যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে সরকারী সূচকে দেশে দারিদ্র কমার খবর থাকে। অথচ চোখের সামনে আমরা প্রতিনিয়ত দরিদ্রক্লিষ্ট শিশুদের দেখি। একদল বলে তাদের ভিক্ষা দেয়া ঠিক নয়, ভিক্ষার উপরে নির্ভরশীল হয়ে যাবে। আরেকদল বাচ্চাটিকে দেখে দয়াদ্র হয়ে দু-চার টাকা গুজে দেয়। আমরা এমন কথাও বলতে শুনি ওরা পেশাদার, ওরা চোর, এতটুকুন বাচ্চা অথচ কি শয়তান দেখেছেন!
ফুটপথে তিন/চার বছর বয়সের বাচ্চারা কেমন দিব্যি হেঁটে বেড়ায়, এটা সেটা খুটে খায়।
রাস্তায় জন্মে বলে হয়তো রাস্তায় একা দৌড়ে বেড়াবার সাহস তার জন্ম থেকেই চলে আসে। এদের দেখে আমাদের তেমন বিকার হয় না। হলে এরা এভাবে বৎসরের পর বৎসর উদ্বাস্তু থাকতে পারতো না।
এরা কি ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসাবে নিয়েছে? মোটেই না। নানাবিধ চক্র এমন উদ্বাস্তুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করে রাখে।
এর সাথে নানা ধরণের মাদক ও অপরাধের একটা ছদ্মাবরণ থাকে। এই মানুষগুলো রাস্তায় থাকা, এমন দরিদ্রতা নিয়ে ঝুলতে থাকা মানুষগুলো কিছু ব্যবসার জন্য দারুণ একটা কভার-আপ হয়ে ওঠে।
যতটা নিরীহ অসংগঠিত মনে হয় - মূলত এরা তার চেয়ে অনেক বেশী সংগঠিত একটা পেশাদার গ্রুপের ক্রীড়ানক। তাদের স্বাধীনতা নাই ফুটপথ থেকে সরে পড়ার, অন্য কোন পেশায় নিযুক্ত হবার। একধরণের দাসত্বের মধ্যে বন্দী থাকে এই অসহায় মানুষগুলো।
যারা তাদের ব্যবহার করে তারা সবাই আমাদের মান্যগন্য সমাজপতি। তাদের হাতে এই অসহায় মানুষগুলোর কিভাবে বন্দী হয় তা নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো দরকার। আমি অনেক শিশুকে নিয়ে আসতে চেয়েছি, পুনর্বাসন করতে চেয়েছি - কিন্তু খুবই বিষ্ময়করভাবে উপলব্ধি করলাম সরকারী পুনর্বাসন কেন্দ্রের ভগ্নদশা। যেখানে এই অসহায় মানুষগুলো আরো অসহায় হয়ে পড়ে, আরো বেশী দাসত্বের শৃংখলে আটকা পড়ে।
আমাদের ভাবা উচিত।
কিছু একটা করা উচিত। রাস্তায় এই ছোট্ট শিশুগুলো যেভাবে বেড়ে ওঠে - তা দেখে মুখ ফিরিয়ে চলে যাওয়া আমাদের সব মানবীয় অনুভূতিকে উপহাস করে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।