আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ক্লাস সেভেনে পড়া ছেলের লেখা ১ম গল্প...

আমি পথ মঞ্জরী ফুটেছি আঁধার রাতে রজনীতে পোড়াবাড়ির গলি পল্টু হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। সে পড়ে সিক্সে। তাদের এলাকার নাম আমবাগান। জায়গাটায় লোকজন একটু বেশি। তবে তাদের এলাকার খুব বড় দোষও ছিল।

সেখানে ছিল এক পোড়াবাড়ি। সেই পোড়াবাড়ির গলিতে দিনের বেলাতেও লোকজন দেখা যায় না। এই গলিতে যে পোড়াবাড়ি আছে তা একসময় এক ইংরেজ জমিদারের বাড়ি ছিল। পরে এখানে যেই থেকেছে ৩ দিনের বেশি থাকতে সাহস করেনি। বলে এখানে নাকি ভুত আছে।

তখন থেকেই এই গলির নাম পোড়াবাড়ির গলি। এই পোড়াবাড়ির গলিতে আবার ৩ টা লাশও পাওয়া গিয়েছিল। প্রথম লাশ পাওয়া গিয়েছিল পুর্নিমার রাতে আর এর পরের দুটো অমাবস্যায়। তাই পুর্ণিমা ও অমাবস্যায় লোকজন পারতপক্ষে এই রাস্তায় কোন ভাবেই আসে না। তবে আজব ব্যাপার হল ওই ৩ জনই পানিতে ডুবে মারা গেছে।

কিন্তু ওই গলির আশেপাশে কোন পুকুর বা নদী নেই। পল্টুদের বাড়ি যাওয়ার দুটো রাস্তা আছে। ১। বাজারের পেছনের রাস্তা দিয়ে ঘুরে। আর ২।

এই পোড়াবাড়ির গলি দিয়ে। কিছুদিন ধরে বাজারের পেছনের রাস্তায় কাজ চলছে। তাই এই এক সপ্তাহ ওই রাস্তায় চলার উপায় নেই। তাই পল্টু ও তার আশেপাশের প্রতিবেশীরা দিনের আলো থাকতে থাকতে ফিরে আসে। একদিন পল্টু স্কুলে যাওয়ার পথে তার সবচেয়ে ভাল বন্ধু রবিন, আশরাফ, সাজ্জাদ আর হৃদয়ের সাথে দেখা হয়।

কথা বলতে বলতে রবিন বলল, বেশ কিছুদিন ধরে আমরা একসাথে কোথাও যাইনি। অন্যরা তার কথায় সম্মতি জানায়। তাই তারা ঠিক করল আজ স্কুল শেষে তারা পাশের গ্রামে যাবে সারকাস দেখতে। পল্টুও স্কুল শেষে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে খেয়ে দেয়ে তাদের সাথে রওনা দিল। যেতে যেতে তাদের ৪০ মিনিটের মত লাগল।

তারা যখন পৌছাল তখন ৪ টা প্রায় বাজে। সারকাস ৬:৩০ টা পর্যন্ত চলে। তারা সারকাস দেখে যখন তারা ফিরা শুরু করল তখন প্রায় ৭ টা বাজে। ৭ টা ৩০ এ সবাই নিজের গ্রামে পৌছে যে যার বাড়ি গেল। পল্টুর বাড়ি সবচেয়ে পরে।

তাই তাকে একাই যেতে হবে। সে ভুলেই গিয়েছিল যে তাকে আজ এই পোড়াবাড়ির গলি দিয়ে বাসায় যেতে হবে। সে গলির সামনে এসে থমকে দাড়াল। তার মনে পড়ল যে আজ তাকে এই পথ দিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। তার শিড়দাড়া দিয়ে ভয়ের একটি স্রোত বয়ে গেল।

