বিশিষ্ট ব্রিটিশ আইনজীবী, যুদ্ধাপরাধবিষয়ক আইন বিশেষজ্ঞ টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) এমনভাবে কাজ করা উচিত, যাতে মানুষের মাঝে এমন ধারণার সৃষ্টি না হয় যে, তারা রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে কিছু লোককে বিচারের মুখোমুখি করেছেন। ইতোমধ্যে একটি ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, সরকার শুধু বিরোধী দলকে তাদের লক্ষ্যে পরিণত করেছে। ফলে কেউ যদি এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার মনে করেন, তাহলে তাদের দোষ দেয়া যায় না। আমরা যে বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে চেষ্টা করেছি তা হলো, সরকার যদি বিচারের মান আন্তর্জাতিক করতে চায়, যা সরকারের মন্ত্রীরা বারবার বলছেন, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক দূত স্টিফেন রাপ, ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সেন্টার ফর ট্রানজিশনাল জাস্টিস ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরাম যেসব সুপারিশ করেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
টবি বলেন, কিন্তু তারা তো এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে নিজেরাই বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন যে, পুরো প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সম্প্রতি আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন যে, এই বিচার হবে সমগ্র বিশ্বের কাছে একটি মডেল এবং আইসিটি হবে বিশ্বের সেরা ট্রাইব্যুনাল। যদি তা করতে হয়, তাহলে আইসিটির আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করুন, বিদেশি আইনজীবীদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার অনুমতি দিন, বিচারকাজ মনিটর করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আসতে দিন, সংবিধানের প্রথম ও পঞ্চদশ সংশোধনী সংশোধন করে অভিযুক্তদের সাংবিধানিক অধিকার পুনর্বহাল করুন, আইসিটির বিচার প্রক্রিয়ায় অপরাধ আইন ও অপরাধ সাক্ষ্য আইন যুক্ত করে প্রমাণ করুন যে, আইসিটি আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখছে।
টবি ক্যাডম্যান পেশাগত দায়িত্ব পালনে যুক্তরাষ্ট্র সফরে এলে গত ১৬ নভেম্বর নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে তার হোটেল স্যুটে আটলান্টিক নিউজ সার্ভিসের (এএনএস) সাথে এক বিশেষ সাক্ষাতকারে একথা বলেন।
উল্লেখ্য, টবি ক্যাডম্যান লন্ডনের চেম্বার্স অ্যাট ৯ বেডফোর্ড রো-এর একজন আইনজীবী। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর ৫ শীর্ষ নেতার পক্ষে নিয়োগকৃত তিন ব্রিটিশ আইনজীবীর অন্যতম টবি ক্যাডম্যান।
তারা সরাসরি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্তদের পক্ষে হাজির হওয়ার অনুমতি চাইলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল তা খারিজ করে দেয়ায় তারা অভিযুক্তদের বাংলাদেশী আইনজীবীদের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত আগস্ট ২০১১-এর প্রথম দিকে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার অনুমতি না দিয়ে ফিরতি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগে বাধ্য করে।
টবি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় মুসলিম গণহত্যার বিচারের জন্য গঠিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর হিসেবে দীর্ঘ চার বছর কাজ করেন।
সূত্র: এএনএস, নিউইয়র্ক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।