আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেম - ৯

কৃষক blogsaudi@gmail.com

আগের পর্ব Click This Link হঠাৎ রিক্সার বেলে পাইয়া সঞ্চিত ফিরা পাই। শুনতে পাই রিক্সার পেসেঞ্জার রা কইতেছে । প্রেম করার আর জায়গা পায় না, একবারে রাস্তার মধ্যে। ভাগ্য ভালো যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আছিল না। সন্ধ্যা তখন অনেক হয়ে গেছিল।

তাই তারে আর কিছু কইতে পারলাম না। সোজা হলে পৌছাইয়া দিয়া নিজের ডেরায় ফিরে যাই। রুমমেট জিগায় কি খবর আমি উত্তর দেই ভালো। নিজের ভিতর তখন ভীষণ আনন্দ এক অন্যরকম অনুভুতি, সব পাওয়ার তৃপ্তি, আমি আবেশিত -এ ঠিক বুঝানো যায় না। রুমের মধ্যে রুমমেটদের সাথে থাকতে ইচ্ছা করতাছে না।

তাই আস্তে কইরা রুম থাইক্যা বাইর হইয়া আইলাম। উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে কিছুক্ষন ঘুরাঘুড়ি কইরা গিয়া দাড়াইলাম লেকের পাড়ে। এইখানে বলা দরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে একখান বিরাট লেক আছিল। লেকের পারে চুপ কইরা বসলাম। রাত্রিবেলায় লেকের পানিতে হলগুলার আলো আইসা এক অদ্ভুদ পরিবেশ সৃষ্টি করে।

বইসা বইসা তাই দেখতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর হঠাৎ লক্ষ করলাম আমি আসলে কিছুই ভাবতাছি না। আসলে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটরে মানুষে মস্তিস্ক ঠিকভাবে কাজ করেনা বইল্যা মনে হয়। মনে মনে কই এইডা কেমন কথা। আজকে এত্তবড় একটা ঘটনা ঘটলো আর আমি তা নিয়া কিছুই ভাবতাছি না এইটা কেমনে হয়।

সাথে সাথে সন্ধ্যার ঘটনাগুলা আস্তে আস্তে চোখের সামনে রিপ্লে হইতে থাকে। আমি চুপ কইরা দেখি - আমি রোমাঞ্চিত হই, শিহরিত হই বিভিন্ন অনুভূতির তরঙ্গ আমার শরীরের শিরা উপশিরায় প্রবাহিত হইতে থাকে। রিপ্লে শেষ হয় সঞ্চিত ফিরা পাই নিজে নিজে একটু লজ্জা পাই। মনরে বলি তোমার একলা একলা দিন শেষ। তোমার মনের সাথে এখন আরকেজনের মন যুক্ত হইছে।

মন কয় আমি আনন্দিত। শুইন্যা খুশী হই। পাশ থাইক্যা বিবেক বেটা আইস্যা কয় এত ফাল পারতাছস কেন ভবিষ্যত লইয়া চিন্তা কর। সম্পর্ক বানানো খুব সোজা কিন্তু সেই সম্পর্কে সঠিক পরিনতি তে নিয়া গেলে তবেই না সম্পর্কের মর্যাদা রক্ষা হয়। আমি চিন্তা করি তাইতো যে সম্পর্কে সুত্রপাত আজকে হইছে তা তো ক্ষনিকের কোন সম্পর্ক না।

আমি উত্তর দেই আমি সম্পর্কতো ক্ষনিকের জন্য করি নাই এই সম্পর্কটাকে আমি সারাজীবন টিকিয়ে রাখবো। হঠাৎ মনে হয় মামুরে বিষয়টা জানানো দরকার। লেকের পাড় থাইক্যা উইঠা পড়ি যাই মামুর হলে মামু ডাইক্যা আইনা কই মামু ঘটনাতো ঘটছে মামু জিগায় কি ঘটছে তারে কইলাম সে তো রাজী হইয়া গেছে। মামু উত্তর দেয় তোরে কইছিলাম না সে রাজী হইবো । যাই হোক ভালো হইছে ।

আমার খাওয়ন কই আমি মামুরে কই কি খাইবা কও যা খাইবার চাইবা তাই খাওয়ামু। সে কয় এইখানে খাওয়াইলে চলবো না শহরে নিয়া গিয়া খাওয়াইতে হইবো। আমি কই তাই সই চলো এখন। মামু কয় এখন না কালকে খাওয়ানো লাগবো। আমি কইলাম আচ্ছা।

চইলা আইলাম হলে । ছাদের দিকে মুখ কইরা শুইয়া রইলাম কিন্তু ঘুম কি আর আসে। চোখ বন্ধ করলেই তার মুখ দেখি আর তারে দেখলেই ঘুম ১০০ হাত দুরে যায়। যাইহোক এপাশ ওপাশ কইরা কখন যে ঘুমাইছি তা কইতে পারমু না। রুমমেটের ডাকে সকালে উঠলাম।

