আমার লেহা সবাই কপি মারবা ,দেহি কার কত সাহস । কিছু দিন আগে শেষ হয়ে গেল ২০১২ সামার অলিম্পিক । এতে বিশ্বের ২০৪ টি দেশ থেকে ১০০০০ এর অধিক এথল্যাট অংশ গ্রহণ করে। দেশ, জাতি, ধর্ম - বর্ণ ভুলে সমগ্র বিশ্বের এক মিলন মেলায় পরিণত হয় এই অলিম্পিক। মুলত অলিম্পিক শুরু করার পেছনে মুল উদ্দেশ্যই ছিল এটি।
এমন একটি আসর আয়োজন করা যা বিশ্ব শান্তি , সাম্য আর ঐকের মডেল হয়ে থাকবে। এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় অলিম্পিক এই কাজে বহুলাংশেই সফল। তবে সময়ে সময়ে কিছু ঘটনা এই মহান আসরকেও করেছে কলঙ্কময় । আজ আমরা জানবো এমনি কিছু ঘটনা ।
বেইজিং অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল নয় বছর বয়সী লিন মিয়াওকের কণ্ঠের গান ।
লিনের শ্রুতি মধুর কণ্ঠ আর কিউট চেহারা লাখ লাখ দর্শকের মন কেড়ে নেয় । তবে বাস্তবতা ভিন্ন । আসলে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিল ছবির ডানের মেয়েটি । তার নাম ইয়াং পেয়ি । ইয়াং পেয়ির চেহারা চিনা আয়োজকদের যথেষ্ট কিউট মনে না হওয়ায় ষ্টেজে পাঠানো হয় লীনকে।
ছল-চাতুরির আশ্রয় নেওয়ায় সেবার চীনকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ।
এঞ্জেল মেটসের ব্রুস লি কিক--
অলিম্পিক আসরের মান উচুতে রাখতে সব সময় সেরা মানের রেফারি নিয়োগ করা হয়। রেফারিরাও চেষ্টা করেন যথাযথ ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে । আমাদের পরবর্তী ঘটনা রেফারি নিয়েই । কিউবার তায়কোয়ান্দো এক্সপার্ট এঞ্জেল মেটস ব্রোঞ্জ পদক ম্যাচে রেফারি দ্বারা ডিসকোয়ালিফাইড ঘোষিত হওয়ার পর রাগের মাথায়ে রেফারিকে " ব্রুস লি '' কিক করে বসেন।
অবশ্য এই ঘটনার জন্য চরম মুল্য দিতে হয়েছিল এঞ্জেলোকে। অলিম্পিক কমিটি আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে কিউবান এই এ্যাথলেটকে।
মেক্সিকো অলিম্পিকে ব্ল্যাক পাওয়ার প্রটেস্ট--
ষাট দশকের শেষ দিকে আমেরিকাতে সিভিল রাইট মুভম্যান্ট আন্দোলনে উত্তাল ছিল । আফ্রিকান আমেরিকানরা তাদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে উঠেন। আফ্রিকান আমেরিকান্দের দাবি দাওয়া আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম হিসবে তারা ব্যাবহার করে অলিম্পিক আসরকে ।
১৯৬৮ সালের মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকের ২০০ মিটার স্প্রিন্টের পদক বিতরণের সময় টম স্মিথ আর জন কার্লোস ষ্টেজে উঠেন কালো গ্লাভস আর খালি পায়ে। কালো মুষ্টিবদ্ধ ছিল ব্ল্যাক কমিউনিটির ঐকের প্রতীক , আর খালি পা তাদের কমিউনিটির দারিদ্রতার কথা মাথায় রেখে । যেহুতু অলিম্পিক সকল প্রকার রাজনৈতিক মুভমেন্টের মুক্ত , তাই অলিম্পিক কমিটি এই ঘটনাটিকে মারাত্বক অফেন্ড হিসেবে নেয় ।
অলিম্পিক বয়কট ৮০, ৮৪--
সকল প্রকার রাজনৈতিক প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে অলিম্পিক আয়োজন ও সফল করা হবে - এমনটিই ভাবা হত। তবে সেই সুরও কাটা গিয়েছে বহু বার ।
সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা আফগানিস্তান হামলার প্রতিবাদে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ১৯৮০ সালে মস্কো অলিম্পিক বয়কটের ডাক দেন । ফলশ্রুতিতে ৬৫ টি দেশ ৮০ সালের মস্কো অলিম্পিক বর্জন করে।
আমেরিকার এহেন সজ্জন ব্যাবহার ফিরিয়ে দেওয়ার মোক্ষম সুযোগ আসে ১৯৮৪ সালের লস এঞ্জেলেস গেমসে । নিরাপত্তার ধুয়া তুলে এই গেমস থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন , কিউবা, হাঙ্গেরি সহ বিশ্বের ১১ টি দেশ ।
মিউনিখ হত্যাকান্ড--
১৯৭২ সালের জার্মানির মিউনিখ অলিম্পিকে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা ঘটে ।
ফিলিস্তিনি জঙ্গি সংঘটন ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের অস্র সজ্জিত এক দল নিরাপত্তা বেষ্টনী ভঙ্গ করে অলিম্পিক ভিলেজে ঢুকে পরে । অস্রের মুখে জিম্মি করে নেয় ইসরাইলী এথলেটদের। জিম্মিদের বিনিময়ে তারা ইসরাইলে আটক প্যালেস্তাইন্দের মুক্তি দাবি করে । ঈস্ররাইলি সরকার সন্ত্রাসীদের সাথে কোন প্রকার সমঝোতায় যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। বাধ্য হয়ে জার্মান সরকার বন্দিদের মুক্তির জন্য অপারেশন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
বাজে প্ল্যানিং আর সমন্বয় হীনতার কারনে অপারেশন সফল হয়নি । জিম্মিকারিদের গুলিতে নিহত হন নয়জন ইসরাইলী । সমগ্র অলিম্পিক ইতিহাসে আজো পর্যন্ত এটি সবচাইতে জঘন্য ও কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয় । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।