার জন্য দারুন একটা চিঠি লিখব। আগেই বলে রাখি-আমি চিঠি লিখতে জানি না।

কোনোদিন লিখিও নি। আমি জানি আমার চিঠি অগোছালো ও বিচ্ছিরি রকম। অগোছালো ও বিচ্ছিরি আমার লেখায়'ই সাজে। তুমি একটুও রাগ করবে না। এই সাহসেই তো লিখি।

আমার মত তুচ্ছ মানুষকে ভালোবেসে তুমি সম্মানিত করেছ। আমার ভালো-মন্ধ,সুন্দর -অসুন্দর,মহত্ব,নীচতা-সব কিছু মিলিয়ে আমাকে ধন্য করেছ বলেই অন্ততঃ তোমার কাছে সহজ হতে পারি। ইদানিং খুব মনে হয়-আমি প্রকৃ্তিকে বেশী ভালোবাসলে তুমি প্রকৃ্তির মধ্যে সুন্দরতর প্রকৃ্তি। তোমাকেই ভালোবাসি। আর ঘর ছেড়ে বৈরাগী হলে তোমাকে নিয়েই হব।

যেমন করে বেঁচে আছি তেমনি তোমাকে ভালোবাসি গো ভালোবাসি। মনে মনে বলি আমি খুব বেশী রোমান্টিক। তাই আমার এতো দিনেও বাস্তব বুদ্ধি হলো না। এখন গভীর রাত। আকাশ ঘন কালো মেঘে ভরা।

আর কি ঠান্ডা বাতাস। মহাকাশের মাঝে যে বিশাল শূন্যতা,যে তীব্র নিঃঙ্গতার বেদনা যেন বুকের মধ্যে হাহাকার করে যেতে থাকে। তোমাকে ছাড়া সব কিছুই মিথ্যে মনে হয়। আমার নিজের খুশি হওয়া বা আনন্দ হওয়া নির্ভর করে তোমার উপর। তোমাকে হাসি খুশি দেখলে আমিও খুশি হয়ে যাই।

তোমার মন খারাপ হলে আমার মন খারাপ হয়ে যায়। এখন তোমার দায়িত্ব বেড়ে গেলো। আমাকে হাসি খুশি রাখার জন্য তোমাকে ও হাসি খুশি থাকতে হবে। হিমি তোমাকে যা বলতে চাই,তা তোমার বুড়ো প্রেমিক রবীন্দ্রনাথ আগেই বলে গেছেন। তাই তার কথাই আমার কথা- "অক্সিজেন একভাবে বয় বাতাসে অদৃশ্য থেকে,সে না হলে প্রান বাঁচে না।

আবার অক্সিজেন আর একভাবে কয়লার সঙ্গে যোগে জ্বলতে থাকে,সেই আগুন জীবনের নানা কাজে দরকার- দুটোর কোনোটাকেই বাদ দেয়া চলে না। জীবনে অনেক সুযোগ ঘটতে পারে কিন্তু ঘটে না। যে মানুষ অর্ধেক রাজত্ব আর রাজকন্যা এক সঙ্গেই মিলিয়ে পায় তার ভাগ্য ভালো;যে তা না পায়,দৈবক্রমে তার যদি ডান দিক থেকে মেলে রাজত্ব আর বাঁ দিক থেকে মেলে রাজকন্যা,সেও বড় কম সৌভাগ্যের নয়। আমি রোমান্সের পরমহংস। ভালোবাসার সত্যকে আমি এক'ই শক্তিতে জলে স্থলে উপলব্দি করি,আবার আকাশেও ।

নদীর চরে রইল আমার পাকা দখল,আবার মানসের দিকে যখন যাএা করবো,সেটা হবে আকাশের ফাঁকা রাস্তায়। জয় হোক আমার হিমি'র। জয় হোক আমাদের আপনজন-প্রিয়জনদের। আর সব দিক থেকেই ধন্য হোক- 'এই আমি'। একটা কথা তোমাকে স্পষ্টই তোমাকে বলি।

রুপক দিয়েই বলতে হবে,নইলে এসব কথার রুপ চলে যায়-কথা গুলো লজ্জিত হয়ে উঠে। তোমার সাথে আমার সম্পর্ক ভালোবাসার'ই। কিন্তু সে যেন কুয়ার তোলা জল- প্রতিদিন তুলব,প্রতিদিন ব্যবহার করব। আর তোমার সাথে আমার যে ভালোবাসা সে রইল দিঘি,সে ঘরে আনবার নয়,আমার মন তাতে সাঁতার দিবে। " "তোমারে হৃদয়ে রাখি সদানন্দ মনে থাকি শ্মশান অমরাবতী দুই ভালো লাগে।

