বিশিষ্ট কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ‘ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স’র (আইএসআই) কানেকশন খোঁজে দেখছে দেশিয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে হাতে পৌঁছা কিছু কাগজপত্রের মাধ্যমে দেশিয় গোয়েন্দা সংস্থা অনেকটা নিশ্চিত, আইএসআইয়ের সঙ্গে ফরহাদ মজহারের যোগাযোগের বিষয়ে।
অন্যদিকে পুলিশও ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে। গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালানোর উসকানি দেয়ার অভিযোগে লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে গত বুধবার ঢাকার তেজগাঁও থানায় জিডি করেছে পুলিশ। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, ‘আদালতের অনুমতি নিয়ে পুলিশ এই জিডির তদন্ত করবে।
তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। ’ ফরহাদ মজহারকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে সাংবাদিক সমাজ।
গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, আইএসআই ‘লিবার্টি বাংলাদেশ অ্যান্ড ফ্রি থিংকার্স ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠনকে টাকা পাঠাচ্ছে। এর দালিলিক প্রমাণ আছে গোয়েন্দাদের কাছে। এ সংগঠনের সঙ্গে কলামিস্ট, কবি ফরহাদ মজহারের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
ফ্রি থিংকার্স ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ফরহাদ মজহার ছাড়া আরো আছেন দুজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, আইনজীবী, জামায়াত ও বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতা।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের পাঠানো একটি পত্র আছে দেশিয় গোয়েন্দাদের কাছে। ওই পত্রে লিবার্টি বাংলাদেশ অ্যান্ড ফ্রি থিংকার্স ফাউন্ডেশনকে আইএসআই চল্লিশ হাজার মার্কিন ডলার পাঠানোর কথা উল্লেখ আছে। আইএসআইয়ের পক্ষে এতে স্বাক্ষর করেছেন ডিরেক্টর লেফটেনেন্ট জেনারেল আগা মীর হোসাইন শাহ। আইএসআইয়ের ওই পত্র ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশের পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত (ছদ্ম পরিচয়ে) আইএসআইয়ের এক প্রতিনিধির কাছে পাঠানো হয়।
গোয়েন্দাদের মতে, যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ও বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল নিয়ে অপপ্রচার চালানোর জন্য ফ্রি থিংকার্স ফাউন্ডেশন গঠিত হয়েছে। সারাদেশে এর দশ হাজার কর্মী আছেন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত ‘সাপ্তাহিক কাগজ’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে ফ্রি থিংকার্স ফাউন্ডেশনের বিষয়ে বলা হয, দৈনিক আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে চলতি বছরের এপ্রিলে গ্রেফতারের পর সংগঠনটির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে গোয়েন্দারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। গোয়ন্দাদের ধারণা, ফ্রি থিংকার্স ফাউন্ডেশনের সঙ্গে মাহমুদুর রহমানরহ আরো দুজন বিশিষ্ট সাংবাদিক আছেন। সাপ্তাহিক কাগজ’র চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল প্রকাশিত সংখ্যার এক প্রতিবেদন এসব কথা বলা হয়।
প্রায় একই সময় দেশ টিভিতে প্রচারিত এক প্রতিবেদনেও একই কথা বলা হয়।
গত রোববার ফরহাদ মজহার একুশে টিভির এক টকশো’তে ১৮ দলের জোটের হরতালের মধ্যে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলার প্রেক্ষাপট হিসেবে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়াতি করে গণমাধ্যমের ওপর হামলাকে ‘সঠিক’ বলে মন্তব্য করেন।
এরপর থেকে ফরহাদ মজহারকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছেন সাংবাদিকরা। তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ। ২ নভেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার না করা হলে রোববার রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে সাংবাদিক সমাজ।
গতকাল বুধবার দুই ইউনিয়নের যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া এবং ডিইউজের সভাপতি ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ এ বিবৃতি দেন।
অন্যদিকে একই অভিযোগে ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশনের মালিকরা। মঙ্গলবার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এর বৈঠকে শেষে এ দাবি জানান সংগঠনের সহ-সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।
রোববার রাতের টকশো’তে ফরহাদ মজহার বলেছিলেন, ‘সাংবাদিকেরা গণতন্ত্রের পথে অন্তরায়।
এ কারণে সাংবাদিকদের ওপর বোমা বা ককটেল মারা উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।