দেশের সামাজিক আর অর্থনৈতিক ভঙ্গুর দশার কথা উঠলেই অনেকেই আজকাল বলতে শোনা যায় স্বনির্ভরতার (self relince) এর কথা। সামান্য মুদির দোকান থেকে দামি কর্পোরেট অফিসের সুট টাই পরা চাকুরে সবাই আজ বেশ সচেতন......"দেশ যদি আজ স্বনির্ভর হোত তাহলে এই হাহাকার সংঘাত হানাহানি বিশৃক্ষলা থাকত না। " ..."প্রতিটি মানুষ যদি অর্থ নৈতিক ভাবে নিজের পায়ে নিজে দারাত তাহলে এই দশা হত না । "........."স্বাধীনতার পর আমরা কি পেলাম কি পেতে পারতাম এই পাওয়া না পাওয়ার হিসাবকেন মেলে না ?"......রাজনণৈতিক নেতা ( পাতি থেকে শুরু কোরে জাতিয় ) ,চায়ের দোকানে র ছাপোশা লোক টি কিংবা টিভির তথাকথিত আলাপ প্রদর্শনি (talk show)তে চাএর কাপে ঝরতোলা একেক টি বক্তা যেন দেশের এই সম্যসা সমাধান হাতে নিয়ে বসে আছ্বেন। সমস্যাটী খতিয়ে দেখা যাক।
কি এই স্বনির্ভরতা? আসলেই কি এত সহজ এই স্বনির্ভর হওয়া ? প্রশ্ন খোজা থেকেই আমার এই লেখা সূত্রপাত। উদ্দেশ্য কিছু চিন্তা আপনাদের জানান আর আপনাদের থেকেও জানা।
প্রথমেই বলে রাখি আমি কোন economist না বা সেরকম কজানা। বোধ্যাও নই,একদম ই আমজনতা , মুলত আমার কিছু চিন্তা ভাগাভাগি করাই আমার লেখার উদ্দেশ্য। বলতে পারেন নিজে নিজে self relient হয়ার এক প্রকার উদ্দ্যম।
আক্ষরিক অর্থের সন্ধানে
মুলত স্বনির্ভরতা বা self relinence বাself sufficient একটি অর্থ নইতিক শব্দআক্ষরিক অর্থে এর ব্যবহার আমাদের কাছে অনেক্ টা বোধগম্য হলেও এর পরিসর কিন্তু বিশাল। self sufficient এর কথা বলতে গেলে যে শব্দ টি প্রথম মনে আসে তা হল autarky। ইকনমিক্সের ভাষায় যাকে বলে " কোনো রাজ নইতিক বা অর্থ নইতিক ব্যবস্থায় পুরোপুরি ভাবে নিজের পায়ে দাড়ানো। " গ্রীক শব্দ autarky মুলত এসেছে auto>self + arkew> to suffice = self suffice থেকে। ইকনমিক্স এর ভাষা এ অনেকে আবার autarky কে closed economics বলেও আক্ষা দেন যা মুলত open economy এর বিপরীত।
বর্তমান বৈশ্যিক প্রেক্ষাপটে কিংবা ইন্টারন্যশনাল ট্রেড এর যুগে সম্পূর্ন closed economy বা autarky উদাহরণ বিরল।
ষোড়শ ও সপ্ত দশ শ্বতাব্দীতে বিশ্বের বিভিন্ন সাম্রাজ্যতন্ত্রে বাহ্যিক যেকোনো রাজ্যের সাথে বানিজিক সম্প্ররক রাখার উপর বারন ছিলো যাকে মার্কেন্টিলিসম বা marcentilism বলা হত।
নাজি জার্মানীর ক্ষেত্রে কেমন ছিলো এই স্বনির্ভরতা
প্রথমেই আসা যাক এই শতাব্দীর উদাহরনে। ১৯৩০ সালে নাজি জার্মানীতেও এর খানিকটা প্রয়োগ দেখা যায়। সে সময় মুলত জার্মানীর রাজনইতিক প্রেক্ষাপটে দেখলে দেখা যায় যে গ্রেট বৃটেন,সোভিয়েত রাশিয়া কিংবা ফ্রান্স তখন বিশ্বমোডল ,ভার্সেই চুক্তির চাপে জাতিগত ভাবে নিস্পেষিত জার্মানীর প্রধান শত্রু এরা।
