নিঃস্বার্থ মন্তব্যকে ধন্যবাদ, সাময়িক ভাবে আমি মন্তব্যে নেই
আড়িয়ল খাঁর পার ঘেষে কালেঙ্গা বাজারের পিছনে পানির খুব কাছে চলে এসেছে যে হাফপ্যান্ট পরা শিশুটি, সে কে? কোথা থেকে এসেছে?
কে বাজারে গিয়ে ভুলে গেছে সন্তানকে? গ্রামের হাটবারে সবাই সদাইপাতি কেনায় মশগুল। হাটে লুঙ্গি পেতে বসে লোকে। বেচে লাউ, সব্জি, গুড়, ডাল, বাতাসা, আটা। গঞ্জ থেকে কিনে আনে গ্লুকোজ বিস্কিট, সাবান, তেল। সব বিক্রি হয়।
চারপাশে স্থায়ী টিনের ঘরে ঝোলে চিরুনী, আয়না, কাকই। লোকে চা খায়, বিস্কুট চুবায়ে দাঁতে লেগে থাকা অবশিষ্ট আঙুলে তুলে আনে। প্রেসিডেন্ট ইলেকশনের গল্প করে। অনেকই পত্রিকায় রঙিন নায়িকার ওড়না ছাড়া ছবিটা হুমড়ি খেয়ে দেখে নেয়।
শিশুটিকে কেউই দেখে না।
দুরে তরুণেরা বল খেলে সমতল মাঠে। গোলপোষ্টের কাছে বল, তারা খেলা থামায় না। ঘুড়ি ওড়ায়, বাকাট্টা হয়।
একজন অনতিদুর আজান শুনে অজু সেরে নেয় নদীর জলে। শব্দ করে কুলি করে, মাথা মোসাহ্ করে।
নামাজের সময় হয়েছে। কাজা হওয়ার ভয়ে সে ছুটতে থাকে। স্কুলের প্রধানশিক্ষক সড়কে প্যাডেল দিতে দিতে দেখেনি এমন নয়। কিন্তু ছুটে আসে নি। শিশুটি তার ছাত্র না।
সে অন্যের শিশুর কাজ কর্মে নাক গলাতে চায় না। অনেক দুরে নৌকায় মাছ ধরার মাঝিটিও মাছ ধরায় ব্যস্ত থাকে।
দুই বছরের শিশুটা ছোট্ট পা দিয়ে হেটে আস্তে আস্তে জলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। পানিতে শিশুদের খুব আনন্দ। কাদায় পা ডুবে যেতে থাকে, হঠাৎ কেমন একটা শব্দ হয়।
নদীর জল উম-শীতল, ঢেউ কম। ডুব সাতার দেয়ার জন্য এমন দিন সচরাচর হয় না।
...............
হিন্দু পাগলীটা ধারে কাছে ছিল না। তার মাথায় ছিট। সে না বুঝে নিশ্চয়ই দৌড়ে শিশুকে আঁকড়ে ধরতো।
বুড়িটা দু দিন ধরে জ্বরে কাৎরাচ্ছে, মাটির কলসীর পাশে খ্যাতা পেতে শুয়ে আছে ছাপড়া ঘরে । অন্যথা এই পাড়েই সে বসে থাকে দিন রাত । বখাটে ছেলেরা তার পিছু লাগে। অন্যরা কেউ তাকে ঘাটায় না - সে দুগ্গা দুগ্গা বলে বিড় বিড় করে, অদৃশ্য বিধাতাকে গালি দেয়, তারপর দাঁত খিঁচিয়ে আসমানে ঢিল দেখায়। বুড়ির ছেলেটা বউটাকে নিয়ে শহরে চলে গেছে।
চানাচুরের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে, খবর নেয় না।
পাগলী বুড়ির এখন অনেক অবসর, অনেক দায়িত্ব। সামনে থাকলে হয়তো প্যাকে পা দেয়ার আগেই শিশুটাকে তুলে নিয়ে আসতো।
(এটি আক্ষরিকভাবেই একটি অর্থহীন গল্প)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।