আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি হৃদয় ছোঁয়া পোস্টঃ তুমি আছ হৃদয়ে...।।

কাছাকাছি৯৬ একটি হৃদয় ছোঁয়া পোস্টঃ তুমি আছ হৃদয়ে...। । সবার জীবনেই প্রেম ভালবাসা আসে। এমন মানুষ হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবেনা যে জীবনে কনদিন প্রেমে পরেনি। যার মনের জানালায় একটিবারের জন্য হলেও ভালবাসা উঁকি দেয়নি।

ভালবাসার পরিনতি কখন ও সুখের কখন ও খুব দুখের। কত আনন্দ কত বেদনা সব মিলেই এগিয়ে যায় ভালবাসা। অবশেষে ঘটে ভালবাসার সপামতি। হয় শুভ নয়ত অশুভ। আমি আনিকা।

আমি বর্তমানে সিলেট মেডিকেল কলেজ এ ৩য় বর্ষের ছাত্রী। মেডিকেল কলেজ এ... ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত আমার জীবনের সবটুকু সময় কেটেছে কুমিল্লা। আমার দেশের বাড়ি কুমিল্লা। আমার স্কুল কলেজ এ সব ই কুমিল্লাতে। আর আমার জীবনে প্রেম এসেছিল স্কুল এ পড়ার সময়।

এবং প্রেমটি ছিল তখন একতরফা। আমি স্কুল জীবন থেকেই বাবা মায়ের খুব ভাদ্দগত ছিলাম। প্রেম ভালবাসা করব কখন ও এধরনের চিন্তা কখন সহজে মাথায় আস্তনা। যাই হক প্রেম টি একতরফা বলার কারন আমাকে যে ছেলেটি পছন্দ করত আমি তাকে পছন্দ করতামনা। তাই বলে যে অন্য কেউকে পছন্দ করতাম তা নয়।

আমার ওই বয়সটাতে বাবা মার ভয়ে হক আর যেই কারনেই হক না কেন আমি এ বেপার গুলো খুব এড়িয়ে চলতাম। ছেলেটির নাম ছিল শাওন। সে কলেজ এ পরত। ১ম বর্ষ। আর আমি তখন পড়তাম ক্লাস নাইন এ।

প্রতিদিন স্কুল ছুটি হলে বান্ধুবিদের সাথে সোজা বাসায় চলে যেতাম। শাওন প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর আমার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে থাকত। কিন্তু প্রথম প্রথম বেপার টি আমি খেয়াল করিনি। শাওন যে প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর আমাকে দেখার জন্য দাড়িয়ে থাকত এই বেপার টি প্রথম ধরা পড়ে আমার এক বান্ধুবির কাছে। একদিন সে ক্লাস থেকে দেরিতে বের হওয়ায় খেয়াল করে যে শাওন ও আমার পিছু পিছু আমাদের বাড়ি পর্যন্ত আসে।

এর পর আমি বাড়িতে ডুকে গেলে সে চলে যায়। এর পর দিন থেকে আমি প্রতিদিন বেপার টি লক্ষ করি। এভাবে প্রায় ২ থেকে ৩ মাস সে আমার পিছু পিছু আমার বাড়ি পর্যন্ত আসলে ও কখন ও বলেনি যে সে আমায় ভালবাসে। কিন্তু একদিন সে আমার পথ আগলে দারায়,আর বলে আনিকা তোমাকে আমার কিছু বলারছিল। কিন্তু আমি ভয় পেয়ে যাই এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড় দেই।

সে আমাকে পিছন থেকে ডাকতে থাকে আমার নাম ধরে। কিন্তু আমি কম রকম পাত্তা নিয়ে দৌড়ে বাড়ি চলে যাই। বিষয় টি আমি আমার পরিবারকে জানাই। জানানোর পর তখন আমাকে আ,আর বাব মা কিংবা আমার বড় ভাই কিছু বলে না। তারা বলে যে সব ঠিক হয়ে যাবে।

এর পর দিন স্কুল থেকে আসার পথে আমি শাওন কে দেখিনি। এভাবে প্রায় এক্ সপ্তাহ শাওন কে আমি দেখিনি। এর পর আবার স্কুল ছুটির পর দেখি শাওন আমার জন্য দাড়িয়ে আছে। তবে সে দিন তাকে খুব অসুস্থ মনে হচ্ছিল এবং তার চেহারায় হাতে ছিল আঘাতের চিনহ। আমি তারাতারি দৌড়ে আস্তে চাইলে সে আমাকে বলে অর একটা কথা শুনে যেতে ।

তাহলে সে আর আমাকে কোনদিন বিরক্ত করবেনা। প্রথমে শুনতে না চাইলেও পরে বান্ধুবিদের কথায় তার কথা শুনতে তার কাছে যাই। সে বলে যে সেদিন সে আমাকে বিরক্ত করায় তাকে আমার বড় ভাই খুব মারে। তাই সে এত দিন আসতে পারেনি। সে বলে যে আমাকে একদিন না দেখলে তার ভাল লাগে না।

