আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইএসআই ও আমাদের রাজনীতি ।

গত ১৪ ই মার্চ এক মহাসমাবেশে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম জিয়া পাকিস্তানি গয়েন্দাসংস্থা আইএসআই এর সম্পর্ক আছে, আর গত ১৯৯১ সালের ইলেকশনে বেগম জিয়া ঐ সংস্থার কাছ থেকে পয়সা খেয়েছেন । অভিযোগ গুরূতর , তবে সত্যতা প্রকাশ করতেই হবে , কেননা আইএসআই পৃথিবীর মধ্যে একটি ব্যয়বহুল আর শ্রেষ্ট সংস্থা । প্রধানমন্ত্রী কথাটা গত ১৪ই মার্চ প্রকাশ করলেও আমরা এর কিছুটা জানতে পারি গত ১৫ দিন আগে । ১৯৯১ সালে বি্এনপি নামের একটি দলকে অর্থ সাহায্য প্রদান করে । ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে আইএসআই খালেদা জিয়াকে এই অর্থ দেয়।

দুবাই থেকে প্রকাশিতখালিজ টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে ৩ মার্চ শনিবার এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। । প্রকাশিত ঐ খবরের তথ্য: পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার মার্শাল আসগর খানের দায়ের করা একটি মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৯০ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে (পিপিপি) পরাজিত করতে বিরোধী দলগুলোকে আইএসআই ১৪ কোটি রুপি দেয়। এবং বাংলাদেশের ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে অর্থ প্রদান করে । খালিজ টাইমস এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে খালেদাকে আইএসআইয়ের পাঁচ কোটি রুপি দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ‘ভারতপন্থী’ আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনাকে ঠেকাতে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদাকে পাঁচ কোটি রুপি দেয় আইএসআই। আসগর খানের ওই মামলার শুনানি গত বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরীসহ তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ প্রথম দিনের শুনানি শেষে ৮ মার্চ শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে আইএসআইয়ের তৎকালীন প্রধান জেনারেল আসাদ দুররানি ও মেহরান ব্যাংকের প্রধান ইউনুস হাবিবকে আগামী শুনানিতে হাজির করতে নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন। মেহরান ব্যাংকের মাধ্যমে এই অর্থ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয় , সম্প্রতি তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মির্জা আসলাম বেগ ও আসাদ দুররানি পিপিপিকে ঠেকাতে বিরোধী দলগুলোকে অর্থ দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক হলফনামাও দিয়েছেন। বার্তমানে এই মামলা পাকিস্তানের আদালেত চলছে । আমার ত মনে হয় এই তথ্য বিএনপির অস্বীকার করার কোন কারণ নেই । এটি এখন আন্তর্জাতিক মানের আলোচনা , যে একজন দেশের প্রধানমন্ত্রী (যদিও ১৯৯১ সালের পর) তিনি কিনা পাকিন্তানের কাছ থেকে পয়সা খান , যে দেশ কিনা আমাদের কাছে পরাজিত হয়েছে ।

তাদের মূল এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একজন দেশনেত্রী যদি এভাবে সক্রিয় হোন তবে দেশের প্রতি তার ভালবাসা কোথায় ? দেশকে দেবেনই বা কি ??? কোন বিদেশি গয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট যদি আমাদের দেশের নেত্রী হয়ে বসেন তবে আমাদের আর কি আশা করবার আছে । এখন প্রশ্ন করতেই পারেন অনেকেই “ সব মাছেই বিস্টা খায় , হুলা মাছের নাম হয় ! “ আসলে এভাবে তো কোন প্রমাণ এর আগে পাওয়া যায়নি , প্রমাণ ছাড়া আমরা কাউকেই দোষী বলতে পারিনা । খালেদার এই অভিযোগ আজ আন্তর্জাতিক মানের হয়েগেছে। মীর্জা ফকরুল আজ বলেছেন হাসিনা নাকি গত নির্বাচনে ভারতীয় গয়েন্দা “র“ এর কাছ থেকে পয়সা নিয়ে এসেছেন , কই কোন অভিযোগ তো কোন আদালতে আসেনি , খালীফ পত্রিকা তো সেটা বলেনি । তাহলে আমরা ফখরুলের কথাকে কেন বিশ্বাস করব ? আর তিনি বলেছেন হাসিনাকে প্রমাণ করতে হবে খালেদা দোষী ।

