র্যাবের ইয়াবা ফাঁদে র্যাবই ধরা
প্রথম আলো অন লাইন নিউজ এর কপি পোস্টপ্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর সময় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার এবাদুর রহমান
ইয়াবা বড়ি দিয়ে এক বাড়ির মালিককে ফাঁসানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে র্যাবের এক সোর্স। আরেক সোর্স পালিয়ে যান বোরকা পরে। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযান না করেই র্যাবের দলটি সটকে পড়ে। আজ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম শহরের লাভ লেইন এলাকার আবেদীন কলোনির একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
তবে চট্টগ্রাম র্যাবের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জিয়াউল আহসান সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় সোর্সের প্রতারণার শিকার হয়েছে র্যাব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, লাভ লেইন এলাকার আবেদীন কলোনির একটি বাড়ি নিয়ে ছালেহ আহমেদের ছেলেদের সঙ্গে আরেকটি পক্ষের মামলা-মোকদ্দমা চলছে। ছালেহ আহমেদের ছেলেদের ফাঁসানোর জন্য আজ ইয়াবা দিয়ে র্যাবের সোর্সকে ব্যবহার করা হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সোর্স এবাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘লাভ লেইনের একটি বাড়িতে দুই হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট আছে বলে র্যাবের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) হায়দার আলীকে জানায় সোর্স আইয়ুব খান। আইয়ুবের তথ্যের ভিত্তিতে ডিএডি হায়দার আজ সকালে অভিযানে বের হন। তিনি আমাকে ইপিজেড এলাকা থেকে গাড়িতে তুলে নেন।
এর আগে আইয়ুব আমার কোমরে ২০০ ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি পুঁটলি গুঁজে দেন। ’
এবাদুর আরও বলেন, ‘র্যাবের গাড়ি সিআরবি এলাকায় এলে আইয়ুব খানকে বোরকা পরে একটি প্রাইভেটকারে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। আইয়ুব তাঁর নিজ গাড়ি থেকে নেমে র্যাবের গাড়িতে ওঠেন। এরপর ডিএডি হায়দারের নেতৃত্বে আমরা লাভ লেইনের উদ্দেশে রওনা হই। সেখানে একটি বাড়িতে র্যাবের এক সদস্যকে নিয়ে আমি ঢুকে যাই।
কিন্তু হায়দার সাহেব ও আইয়ুব বাড়ির বাইরে ছিলেন। ’
ছালেহ আহমেদের ছেলে সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘র্যাব কর্মকর্তা আমাদের বাড়িতে ঢুকতে চাইলে আমরা সার্চ ওয়ারেন্ট (তল্লাশির অনুমতিপত্র) দেখতে চাই। র্যাব আমাদের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে এবাদুর রহমান আমাদের স্টোর রুমে ঢুকে যায়। সেখান থেকে আরেকটি কক্ষে গিয়ে কোমর থেকে এক পুঁটলি ইয়াবা ট্যাবলেট ফেলে দেয়।
’
সাইদুল বলেন, ‘ইয়াবার পুঁটলি ফেলার সময় তা আমার ভাইসহ বাড়ির অনেকে দেখে ফেলেন। এ বিষয় নিয়ে হইচই হয়। এর মধ্যে আমরা থানায় ফোন করি। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এবাদুরকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে। ’
ডিএডি হায়দারের অভিযান সম্পর্কে র্যাব-৭-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জিয়াউল আহসান সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুজন সোর্স র্যাব কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
বিষয়টি জানার পরই ডিএডি হায়দার নিজের কাছা থাকা হাতকড়া এবাদুরকে পরিয়ে দেন। এরপর এবাদুরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ’
মেজর জিয়াউল আরও বলেন, ‘লাভ লেইনের ওই বাড়ি নিয়ে মামলা চলছে। একটি পক্ষের হয়ে সোর্স আইয়ুব ও এবাদুর ইয়াবা উদ্ধারের অভিযানের নামে বাড়ির মালিককে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। এ ব্যাপারে দুই সোর্সের বিরুদ্ধে বাড়ির মালিক আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লাভ লেইনের ওই বাড়ি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মামলা চলছে। বাড়িটি দখল হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন মরহুম ছালেহ আহমেদের ছেলেরা। এ বিষয়টি আমাদের জানা আছে। ’
পুলিশ সূত্র জানায়, র্যাবের সোর্স এবাদুর ও আইয়ুবকে আসামি করে ছালেহ আহমেদের পরিবার থেকে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছিল। এরপরই পুলিশ পুরো ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।