সে আমাকে খুব ভালবাসে। সে কাউকে ভয় পায় না আমার জন্য সে সব করতে পারে। আমি তাকে ভালবাসি কিনা শুধু হা বা না এই কথাটা তাকে যেন জানিয়ে দেই। সে আমার উত্তরের অপেক্ষায় থাকবে। একথা বলে সে চলে যায়।

সে একথা গুলো বলার সময় তার দুচোখ বেয়ে পানি ঝরছিল। যাই হক আমার বড় ভাই আমার জন্য তাকে এভাবে মেরেছে জানতে পেরে আমার বড় ভাইয়ার উপর খুব রাগ হচ্ছিল। পাশাপাশি শাওনের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিল। তবে সেদিনের ঘটনা আমি বাড়িতে কেউকে বলিনি। আমার কেন জানি সেদিন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল শাওনের কাছে।

মনে হচ্ছিল শাওন আমকে আসলেই খুব ভালবাসে। আমি সেদিন সারা রাত ঘুমাতে পারিনি এগুল চিন্তা করে। পরদিন স্কুল ছুটির পর দেখি শাওন দাড়িয়ে আছে প্রতিদিনের মত। আমার পিছু পিছু আমার বাড়ি পর্যন্ত আসে তবে আমাকে কিছু বলেনি বা বিরক্ত করেনি। কিন্তু আমি তার কথার উত্তর দেইনি সেদিন।

মনের মধ্যে কেমন যেন একটা ভয় কাজ করত। এভাবেই চলছিল.........। । আমি স্কুল শেষ করে কলেজ এ আর শাওন ভার্সিটি তে ভর্তি হয়। আমার মাথায় এই পর্যন্ত কোনদিন ডুকেনি কি করে উত্তরের আশায় একটা মানুষ এতদিন অপেক্ষা করতে পারে।

কিন্তু একদিন দেখলাম যে কলেজ এর সামনে একটা জটলা। সেখানে সবাই একটা ছেলের খুব প্রশংসা করছে যে ছেলেটি নিজের জীবনের জুকি নিয়ে আগুন লেগে যাওয়া একটি দোকান থেকে দোকানের মালিক কে উদ্দার করে আনে। এই ঘটনার পর আমি যেন বদলে গেলাম। আমি বুজতে পারলাম কত মহৎ হৃদয়ের একটা মানুষ আমাকে ভালবাসে। এতদিন ধরে একটা ছেলে আমার জন্য আমার কাছ থেকে উত্তর পাওয়ার আশায় এভবে অপেক্ষা করতে পারে যে অন্নের জন্য নিজের জীবন বাজী রাখতে পারে তাকে ভালবাসা না বাসাটা আমার খুব অন্যায় হয়েছে।

যাই হক পর দিন আমি তাকে জানাই যে আমি তাকে ভালবাসি। সে কলেজ এর সাম্নেই আমাকে জরিয়ে ধরে। বলে সে নাকি পৃথিবীর সন চেয়ে সুখি বেক্তি আমাকে পেয়ে। এর পর শুরু হয় আমাদের জীবনের নতু ঙ অধ্যায়......। ।

সে আমাকে খুবই ভালবাসত। আমার প্রতিটি চাওয়া পাওয়ার মূল্য দিত। প্রতিদিন আমরা দেখা করতাম আর মোবাইলে প্রচুর কথা বলতাম। এভাবে চুলছিল। আমি কলেজ শেষ করে মেডিকেল এ ভর্তি হই।

আমি ২য় বারের চেস্তায় মেডিকেল এ ভর্তি হই। মেডিকেল এ ভর্তি হয়ে আমি সিলেট এসে পড়ি। সে প্রায় সময়ই আসত দেখা করতে। আর মোবাইলে কথা ত বলতামই। ২য় বর্ষে ওঠার পর পরিবারে আমার বিয়ের কথা চলতে থাকে তাই এক প্রকার সাহস করে আমি তার সাথে আমার সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানিয়ে দেই।

বলতে ভুলে গেছি যে শাওন চুয়েট এ পরত। যেহেতু সে ভাল জায়গায় পরাশুনা করছে ত আমার বাড়িতে তার সাথে সম্পর্ক মেনে নিয়েছে। অবশেষে শাওনের পরিবার তার সাথে আমার বিয়ের প্রস্তাব দেয় তবে সেটা পড়াশুনা শেষ হওয়ার পর। আমার পরিবার টা মেনে নেয়। ভালই চলছিল সব......।

। কিন্তু এর পর......। । ২০১১ এর জুনে আমি আর শাওন ঘুরতে বের হই। আমরা মেইন রোড এর ধার দিয়ে হাতছিলাম।

কিন্তু হটাত একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে পরে আমাদের দিকে। সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ফেলে দেয়। এতে আমি বেঁচে গেলে ও আরও দুজন পথচারীর মত মারা যায় আমার ভালবাসা। আমার শাওন। যে কিনা জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত শুধু আমায় নিয়ে ভেবেছে।

আমায় ভালবেসে গেছে। আর কান্না ভরা চোখে বলতে চাই শাওন আমি তোমার ছিলাম তোমার আছি শুধু তোমারই থাকব.........। । তোমার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছি তোমার স্মৃতি নিয়েই মরব......। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.