আমি মনেকরি খালেদা দোষী সাব্যস্থ হয়েই গেছেন পারলে ফখরুল সাহেব আর খালেদা জিয়া পাকিস্তানের আদালতে গিয়ে হাজিরা দিয়ে মামলা লড়ে প্রমাণ করে আসুন খালেদা দোষী না !! পাকিস্তানের গয়েন্দা আইএসআই একটি ধূর্ত ব্যয়বহুল এবং পৃথিবীর শ্রেষ্ট সংস্থা । এরা পারেনা এমন কোন কাজ নেই । এদের বাৎসরিক ব্যয় ৫০০০কোটি রুপি তার প্রতিপক্ষ ভারতের র এর মাত্র ২৮ কোটি রুপি । পাকিস্তানের মতো একটি দরিদ্র রাস্ট্রের পক্ষে এমন ব্যয় নিন্দনীয়ও বটে । কেননা তাদের অর্থনৈতিক সমস্যা দেশটিকে কুড়েকুড়ে খাচ্ছে আর তারা বিদেশে অর্থ ঢালছে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ণ করতে ! পৃথিবীতে ১০০০০ হাজার আইএসআই এর এজেন্ট আছে , যারা প্রচুর পয়সা পায় , বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবি পত্রিকা নেতা গয়েন্দা বাহিনী , বিশেষ করে জঙ্গিগুস্টিকে এই সংস্থা অর্থ প্রদান করে থাকে ।

তাদের সরকারি বাজেটের ২৮ শতাংশ নিক সামরিক খাতে ব্যয় হয় আর তাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে নাকি মাত্র ৪ শতাংশ ব্যয় হয়, তাই পাকিস্তানে শিক্ষা লাভ করতে পারছেনা তিনজনের একজন শিশু , আর যে দুজন স্কুলে যায় তার একজন বেশিদুর না যেতেই ঝরে পরে , মোট কথা ৩ জনের একজনই মাত্র শিক্ষা লাভ করে । তাদের দেশে আজ শিক্ষিত ৪৬% আর আমাদের দেশে আলহামদুলিল্লাহ ৬৫ % সাক্ষ্যরতার হায় আর শিক্ষিত ৫৬% হবে । মোট কথা পাকিস্তানের যেহেতু নিয়ন্ত্রক সামরিক তাই সামরিক ব্যয়ই আগে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্চে এই আইএসআই ! আমরা কিছুটা লক্ষ্য করলেই দেখতে পাব , দেশে কেন উলফার জন্য ১০ ট্রাক অস্ত্র এসেছিল , কে এনেছিল ? .. এর উত্তর এই আইএসআই এর এজেন্টরা , যারা টাকা খেয়ে আইএসআই এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই এমনকরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক চোরাচালানির রূট বানিয়েছিল ! আরও খোলাশা করে বলতে গেলে আমাদের গুণধর তারেকের নামও এসেছে । যুক্তরাস্ট্রের গয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করে “ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান উলফার কাছ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা ঘুষ খেয়ে ১০ ট্রাক আস্ত্র আনতে সম্মতি প্রদান করেছিল! “ এটি এফবিআইএর ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য । উল্লেখ্য, উলফা ভারতের অসম রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদি দল , যারা অসমের স্বাধীণতা চায়, আর এতে ইন্ধোন যোগাচ্ছে পাকিস্তানের আইএসআই , কারণ তারা ১৯৭১ সালের জবাব তারা অসম ভাগ করে দিতে চায় , কারণ তারা কাস্মিরে অপারগ , এই এলাকা ভারতের দিল্লির নিয়ন্ত্রের আনেক বাহিরে ।

