আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেওক্রাডং, বগালেকের পথে ৩২ ভ্রমনকারী নিয়ে "ডট ডি" এর গল্প

‘ডট ডি’ প্রথমবারের মত বারের বান্দারবানে বগা লেক এবং কেওক্রাডং এ আয়োজন করে এক্সট্রিম একটি ট্যুর। যেখানে উল্লেখ করার মত একটি ব্যাপার, এইবার এই ভ্রমণ এ অংশ নেয় ৩২ জন। ট্যুরটা যেমন ছিল নামটাও ছিল তেমন “Dot D Extreme @ Boga Lake & Keokradong”. আমরা যাত্রা শুরু করি ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১১ রাত ১১:০০ টায়। এবং রাস্তার খারাপ অবস্থা আর প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে আমাদের সকালে পৌছাতে ২ ঘন্টা দেরি হয়। বান্দারবানে পৌছানোর পর আমরা রুমার উদ্দেশ্যে রওনা হই।

প্রথমে চাঁন্দের গাড়িতে করে আমরা রওনা দেই কাঞ্চনঝিরির পথে। কিন্তু শুরুতেই প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে বৃষ্টি। প্রথমে ফোঁটা ফোঁটা, ক্রমাগত জোরালো এবং তারপর তুমুল। এটাই হয়ত বিধাতার দান করার রীতি। অপরূপ সৌন্দর্য ধারন করে প্রকৃতি।

সবুজ যে কি হতে পারে তা টের পেতে থাকি। অবশ্য এর প্রাপ্তির জন্য সারাটা রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে। এই স্বাদ পাই আমি, হুমায়ূন রশিদ রতন, এ বি এম আনসারউল্লাহ এবং অন্য গাড়িতে জয়নুল আবেদিন জয়, সাফায়াত হোসেন এবং কমল ইফতেখার. ২০১০ সালে যে কয়েকবার বান্দারবানে যতবার এসেছিলাম প্রতিবারই শৈলপ্রপাতকে বলতাম মরা প্রপাত। কারণ কোনবারই তেমন পানি ছিল না। আর এবার যা দেখলাম তা ধারণা পাল্টাতে আর মন ভরার জন্য যথেষ্ট।

শৈলপ্রপাতে ছিল পানির বন্যা। void(1); আমরা কখনও মেঘের ভিতর দিয়ে গমন করি নাই। এইবার প্রথম তা ঘটল। অতি বৃষ্টির ফলে মেঘগুলো খুব কাছে চলে আসলো। কিন্তু কখনও আশা করিনাই রাস্তায় তা পাবো।

চাঁন্দের গাড়িতে যেতে যেতে আকস্মিক ভাবে আমরা খেয়াল করলাম অতি বৃষ্টির জন্য পাহাড় থেকে প্রচুর পানি পরছে। যা দেখে নিমিষেই বলা যায় এতা একটা ঝরনা। তার একটু সামনেই দেখলাম রাস্তার একজায়গায় বাঁকে বেশ কিছু মেঘ জমে রয়েছে। আমরা সবাই গাড়ি থেকে নামলাম, আমি সবার অগোচরে মেঘ ধরার চেষ্টাও করলাম। আর আবিস্কার করলাম মেঘ ধরা যায়না।

আমরা কাঞ্চনঝিরি পৌছালাম, ওইখানে কিছুক্ষন বৃষ্টির জন্য আটকে থেকে আর হালকা খাওয়া শেষ করে ট্রলারে উঠলাম। রুমায় পৌছালাম আনুমানিক ৩ টা নাগাদ। দুপুরের খাওয়ার পর যখন সবাই খুব ক্লান্ত তখন আমরা আমাদের ১৬ তারিখের গন্তব্যে পৌছালাম। লাইমি হিল সাইড রিসোর্ট। রাতে আমাদের বিশেষ আকর্ষন ছিল the testy Bar-B-Q party. void(1); সকালে যখন ঘুম ভাঙে তখন ৬:৩৭।

কানপেতে শুনলাম বৃষ্টি হাচ্ছে। আবার ঘুমালাম। এরপর যখন উঠলাম ৭:৫০। বৃষ্টি। ৯:৩০ টা, বৃষ্টি।