কিন্তু কী করা বাড়ি তো ফিরতেই হবে। সে ভয়ে ভয়ে হাটা ধরল। কিন্তু পল্টু জানত না যে আজ অমাবস্যার রাত। রাত খুব বেশি হয় নি। কিন্তু এই গলিতে এখনি মনে হচ্ছে যেন নিশুতি রাত নেমে গেছে।

কোথাও কোন মানুষ নেই। এমনকি পাখির ডানা ঝাপটানোর আওয়াজও নেই। হাটতে হাটতে যখন পোড়াবাড়ির ঠিক সামনে এসেছে তখন পল্টুর মনে হল কেউ যেন তার পিছনে পিছনে আসছে। সে চমকে পিছনে তাকালো। কিন্তু কাউকেই দেখল না।

সে আবার হাটতে লাগল। বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর তার মনে হল কেউ বুঝি তার কাধ স্পর্শ করল। সে ভয়ানক চমকে পিছনে তাকালো। কাউকে দেখতে পেল না। কিন্তু স্পর্শ টা এত জীবন্ত মনে হল যেন সত্যিই কেউ আছে।

হটাৎ সামনের ঝোপ থেকে হুটোপুটির মত আওয়াজ বের হল। পল্টু আস্তে আস্তে সেই দিকে এগিয়ে গেল। ঝোপের পিছনে সে দেখতে পেল দুইটা কালো বিড়াল। সে তাড়াতাড়ি আবার হাটা ধরল। কোথায় যেন শুনেছে সে নিশি রাতে কালো বিড়াল দেখা ভাল লক্ষণ নয়।

কিন্তু বিড়াল গুলো কেমন যেন অস্বাভাবিক মনে হল। মনে হল… মনে হল… পল্টু ঘুরে পিছনে তাকাল কিন্তু ঝোপের পেছনে কোন বিড়াল দেখল না। পল্টুর হটাৎ মনে হতে থাকল এখানে ভয়ানক অশুভ কিছু ঘটছে। সে ঘুরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাটতে লাগল। তার মনে হল যেন অনন্তকাল সে হাটছে কিন্তু রাস্তা আর শেষ হয় না।

হাটতে হাটতে সে দেখতে পেল সামনে রাস্তা প্রায় শেষ। সে তাড়াতাড়ি সেদিকে গেল। কিন্তু দেখতে পেল এই গলি শেষে যে মোড়টা থাকার কথা সেটা নেই। সেখানে আছে একটি ছোট নদী। যার স্রোত প্রবল।

তার মনে পড়ল এখানে যে ৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে তারা পানিতে ডুবে মারা গেছে। নদীর তীর ঘেশে পল্টু দাড়াল। হটাৎ হাওয়া যেন একটু বেশি প্রবল হয়ে উঠল। পল্টু বুঝতে পারল কোন অশুভ শক্তি তাকে এখানে নিয়ে এসেছে। পল্টু তার ঠিক পেছনে কারো উপস্থিতি অনুভব করল।

কিন্তু ঘুরে দেখার সাহস পেল না। কিন্তু তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই সে আস্তে আস্তে পেছনে ফিরল। সে কাউকে দেখতে পেল না কিন্তু কেউ যে আছে সেটা বুঝতে পারল। পল্টু জ্ঞান হারিয়ে নদির পানিতে পরে গেল। পল্টুর জ্ঞান ফিরল তার বাসায়।

রাতে সে আসতে এত দেরী করেছিল যে লোকজন তাকে খুজতে বেরিয়েছিল। পরে তাকে পোড়াবাড়ির গলির সামনে পাওয়া যায়। পল্টু হটাৎ জিজ্ঞেস করল তাকে যখন পাওয়া যায় তখন তার শরীর ভেজা ছিল কিনা। তার প্রশ্নে সবাই তার দিকে ফিরে তাকাল। কারণ সত্যিই তার শরীর ভেজা ছিল।

কিন্তু কেন তা কেউ বুঝতে পারে নি। তবে যাই হোক এরপর পল্টুকে আর ওই গলির আশেপাশেও দেখা যায় নি। ----------------------------The end----------------------------------  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.