আসলে ১৯৭১ সালের আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ যেমন ছিল সামরিক তেমনি ছিল স্নায়ু যুদ্ধ গয়েন্দা বিভাগের । এখানে ভারতীয় সদ্য ১৯৬৮সালের প্রতিস্ঠা পাওয়া র তৎপরতায় পাকিস্তানের ১৯৪৮ সালের প্রতিস্ঠিত আইএসআই এর পরাজয় ঘটে , যা তারা মনেপ্রাণে মেনেনিতে পারেনি ! তারই ধারাবাহিকতায় তারা বাংলাদেশ স্বাধীনের পর ভারতীয় র কে টপকিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তৎপরতা চালাতে থাকে আর সেই সময় শেখ মুজিব কিলিং মিশন প্রতিষ্ঠা করে , তাতে তারা সাফল্য পায় । এই ধারা অব্যাহত আছে । আমরা জানি , গত বিএনপি জামাতের সময়ে পাকিস্তানি আইএসআই এর জন্য এই দেশ ছিল আড্ডাখানা । তারা ইচ্ছামত আসতো , এমনকি তারা মন্ত্রী এমপি প্রতিমন্ত্রী ধর্মীয় দলের নেতা এবং জঙ্গিদের সাথে চলাফের ও আলাপ আলোচনা করতো ।

আমাদের দেশের অভ্যন্তরে তাদের ঘাঁটি করতে দেয়া হয় সেই জোট সরকারের আমলেই । বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে পার্বত্ব জেলগুলোর গহীণ জঙ্গলে আইএসআই এর ঘাঁটি গুলো ভেঙ্গেফেলে , আর এভাবেই ঐ গয়েন্দা সংস্থার প্রকাশ্য তৎপরতা হারিয়ে যায় , সেই কারনেই আজ আমাদের দেশে আর বোমা ব্লাস্ট হচ্ছেনা , কারণ জঙ্গি প্রশিক্ষণ এই আইএসআই এর একটি পুরাতণ রীতি । তাদের সাবেক মহাপরিচালকই বিভিন্ন মিডিয়ায় স্বীকার করেছেন তারা জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন । এমনকি সাবেক সামরিক স্বাসক পারভেজ মোশার্রফ লন্ডনে এক পত্রিকাতে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন আইএসআই জঙ্গি প্রশিক্ষণ প্রদান করে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য । সেই আইএসআই আমাদের দেশে এসে সেই কাজই করতো আওয়ামীলীগ আর ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ।

বিএনপির সাথে পাকিস্তান ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফা এবং আইএসআই এর এতই ভাল সম্পর্ক যে তারা সরকারি প্রোটকলে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফ এবং উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার ৩ ঘন্টা সরকারি প্রোটকলে হোটেল সেরাটনে বৈঠক করান , পরেশ বড়ুয়াকে জেলথেকে বিশেষ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় , ঐ বৈঠকে সাবেক স্বরাস্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বাবর নিজে উপস্থিত ছিলেন । কি এজেন্ডা পাকিস্তানের সাথে বিএনপির একবার চিন্তা করুণ !!!!!!!! যা বলছিলাম , ১০ ট্রাক অস্ত্রের গাড়ি আনতে যেমন তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছিলেন , তেমনি ঐসময়ের পত্রিকা থেকে জানা যায় , অস্ত্র খালাস হয়েছিল পুলিশি পাহাড়ায় , তাহলে কার নির্দেশে হলো ??? তারেকের আরেক ভূমিকা দেখা যায়, ভারতীয়দের আন্ডারগ্রাউন্ড নেতা দাউদ ইব্রাহীমের সাথে , যিনিকিনা ভারতের সবচেয়ে বড় আন্ডার গ্রাউন্ড নেতা , একটা বিশ্বমানের ক্রিমিনাল , তার সাথে দুবাই , মালায়শিয়া , সিঙ্গাপূরে তিনবার বৈঠক করেন তারেক রহমান , সেই দাউদ ইব্রাহীম হলেন আইএসআই এর একজন সক্রিয় এজেন্ট । এমন ব্যক্তিদের সাথেই সম্পর্ক তারেক রহমান বিএনপি আর খালেদা জিয়ার যারা কিনা আইএসআই এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আসছে । আমাদের দেশের নেত্রী বেগম জিয়া কি তাহলে আইএসআই এর একজন এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছেন ?? সম্ভবত তাই !!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.