আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কি চাই কি পাই ?

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার পীঠস্থান । দেশের উন্নয়নের সূতিকাগার । একটি দেশের নীতি , সামাজিক , অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন ধারনার জন্মস্থান । আমাদের দেশে বড় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম নয় । আন্তর্জাতিক এমন কি মহাদেশীয় রেটিংএও এগুলির অবস্থান নিতান্তই তলানীতে ।

যা আমাদের দেশের জন্য খুবই লজ্জার । আমাদের দারুন মেধাবী ছেলে মেয়েদের জন্য অপমানজনক । মেধার ঘাটতিতো নেই এদেশে । তাহলে কেন এর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়নের রেটিং এত নিচে । বিশ্ববিদ্যালয় হল ডিগ্রী প্রদানকারী স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ।

ডিগ্রী প্রদানের ক্ষমতা এর একটি প্রধান বৈশিষ্ট বটে । কিন্তু প্রধান উদ্দেশ্য নয় । এটি হচ্ছে দেশের মেধা ব্যাংক । একটি ব্যাংক যেমন এর পুঁজি বিভিন্ন ভাবে কাজে লাগিয়ে পুঁজির বিকাশ ঘটায় এবং এর থেকে সর্বোচ্চ ফায়দা হাসিলে সচেষ্ট থাকে ; বিশ্ববিদ্যালয়কেও এমনি তৎপর হতে হবে । আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি করে , আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামইকি এর মূল দায়িত্ব ? তাহলেতো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ফেলে সবগুলোকে কলেজ বানিয়ে ফেললেই হয় ! এটি , যেমন সুদি কারবারী প্রতিষ্ঠান হলেই চলে , ব্যাংকের প্রয়োজন কি, এমন হয়ে যায় ।

দেশের সর্বোচ্চ বিকাশ যোগ্য মহা মূল্যবান পূঁজি তাদের ভান্ডারে জমা হয় । এটা যথাযথ কাজে লাগানোর , দেশ গঠনের উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের । প্রয়োজনীয় গবেষণা , সার্বজনীন জ্ঞানকে দেশের উপযোগী করে কাজে লাগানোর কৌশল উদ্ভাবন এর দায়িত্বের আওতায় । সামাজিক, অর্থনৈতিক ও কারিগরী যে কোন বিষয়ে বৈশ্বিক এবং দেশীয় প্রেক্ষাপটে ধারনা সমূহ নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা ও কার্যকরী বাস্তব পদ্ধতির উদ্ভাবনতো বিশ্ববিদ্যালয়েরই কাজ । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি তা করে ? করে , তবে তা নিতান্তই দায়সারা গোছের ।

অথচ দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী ও শিক্ষিত ডিগ্রীপ্রাপ্তদের দ্বারা এর শিক্ষকমন্ডলী গঠিত । সর্বোচ্চ মেধাবী ছাত্রবৃন্দ এতে অধ্যয়ন করে । আমাদের ছেলেরা বিদেশে গিয়ে গবেষণা করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে পারে । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন তাদের কাজে লাগাতে পারেনা ? গবেষণা সুযোগের অভাব ? এটি আংশিক কারন হতে পারে । মূল কারন হল অনিচ্ছা ও গা ছাড়া ভাব ।

কাজ টিকে দায়িত্ব মনে না করাও আরেকটি কারন । সবচে অবাক লাগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালে । আন্ডারগ্রাজুয়েট শেষ করে এর ছাত্ররা ভাবে দেশতো উদ্ধার করেই ফেলেছি , চাকরির বাজার ফুলের মালা নিয়ে অপেক্ষা করে থাকে ওদের জন্য । স্যারেরা ভাবেন দেশ গড়ার হাতিয়ারতো তৈরী করেই ফেলেছেন । তাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে অসুবিধা কি ? এটিতে মাষ্টার্স প্রোগ্রাম মোটামুটি ধুকে ধুকে চালু আছে কিন্তু পিএইচডি গবেষনার অবস্থা কোমায় চলে যাওয়া রোগীর মত ।

এই অবস্থার জন্য সুযোগ সুবিধার অভাব মোটেই দায়ী নয় । বিদ্যমান সুবিধা ও বাজেটে অনেক বেশি বর্ধিত গবেষণা চালানো যেতে পারে । একই কথা প্রজোয্য দেশের অন্নান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও । সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত গুলো ছাড়াও প্রায় বিশটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে । সেগুলো যদি এই দিকে দায়িত্বপূর্ণ দৃষ্টিপাত করে দেশ অনেক উপকৃত হবে নিসন্দেহে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.