সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল
সুপ্রিয় ব্লগার এবং পাঠকবৃন্দ
দেশ আজ এমন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাড়িয়েছে, যা থেকে উত্তরণে আমাদের সমবেত প্রতিবাদের বিকল্প নেই। স্বাধীন বাংলাদেশে ২১শে এপ্রিল ১৯৭৫ সাল একটি কৃষ্ণ অধ্যায়ের নাম। এই দিনের বাংলাদেশের মরণ ফাদ নামে পরিচিত ফারাক্কা বাধ চালু করে দেয়া হয় । যদিও বলা হয়েছিল পরিক্ষামুলকভাবে মাত্র ৪০ দিনের জন্য এই বাধ চালু করা হয়েছে।
আজ ৩৬ বছর ধরে সেই মরণফাদ আমাদের গলায় আটকে আছে।
গোদের উপর বিষফোড়ার মত অধুনা টিপাইমুখ বাধ নামের আরেকটি মরণ ফাদের চক্রে জড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে। আন্তর্জাতিক এবং দ্বিপাক্ষিক কোন চুক্তি কিংবা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই এই বাধ গুলির মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতাকে অসম্মান করা হয়েছে।
ফারাক্কা চালুর দিন এবং বছরটির সাথে টিপাইমুখ বাধ তৈরির সময়ের বিস্তর ফারাক রয়েছে। সেদিন যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশের মানুষ দুর্ভিক্ষের মোকাবেলা করছিল। তাই দিনান্তে এক মুঠো অন্ন জোগাড়ের সংগ্রামে তারা অন্য দিকে তাকানোর সময় পায়নি।
আজ বাস্তবতা তেমন নেই। গুটি গুটি করে পা ফেলে হলেও অন্তত বাংলাদেশের মানুষ খেয়ে পড়ে ভালো আছে। শিক্ষায় দীক্ষায় অর্থনীতিতে উন্নয়নের ফলে দেশে বিশাল জনগোষ্ঠি দেশ নিয়ে, সমাজ নিয়ে, ভবিষ্যত নিয়ে ভাববার এবং সেটি প্রকাশ করার পুর্ণ সুযোগ পাচ্ছে। তার সবচেয়ে বড় প্রমান বাংলা ব্লগগুলিতে অসংখ্য শিক্ষিত মানুষের পদচারণা।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে টিপাইমুখ নিয়ে এই জাতির এই ক্রান্তিকালে আমাদের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে চরম অনৈক্য বিদ্যমান।
যে যার পাতে ঝোল টেনে নেয়ায় ব্যাস্ত তারা।
এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের ভরসার কেন্দ্রস্থল হতে পারে দেশের সচেতন শিক্ষিত মানুষ। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যপ্রাচ্য অন্তর্জাল ভিত্তিক যে জাগরণ তৈরি হয়েছে, সেটি উদাহারণ হিসাবে ব্যাবহার করে আমরা টিপাইমুখের বিরুদ্ধে দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচেতনাবৃদ্ধি এবং প্রতিবাদ করতে পারি।
ফারাক্কার সেই দিনে আমাদের প্রতিবাদ করার মত অবস্থা ছিল না। কিন্তু এখন তো আছে? সেদিনের আমাদের নিরুপায় নিরবতা দেশের উত্তরাঞ্চল এবং প্রধান একটি নদীকে মুমুর্ষ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
আর টিপাইমুখ বাধের মাধ্যমে আরেকটি প্রধান নদীকে মৃতপ্রায় করে কোটি মানুষের রুটি রুজিতে শুধু আঘাত নয়, বরং অর্থনীতি এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
একজন শিক্ষিত এবং সচেতন দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি হয়ে আপনি কি এখনো চুপ করে বসে থাকবেন? নাকি আপনার বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতিবাদ করবেন? সেটা বিচারে ভার আপনার উপরেই অর্পন করা হলো ।
আমরা যদি নিজেদের দেশপ্রেমিক বলে বিশ্বাস করি, দাবি করি, তাহলে সেটা প্রমানের এখনই মোক্ষম সময়। এবং সেটা দলীয় আদর্শের বাইরে গিয়েই করা শ্রেয়। যাতে আপনার দেশপ্রেমপ্রসুত এই প্রতিবাদকে কেউ দলীয় স্ট্যান্টবাজি বলে অসম্মান না করতে পারে।
ধন্যবাদ।
অটঃ টিপাইমুখ বাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদিদের বিরুদ্ধে অনেক বাধা বিপত্তি আসবে। বাধা তারাই দেবে যারা ৭১ এ স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ করেছিল তাদেরই দোসর এবং সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা যতই শক্তিশালি হোক না কেন, দেশপ্রেমিকদের একতার সামনে ওরা তুচ্ছ এবং নগণ্য। তাই কোন দ্বিধা নয় সংকোচ নয় এগিয়ে এতে হবে সামনের দিকে।
আপনাদের সুবিধার্থে টিপাইমুখ বাধের বিরুদ্ধে সুলিখিত কিছু পোস্টের লিংক দেয়া হলো।
টিপাইমুখঃ ভারতের হাইড্রোপলিটিক্সের রেসের ঘোড়া.... নিজের ল্যাজে পা পড়ার পর ভারতও এখন প্রতিবাদী!!! মঞ্জুরুল হক ভাইয়ের লেখা
সহব্লগার কিরিটী রায়ের সংগৃহিত টিপাইমুখের বিরুদ্ধে কিছু সুপাঠ্য লেখার সংকলন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।