তাড়াতাড়ি রেডি হইয়া গেলাম ক্লাসে। ক্লাসে গিয়া দেখি সেও আছে। তারে জিগাইলাম কেমন আছো । নিজের মধ্যে একটা চোর চোর ভাব এই বুঝি সবাই বুইঝা ফালাইলো। নিজের কিছুটা সময় নিয়া সামলাইলাম।

মামু শালা এমন বদের বদ খোচা মাইরা কয় কিরে তোর কি হইছে কমু? বুঝেন আমার অবস্থা। কানে কানে মামুরে তোমার পায়ে ধরি মামু ক্লাসের সবাইরে কিছু জানাইও না। তারপরও শালার মামু আমার রুমমেট রে দিল কইয়া। ফলাফল জরিমানা দ্বিগুন হইলো। সুবিধা একটা হইলো তাগোরে কইলাম আজকে খাওয়াই তে পারুম না আগামী মাসের টাকা আইলে খাওয়ামু ।

তারা রাজী হইলো। ক্লাসের ফাকে ফাকে তার দিকে তাকাই দুই তিন বার চোখা চোখি হইলো। বড় পুলক অনুভব করি। যাইহোক ক্লাস শেষে বাইর হইয়া দাড়াইলাম দেখি সে অন্যদুই মাইয়ার সাথে আলাপ করতাছে। অন্যদিন হইলে তো ডাক দিতে পারতাম কিন্তু আজকে অন্যরকম।

বেশীক্ষন অপেক্ষা করতে হইলো না সে আইলো আমার কাছে জিগায় কি? আমি শালা বেকুব ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া গেলাম। কি খবর? ভালো, কেমন আছো? পরান ডা জুরাইয়া গেল। মনে হইলো কতদিন এই কন্ঠস্বরটা শুনার অপেক্ষা করতেছিলাম। কইলাম চলো এইখান থাইক্যা যাই। দুইজন মিইল্যা গেলাম নদীর পাড়ে।

বসলাম সেই বিখ্যাত বেঞ্চি গুলার একটাতে। সময় যায় চুপ কইরা দুইজন বইয়া থাকি। কেউ কোন কথা কই না। মুখ দিয়া কথা বাইর হয় না। আসলে কি কমু তাই পাইতাছি না।

নিরবতা ভাঙ্গিয়া তারে কই চুপকইর আছো কেন কি কও। সে জিগায় কি কমু। সে কয় আমার খুব ভয় লাগতাছে আমি তারে কই ভয় লাগনের কি আছে? আমি তোমারে ভালবাসি তুমি আমারে ভালবাস ব্যাস ল্যাটা চুইক্যা গেল। সে জিগায় তুমি আমারে সারা জীবন ভালোবাসবা তো? কথা দেও তারে কথা দেই আমি তোমারে সারাজীবন ভালবাসমু। আবার চুপ কইরা বইসা থাকি।

মনে হয় সব কথা শেষ। নদীর দিকে তাকাইয়া থাকি। সময় গড়ায় দুপুর থাইক্যা বিকাল হয়। নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়া দুইজন বইসা থাকি। কথা কওয়নের চেয়ে তার পাশে বইসা থাকাই অনেক আনন্দের মনে হয়।

সেই চেনা মুখটা আবার নতুন কইরা চিনতে থাকি। অপলক দৃষ্টিতে তারে দেখি ভাবি এই মাইয়া ডারে আমি ভালবাসি। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়। তার হলে যাওয়ার সময় হইয়া আসে আমরা দুইজনের মধ্যে কোন কথা হয় না বাইসা থাকা ছাড়া। শেষ মুহুর্তে ভাবি আরে তারে তো কিছুই বলা হইলো না।

বলার মতো কথা কিছু খুইজ্যাও পাই না। সময় শেষ হইলে তারে হলে দিয়া আইতে যাই । হলে ঢুইক্যা যাওয়ার মুহুর্তে তারে আস্তে আস্তে কই আমি তোমারে খুব ভালবাসি। সে উত্তর দেয় আমিও। হলে ফিরা গিয়া গোসল, খাওয়াদাওয়া কইরা সোজ বিছানায়।

মনে কিঞ্চিত অতৃপ্তি কোন কথা বলতে না পারার লাইগ্যা । মন রে কই প্রতিদিন তার সাথে দেখা হইবো কথা হইবো আজকের দিনটা না হয় মৌনতা দিবস হিসাবে রইয়া গেল। মন তৃপ্ত হয়। সাথে সাথে ঘুম । এত আরামের ঘুম আমি আর ঘুমাইছি বইল্যা মনে হয় না।

নিজের অজান্তে বিষবৃক্ষের চারা বড় হইতে থাকে চলবে....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.