জীবনের উল্টো পিঠেও আমি বৃত্তের মত বাস্তবতার কাছে বন্ধী আকাঙ্খা আর চাওয়ার অনন্ত গভীর তরঙ্গ আর হৃদয়ের প্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসা অনেক কথার গুনগুন সুর চারপাশে কেমন যেন একটা বলয় তৈরি করে রেখেছে,ঠিক যেন শ্রাবনের মেঘে আচ্ছন্ন করে রাখা আকাশটার মত। চারপাশের অসহনীয় পরিস্থিতি, স্বার্থপরতা, হীন আচরণ, একাকীত্বতার কট্টর বিষাক্ততা কোনো কিছুই যেন স্পর্শ করতে পারে না চারপাশের ঘিরে রাখা ঐ মেঘের প্রাচীর অতিক্রম করে। সবার মাঝে থেকেও কেমন যেন কারোর মাঝেই না থাকার মত। নিজের সাথে কিছুটা বোঝাপড়া সেরে নিয়ে নিজের চিন্তা গুলোকে আজ লিখতে বসেছি,কেন লিখছি তা জানিনা। জানিনা আমার কথাগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কিনা,হয়তবা অনেকটাই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে,যেন কালবৈশাখী ঝড়ের বাতাসের মত।
অগণিত ধুলোর উড়তে পারার আনন্দে যেমন ভাবে বাতাস তার গতি ভুলে বইতে শুরু করে এলোমেলো ভাবে ঠিক যেন তেমনই। বুঝেই উঠতে পারছিনা যে কোত্থেকে শুরু করব,কারন এই ঝোড়ো বাতাসটায় ধুলোর পরিমাণটা অনেক বেশি। ।
ছোটোবেলায় যখন বাড়ির বড়রা গেটের লক খূলে বাইরে যেত তখন একটা সূক্ষ্ম অস্থিরতা আমার বুকের ভেতরটা তোলপাড় করে তুলত ,গেটের লকটা একটু উপরে হওয়ায় আমি অনেক বয়স পর্যন্তই তা ঠিকমতো হাতে পেতামনা, ভাবতাম কবে যে আমি ঐ গেটটা নিজের হাতে খুলতে পারবো!মনে হত গেটটা যেন আমাকে বাইরে যেতেই দিতে চায়না। আমি আমার রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, অভিমান, না পাওয়াকে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা,অপেক্ষার প্রহর গোনা এবং গেটের অপর পাশে নতুন পৃথিবী আবিষ্কার করার কৌতূহলগুলো কখন যে নিজের অজান্তেই ঐ নিস্তব্ধ গেটটার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে শুরু করেছি তা নিজেও বুঝতে পারিনি।
আর এর ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে ঐ গেট'টার সাথে গড়ে উঠেছিল আমর একটা বন্ধুত্ব, সে বন্ধুত্বটা যে কোন ধরণের বন্ধুত্ব ছিল তা তখন আমার জানা ছিলনা। তবে আজ যখন খুব সহজেই ঐ গেটটা খূলে বাইরে বেরোই এবং ফেরার বেলায় দুহাত ভরে নিয়ে ফিরি অতৃপ্তি আর যন্ত্রণা তখন বুঝতে পারি আমাকে আগলে রাখা ওই গেটটাই ছিল আমার সবচে ভালো বন্ধু!! জীব হয়ে জন্ম নিয়েও মাথাটা নত হয়ে যায় জড় বস্তুর নিঃস্বার্থ ভালবাসার কাছে। নিঃস্বার্থ ভালবাসার কাছে হয়ত এভাবেই নত হয়ে যেতে হয় পৃথিবীকে। ।
মানুষের বৃহত্তম নৈতিক বিধানগুলোর একটা নিম্ন মাত্রা আছে আর সেখানে শুধু শোনা যায় 'না', আবার ঐ নৈতিক বিধানগুলোরই উর্ধ্বমাত্রাটায় শোনা যায় 'হ্যাঁ'।
এটাকে খুব সংক্ষেপে বলা যায় নেতিবাচকতা এবং ইতিবাচকতা। ভালবাসা ইতিবাচক কিনা জানিনা আর এই তর্কে যেতেও চাইনা,তবে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতদূর বুঝতে পারি,,ভালবাসা আর নিষ্ঠুরতা কখনোই পাশাপাশি অবস্থান করে না। গাড়িতে করে যেমন গন্তব্যে পৌঁছানো যায় তেমনি ঐ গাড়ির চাকার নিচে পড়লে জীবনটাই হারায়। আমাদের নৈতিক বিধানগুলোর মাত্রাটা নির্ধারণ করার দায়িত্বটা তাই একান্তই কেবল আমাদের নিজেদের। মানুষই একমাত্র সেই আশ্চর্য জীব যার হিংসার যেমন কোন সীমা নেই তার প্রেমেরও তেমন নেই কোন সীমা বা মাত্রা।
একটা মানুষই একটা পরিপূর্ন পৃথিবী,,,অবস্থাভেদে যার যার নিজের সেই পৃথিবীকে ভালবাসা দিয়ে বসবাস যোগ্য করে তোলা বা হিংসা দিয়ে বসবাস অযোগ্য করে তোলার দায়টা সম্পুর্নই তার নিজের। ।
আত্মঅহংকার,মিথ্যা আর প্রতিহিংসাকে পেছনে ফেলে হৃদয়ের গভীর থেকে করা শুভকামনার নামই ভালবাসা। নিজের কষ্টকে ভুলে অন্যকে খুশি করার নামই ভালবাসা। অন্যের কষ্টে নিজের ভেতর যন্ত্রণা অনুভব করার নামই ভালবাসা।
ঘৃণা উপেক্ষা করে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার নামই ভালবাসা। বেচে থাকার জন্য একটা মানুষের বিশেষ কোন বিশেষত্ব থাকার প্রয়োজন আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে বেচে থাকার অবলম্বন হিসাবে কিছু স্বপ্ন আর ভালবাসা থাকার প্রয়োজন অবশ্যই আছে বোলে আমি মনে করি। আর তাই,,আমি নিঃশ্বাস নিই ভালবাসার জন্য, আমি স্বপ্ন দেখি ভালবাসার জন্য এবং আমি বেচে থাকি ভালবাসার জন্য। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।