আস্তে আস্তে বিছানা ছাড়লাম। ফ্রেস হলাম। সবাই উঠল, বৃষ্টিও কমলো। তখনও কি করবো বুঝতে না পেরে আমি, হুমায়ূন রশিদ রতন আর নাজিম উদ্দিন খান প্রিন্স চিন্তায় পরলাম। নাজিম উদ্দিন খান প্রিন্স এর বলা একটা কথা মনে পরে “ট্যুর সংক্ষিপ্ত করা যাবেনা”।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গাড়ি চলাচল বন্ধ। এখন একটাই উপায় পায়ে হেটে যাওয়া। কিন্তু কিভাবে সম্ভব! দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার। তখন আর কোন উপায় না দেখে ট্যুর সংক্ষিপ্ত করতে হবে দেখে ঠিক করলাম সবাই যেটাতে রাজি হবে সেটাই করা হবে। ট্যুর এর Turing point মনে হয় এটাই ছিল।

সবার সাথে কথা বললাম এবং সবাই হেটে যেতেই রাজি হল। শুরু হল যাত্রা। বিধাতা যখন মুখ ফিরে তাকায় তখন মনে হয় হঠাৎ করেই তাকায়। আমরা যখন ৫-৬ কিলোমিটার হেটে পার করলাম তখন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নাজিম উদ্দিন খান প্রিন্স এর মোবাইলে ফোন আসলো। মুখে হাসি।

গাড়ি পাওয়া গেছে। গাড়ি যাবে। কিন্তু যতটুকু যাবে সেখান থেকেও আরও ৫ কিলোমিটার হেটে বগা লেকে পৌছাতে হবে। তাও ভালো ৭-৮ কিলোমিটারতো হাটা লাগবে না। রীতিমত তাই করা হল, এবং বিকাল নাগাদ আমরা বগা লেক পৌছালাম।

যখন সবাই ক্লান্ত, তখন বগা লেক এর অনিন্দ্য রূপ আমাদের ক্লান্তি ধুয়ে দিল। কিন্তু একটা কালো ছায়া থেকেই গেল। কেওক্রাডং ওঠা হলোনা। সময় শেষ। void(1); রাতে সবার খাওয়া শেষ করে, আমরা ব্যাবস্থাপণা কমিটি আবারও চিন্তায়।

এমন সময় হুমায়ূন রশিদ রতন এর একটা বেশ ভালো মত ছিলো ওই মুহুর্তে, “এতদূর যখন আসছি, কেওক্রাডংও যাব”। শেষমেষ ঠিক যারা যারা যাব সকাল ৫ টায় পদ্মা ট্যাংক এর সামনে আসবো, যে কয় জন আসবো তারাই যাব। তারপর সবার মতামত এর জন্য রাতে সবাই আলোচনায় বসলাম। মজায় ভরপুর আলোচনায় একই সিদ্ধান্ত হল, সকাল ৫ টায় পদ্মা ট্যাংক এর সামনে আসবো, যে কয় জন আসবো তারাই যাব। আল্লাহতাআলার অশেষ রহমতে আমরা সকাল ৫ টায় ২১ জন রওনা হলাম এবং ১৮ জন কেওক্রাডং এর চূড়ায় উঠতে সক্ষম হই।

void(1); কিন্তু এরপরের ব্যাপারগুলো ছিল অভাবনীয়। আমরা সবাই কেওক্রাডং থেকে নামতে শুরু করি সকাল ৮:৩০ টা – ৯টা নাগাদ। রাত ৮ টায় ঢাকার গাড়ি ধরতে হবে। আমরা ১১:০০ টার মধ্যে বগালেক ফিরে আসি। খুব দ্রুত আমরা ফ্রেশ হই এবং খাওয়া শেষ করি।

তারপর আমরা আবার হাটা শুরু করি। বগা থেকে নেমে আর কোথাও না থেমে আমরা হাটতে থাকি এবং ৫ কিলোমিটার হাটার পর আমরা চান্দের গাড়ির কাছে পৌছাই। চান্দের গাড়ির সাথে আমরা যতদুর সম্ভব রাস্তা অতিক্রম করি। গাড়ি থেকে নেমে আমাদের আরও ৪ কিলোমিটার হাটতে হয় রুমা পৌছাতে। আমরা যখন রুমায় পৌছাই তখন বিকাল হয়ে গেছে।

সবাই তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে আমরা ট্রলারে উঠি। ট্রলারে করে কাঞ্চনঝিরি পৌছাতে আমরা অপরূপ সুন্দর বিকালের দেখা পাই। void(1); আমাদের আগামী মাসের অভিযান সুন্দরবন ও কুয়াকাটা। বিস্তারিত দেখুনঃ Click This Link আমিঃ মোঃ শাহরিয়ার খান শিহাব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.