স্বাভাবিক ভাবেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করতে থাকা জার্মানি এইদেশ গুলর সাথে নুন্যতম বানিজ্য করার ক্ষেত্রে নিয়ম পালন করে চলছিল। এরি পরিপ্রেক্ষিতে বিকল্প পন্থা হিসেবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থ নইতিক কাঠামোর রাষ্ট্র গুল যেমন বল্কান, দঃ আমেরিকা কিংবা পুঃ ইউরোপের দেশ ( ইউগোস্লাভিয়া,রুমানিয়া,হাঙ্গেরি) থেকে কাচামাল আমদানির প্রেক্ষিতে সেসব দেশ গুলোতে দেশীয় উতপাদিত পন্যের রপ্তানি বাড়ান। নাজি ওর্থ মন্ত্রি হেলমার শাচেট এর নব্য এই পরিকল্পনা ই মুলত দেশের অর্থ ব্যবস্থা কে চালিয়ে নিয়ে যায়। প্রসংত বলতে হয় great depression এর যুগে প্রাথমিক ভাবে একদিকে জার্মানির ক্রমাগত বেকারত্ত হ্রাস পেলেও বৈদেশিক আমদানি সহ বাজেট ঘাটতি বৃদ্ধি পায়। কঠোর হস্তে মুল্য ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করার মাধমে মুদ্রা স্ফিতি হ্রাস পেলেও আসন্ন যুদ্ধের প্রয়োজনে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পায়।
মোদ্দাকথা নাজিরা অর্থনীতির ক্ষেত্রে সুনির্দিস্ট কোনো লক্ষ মাত্রা স্থাপনে ব্যর্থ হয়। পরবর্তিতে নাজি পার্টীর ২৫দফা পরিকল্পনা ও বেশ ঘলাটে যেখানে কেবল ভার্সেই চুক্তি র্ বিলোপ , গ্রেট আরিয়ান(aryan) জাতির অর্থনইতিক বিকাশের বাধা ইহুদি দের উতখাতের দাবি ,আর বেকারত্ব বিলোপ,বৃহত প্রতিষ্ঠান গুলর অর্জিত মুনাফার বন্টন,ভুমি ব্যবস্থাকে পুনঃ বিন্যাস ব্যতিত কোনো সুনিদ্দিষ্ট অর্থনইতিক নীতিমালা ছিল না। দেখাযায় যে ১৯৩০ সালে বিশ্ব জুড়ে যে অর্থনইতিক মন্দা (the great depression)এর হাওয়া বইছিল তার মাঝে নাজি পার্টি ছিলো জনগনের আশার আলো।
আরো গভীর ভাবে দেখলে বোঝা যায় যে, হিটলার মুলত অর্থনইতিক বিকাশকে জাতি স্বত্তার বিকাশের এক মাত্র সহায়ক বলে মনে করতেন না । ১৯২২ সালে দেয়া এক ভাষনে তিনি বলেন.........।
"world history teaches us that no people has become great through its economy but that a people can very well perish thereby"
হিটলার তার Mein kampf বা আমার সংগ্রাম বইতে মুলত কোন সঠিক নির্দেশনা প্রদান করেন নি। শুধুমাত্র কয়েক টি স্থানে '' so called programme of movement " বলে আওড়ে জান। বিভিন্ন ভাষনে অর্থনইতিক পরিকল্পহীনতাকেই বরং তিনি বিশিষ্ঠতা বলেও উল্লেখ করেন।
"The basic feature of our economic theory is that we have no theory at all.''
সত্যি ই এক সৃষ্টি ছাড়া ব্যবস্থা ই বটে। পর্বরতিতে বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠা এবং তথাকথিত থার্ড রাইখ এর পতন সেই সময়কার এই ব্যবস্থাকে মুল্যায়ন করার কোন ফুস্রত রাখে নি।
তবে একথা আকপটে স্বীকার করা যায় যে , autarky বা স্বনিরভরতা র এই খাপছারা রূপ আর যুদ্ধের উন্মাদনাই ততকালিন নাজি জার্মান তথা থার্ড রাইখের(third reich) পতন তরান্বিত করে।
আগামীতে আরো লেখার ইচ্ছা আছে...। আজকের মতন এটুকুই। ।
তথ্যসূত্রঃ
উইকিপিডিয়া
চলবে............ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।