ভক্তি ভাবে এক তারে মজেছি তোমার ধ্যানে কমলার ধনমানে নাহি অভিলাষী। " কবিতা টা কার বলতে পারবে? সব সময় মনে রেখ,এই চিঠি তুমি বার বার পড়বে। আচ্ছা তুমি কি আমার শূন্যতা উপলব্দি করতে পারো?আমি পৃথিবীর আর সবার মত না। আমার পৃথিবী অনেক গভীর। আমার প্রায়ই মনে হয় পৃথিবীর প্রথম মানব মানবীর শ্বাসবায়ু আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে চারিদিকে।

মিতু ইদানিং আমার কিচ্ছু মনে থাকে না। তবে খুব বুঝতে পারি- মানুষ কঠিন পরিশ্রম করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভারেষ্টের চূঁড়ায় উঠতে যায়। মাঝে মাঝে হঠাৎ মনে হয় সব মানুষকে তার ব্যক্তিগত এভারেষ্টের চূড়ায় উঠতে হয়। মানুষের এই হচ্ছে নিয়তি। হিমি,বিশেষ একজন মানুষকে কেন মনে হবে এ আমার নিজের মানুষ?এই আমার সম্বল,এই আমার আশ্রয়,আমার ইহকাল-পরকাল,দুনিয়ায় কোটি কোটি মানুষের ভিড় থেকে এই যে একজন উঠে আসে,অমনি তার সঙ্গে বাদবাকি মানুষের তফাত হয়ে যায়!এটাই কি প্রেম?এটাই কি ভালোবাসা?আসলে মিতু পৃথিবীতে এক একটা মানুষ এক একটা অবসেশন নিয়ে জন্মায়।

অজানা ভুবনের এক আকাশ অতলস্পর্শী ক্লান্তি আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। পৃথিবীতে এত কষ্ট কেন?বুকের মধ্যে যেন কেমন করে। কোনো ভাষা ব্যাবহার করে এ ব্যাথাবোধ বোঝানোর উপায় নেই। তোমার জন্য মন টা হু হু করে। তবু আমি তোমার কাছে যাই না।

তবে তুমি যদি সারা জীবন এই ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে পারো,তবে সে কৃতিত্ব তোমার। তোমার উপর কখনও রাগ করা উচিত নয় আমার। তুমি না পেরে না বুঝে অনেক কিছু কর। তবে তোমার অনেক আদর মায়া ভালোবাসা আছে। যা আমাকে জ্যোতিময় সত্যের পথ দেখায়।

আমি বুঝি না এতটুকু শরীরে এত আদর মায়া ভালোবাসা তুমি কোথায় ধারন করো?আর কিছু ক্ষন পর আকাশ ফরসা হতে শুরু করবে। তোমার জন্য আমার খুব কষ্ট হয়। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরালাম। ভাবছি- চিঠি যে লিখে তার কৃতিত্বের চেয়ে অনেক বড় কৃ্তিত্ব যে চিঠি লিখিয়ে নেয় তার। তোমার চোখে কি দেখেছিলাম কে জানে!একজনের দু'টি চোখ আমার জীবনের সমস্ত চাওয়া,সমস্ত প্রাপ্তি.....! এই বিষাদ এবং ভালোবাসা,এই জ্বালা এবং শান্তি-এই সব কিছুই ভাগাভাগি করে- এক সঙ্গে বেঁচে থাকতে হবে।

"আমাকে নিয়ে নানান গল্প আছে সেই গল্পে আছে একটা ফাঁকি বিরাট একটা বৃও এঁকে নিয়ে ভেতরে নাকি আমি বসে থাকি। কেউ জানে না হিমি,তোমাকে বলি বৃও আমার মজার একটা খেলা বৃও কেন্দ্রে কেউ নেই,কেউ নেই আমি বাস করি বৃওের বাইরেই। " বি দ্রঃ ১/ভালো থেকো। সব সময় ভালো থেকো। সব সময় সুন্দর করে সেজে থেকো,বুঝলে? ২/কাচের চুড়ির মতোই ভঙ্গুর একটি ভীষন দামী জিনিস তোমাকে ইতিমধ্যেই দিয়েছি।

যত্ন করে রেখ। বলো সেই জিনিসের নাম কি? ৩/তুমি ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকবো। (হিমিকে লেখা চিঠি, দ্বিতীয় পর্ব এখানেই শেষ। তৃতীয় পর্ব "রাতের সব তারাই আছে/দিনের আলোর গভীরে। '' পরে যথা সময়ে লেখা হবে।

)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.