আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কফিন ঘিরে জনস্রোত

প্রায় দুই দশক আগে প্রিটোরিয়ায় ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। অঙ্গীকার করেছিলেন বর্ণবাদহীন এক সমাজ গড়ার। গতকাল বুধবার আবারও সেই ভবনে এলেন তিনি। এবার এলেন বিশ্ববাসীর কাছ থেকে চিরবিদায় নিতে।

আর দুই দিন পরই শৈশবের স্মৃতিমাখা গ্রাম কুনুতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামের মহানায়ক ম্যান্ডেলা।

তার আগে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশাসনের মূল কেন্দ্র ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে তাঁর মরদেহবাহী কফিন রাখা হয় শেষবারের মতো এক নজর দেখার সুযোগ দিতে। কফিনটি তিন দিন থাকবে এখানে। প্রতিদিন মর্গ থেকে এনে রাখা হবে। পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া বিশ্বনেতারা শেষ দেখার সুযোগ পাবেন।

প্রিটোরিয়ার সামরিক হাসপাতাল থেকে গতকাল স্থানীয় সময় সকাল সাতটার কিছু আগে ম্যান্ডেলার মরদেহবাহী গাড়িবহর ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে পৌঁছায়।

সশস্ত্র বাহিনীর আটজন সদস্য গাড়ি থেকে কফিন নামিয়ে ভেতরে নিয়ে যান। এ সময় ম্যান্ডেলার জ্যেষ্ঠ নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা কফিনের পেছনে ছিলেন। মান্ডলা এক বিবৃতিতে বলেন, ম্যান্ডেলার মৃত্যুতে জাতি এক মহানায়ককে হারিয়েছে, আর ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যরা হারিয়েছেন বাবা, দাদা-নানা ও স্বামীকে।

ম্যান্ডেলার কফিন সামরিক হাসপাতাল থেকে ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে নেওয়ার সময় সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা নাড়িয়ে প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানায় সাধারণ মানুষ। এ সময় কেউ কেউ কেঁদে ফেলেন।

সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ২৮ বছর বয়সী ভন মোস্টওয়েনে বলেন, ‘ম্যান্ডেলার সঙ্গে আমার কখনো সরাসরি দেখা হয়নি। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর এটাই একমাত্র সুযোগ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমি দক্ষিণ আফ্রিকান...আমাকে এখানে থাকতেই হবে। ’

২৭ বছর বয়সী সরকারি চাকুরে ফাইকিয়া হার্টলে বলেন, ‘একটি যুগের সমাপ্তি হলো বলে মনে হচ্ছে।

আমি যেসব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেড়ে উঠেছি, তার নিশ্চয়তা আমার বাবা-মা দিতে পারেননি, দিয়েছেন মাদিবা। ’

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার জোহানেবার্গের শহরতলি হাউটনের নিজ বাড়িতে মারা যান নেলসন ম্যান্ডেলা। মঙ্গলবার জোহানেসবার্গের এফএনবি স্টেডিয়ামে এক স্মরণ অনুষ্ঠানে বিশ্বনেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁকে।

ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে তিন দিন রাখার পর ম্যান্ডেলার মরদেহ ১৪ ডিসেম্বর সামরিক বিমানে করে ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের প্রধান শহর এমথাথায় নেওয়া হবে। সেখান থেকে বিমানে করেই কুনু গ্রামে নেওয়া হবে কফিন।

পরদিন ১৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে বিশ্বনেতা ম্যান্ডেলার মরদেহ। এএফপি।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।