জুলাই মাসের সাত তারিখের ৯ টা বেজে ৪৪ মিনিট চার সেকেন্ডে স্বনামধন্য অনলাইন নিউজ এজেন্সি বিডি নিউজ টোয়েন্টি ফোর-এ তাদের সিনিয়র রিপোর্টার আবু সুফিয়ানের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যার শিরোনাম : 'মেঘের মুসলমানিতে র্যাকবের মানা'। এই সংবাদে আমরা প্রথমবারের মতো জানতে পারি মেঘের মুসলমানিতে আপত্তি জানিয়েছেন র্যা ব। আর এই নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সাগর-রুনি হত্যা মামলার বাদি নওশের রোমান রিপোর্টারকে জানান, ‘শুধু তাই নয়, মেঘ যখন হাসপাতালে কাউন্সেলিং এ যায় তখন তার (মেঘ) সাথে থাকতেও নিষেধ করা হয়েছে আমাকে’। যদিও এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে র্যাশব এমনটাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
তার ঠিক তিন ঘন্টা পরে ১২ টা বেজে একুশ মিনিটে পাল্টে যায় প্রতিবেদনটির শিরোনাম। পরিবর্তিত শিরোনাম : 'সাগর-রুনি হত্যা র্যা বের আশ্বাস, কিছুই গোপন করা হবে না'। যেই রিপোর্টে বলা হয়, নিহত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির শিশুপুত্র মাহির সরওয়ার মেঘের খৎনায় র্যােবের বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বাহিনীটি বলেছে, শিশুটির মামার বক্তব্য বানোয়াট।
পাশাপাশি আরো বলা হয় এই রিপোর্টে : র্যা বের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক এম সোহায়েল শুক্রবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি সবাইকে মামলার শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করবো। তারপর তদন্তের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী পাওয়া গেছে তা জাতির সামনে তুলে ধরবো।
কোনো কিছু গোপন করা হবে না। ”
আগের রিপোর্টটি কেন পরিবর্তিত করা হলো এই প্রশ্ন একজন সাধারন পাঠক হিসেবে আমার মনে জাগাটি কি খুবই অস্বাভাবিক? আর যদি একজন সাংবাদিক হিসেবে বলি তাহলে অবশ্যই আমি জানতে চাই, কেন এমনভাবে এই রিপোর্টটির শিরোনামের খৎনা করা হলো? কেন বদলে গেল এই রিপোর্টের টপ লাইন? কেন এই সম্পাদকীয় পশ্চাতপদতা? আমরা কি তাহলে সেই সাহসী অনলাইন নিউজ এজেন্সি 'বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে হারাচ্ছি ? তাহলে কি আমরা বুঝবো এভাবেই মুক্ত সাংবাদিকতার গলা চেপে ধরবে র্যাচব। কেন এই পরিবর্তন জানতে রিপোর্টারে সাথে যোগোযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ব্লগেই তার একটি মন্তব্য পাই :
লিংকটা এখন ফাঁকা। ভেবে দেখুন কেনো ফাঁকা।
নিউজটা আপলোড হবার পর কয়েক ঘন্টা ছিলো। তারপর থেকেই এমনটা। তার বদলে এই Click This Link লিংক। পরিবতর্ন হয়েছে খবরটা। নিউজটা পরিবর্তন করা হয়েছে আমার অনুমতি ছাড়াই।
অফিস এটা হয়তো করতে পারে!! যাইহোক। এখন নতুন লিংকটা ক্লিক করতে পারেন। এখন নিউজটার শিরোনাম হয়েছে: “র্যাব এর আশ্বাস, কোন কিছুই গোপন করা হবে না”। হাহাহাহাহাহাহা।
বিশ্বখ্যাত ব্লগার আর জনপ্রিয় অনুসন্ধানী প্রতিবেদক নিজে যে এই পরিবর্তন করেনতি তার প্রমাণ তো মিলল।
আর তার এই মোবাইল বন্ধ রাখার পেছনে যে অভিমান কাজ করছে তা তো নিশ্চিত।
আমরা মুক্ত সাংবাদিকতার কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেও কতখানি মুক্ত আমরা? যখন রিপোর্টারের অনুমতি ছাড়াই পরিবর্তিত হয় রিপোর্ট তখন আমাদের আর কি করার আছে? আমরা রিপোর্ট ব্যলেন্স করার কথা কবে ভাববো নাকি সব সময় দালালি করবো! বিডিনিউজের কাছে এটি অপ্রত্যাশিত !!! অনেক কঠিক সত্য আমরা বিডি নিউজে পেয়েছি। তাদের অনুরোধ জানাবো তারা যেন তাদের আস্থার জায়গা অটুট রাখেন! দালালি সাংবাদিকতা তাদের কাছে প্রত্যাশা করি না। কখনোই না।
এবার আসি ব্লগ প্রসঙ্গে:
এমন শিরোনাম আর রিপোর্টের খৎনা নিজের চোখে দেখে দু'টি রিপোর্টই যখন তুলে ধরলাম ব্লগে।
শুধুমাত্র জনসাধারন যেন বিভ্রান্ত না হন সেকারণে। তখন ব্লগ দ্বিতীয়বারের মতো আমার ব্লগ ছাপলো না। সাফ জানিয়ে দিলো, প্রতিবেদনের কপি পেষ্ট আমরা প্রকাশ করি না। আশ্চর্যের সীমা নাই !! আমার ব্লগের মডারেটর ভাইরা কি জানেন না, যেকোনো তথ্য প্রকাশ করতে হলে তার উৎস জানাতে হয়। এবং আমি তাই করেছি তাদের এই খোড়া যুক্তি মানছি না।
জানিনা এই লেখাও প্রকাশ হবে কিনা ! আসুন আমরা নিজেদের কাছে জবাবদিহিতা বাড়াই। অন্তত চর্চা শুরু করি। মিডিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলুক তা চাই বালেই এতো কথা বলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।