আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাশাপাশি- ৫

অকর্মা, ভীতু, কাপুরুষ ১০ আজ বাবুর জন্মদিন বাবু তার চারজন বন্ধু ও নিপা , রুপাকে দাওয়াত করেছে। নিতান্ত ঘরোয়া পরিবেশে সামান্য ছোট খাট আয়োজন রাশেল, ইকবাল, আখতার, মিতুল, চারজনেই এসেগেছে কিনতু নিপা, রুপার এখনওকোন পাত্তা নেই। তাদের অনুপস্থিতির জন্যবাবু এখনও কেক কাটতে পারছেনা। এই শালা মেয়ে মানুষেরা যেখানে থাকবে সেখানে গড়বড়, বলল মিতুল। বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে ইকবাল।

সন্ধ্যা হতে যাচ্ছে এখনও তাদের পাত্তা নেই। বাবুর ঘরটি সামান্য সাজাও হয়েছে। তার ঘরে আসবাবপত্র তেমন কিছুই নেই। একটা সিঙ্গেল খাট , একটা পড়ার টেবিল, চেয়ার একটা সুন্দর ওয়াল শোকেস যেখানে পাচ্ছে হরেক রকমের সৈাখিন দ্রব্য। একটা বইয়ের সেলফ ব্যাস এই দিয়েই সাজানো বাবুর ঘর।

বাজার থেকে কেনা জরি ও রঙিন কাগজ দিয়ে ঘরের বিভিন্ন জায়গাই ফুল করা হয়েছে। সাদা আর্ট পেপারের উপর সুন্দর করে লেখা হয়েছে বাবুর জন্মদিন দরজার চৌকাঠে জরি দিয়ে লেখা স্বাগতম। অবশেষে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে নিপা রুপা ছুটতে ছুটতে হাজির। কিরে নতুন বিয়েতো করিসনি এত দেরিযে। যা বাজে বকিসনা কামাল।

বাবু কই ? এইযে আসছি। বাবু কেক হাতে করে প্রবেশ করল। কেক রেখে সে নিপার কান ধরতে এগিয়ে যায়। এত দেরি কেন। নিপা ধাক্কা দিয়ে বাবুকে ছিানায় ফেলে লাফিযে উঠে পড়ে তার উপর ।

কি ব্যাপার নিপা পাগল হয়ে গেলি নাকি। নিপা , রুপা চিৎকার জুড়ে দেয়। কিরে বাবু আজ আবহাওয়া অন্যরকম মনে হচ্ছে। বলে কামাল। কিছু বুজছিনা।

রূপা চিৎকার করে বলে বাবুর চিঠি এসেছে। কি এসেছে ? তোকে চিঠি লিখেছে নীলু, এই যে। বাবু যেন অন্য ভবনে চলে যায়, ছিনিয়ে নেয় নিপার কাছ থেকে নীল রংয়ের খামটি। খামের উপর লিখা রয়েছে শুধুই তোমার জন্য। সুন্দর করে খামটি খুলে বাবু।

বাবুকে ঘিরে দাড়িয়েছে তার বন্ধুরা। নিপা রূপা উৎসুক চোখ তাকিয়ে আছে তার হতের দিকে। খাম খুললে খুব সুন্দর একটা বিদেশি প্যাডের পাতা বেড় হয়ে আসে। বাবু খুব সাবধানে কাগজটির ভাজ খুলে। তেমন কিছুই লেখা নাই চিঠিটিতে শুধু মধ্যে খানে রক্ত দিয়ে সুন্দর করে লেখা ‘ভালবাসি’।

প্রায় পাঁচমিনিট পেরিয়ে গেছে বাবুর যেন জ্ঞান নেই। সে এক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছে লেখাটির দিয়ে। অবশেষে নীরাবতা ভাধল মিতুল, বাবু তোর জ্ঞান আছে তো ? তার কথায় কোন প্রবার জবাব না দিয়ে বাবু অতি যত্নে টিঠিটিকে খামে ঢুকায়। তারপর একেএকে সবার মুখের দিকে তকাায়। নিপা রূলার দিকে চোখ পড়তেই জড়িয়ে ধরে।

কিরে বাবু লাগার হয়ে গেলি নাকি ? না পাগল হয়নি, সত্যি নিপা রূপা তোরা আমার জন্যে যা করলি তোদের সাথে পরিচয় হয়েছিল বলেই এটি আজ আমার হাতে পৌছিয়েছে। এটি আমার জীবনের পরম পাওয়া আরে ধুর নিপা রূপা আবার কি করেছে? করবেতো এখন, মিয়া বিবি রাজি, উসকো জোড়ানা হামারি বাজি। বা বা ক্যা শের হ্যায়রে নিপা, একদিন তু জরুর বাড়ি আদমি বানেগি। ইকবালের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকায় নিপা, এই শালা আমাকে তোর আদমি মনে হয় ? ও সরি একটু ভুল হয়েছে একদিন তু জরুর বাড়ি আদরত বানেগি এই ইকবাল আদরত আবার কিরে ? বলে বাবু বুঝলিনা ? আধা আদমি আর আধা আওরত..... দেখাচ্ছি তোর আধা আধা, নিপা ইকবালের হাত খাঁমচে ধরে এই তোরা থামতো, এগিয়ে আসে কামাল, মামলা হামলা পরে হবে এখন বাবুর কথা একটু ভাব। কি রকম? বলে আক্তার এই যে, এখন বাবুও সামান্য রক্ত ঝরবে।

রক্ত ঝরাবো কেন? নীলু তোকে রক্ত দিয়ে লিখেছে আর তুই লাল বল পয়েন্ট দিয়ে লিখবি নাকি ? ও তাই বল। আসলে এটা একটা চিন্তার ব্যাপার। বাবু চিঠিটা বের করতো। বাবু পুনরায় চিঠিটা বের করে। সাথে সাথে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো চিঠিটার উপর।

সবাই ব্যস্ত হয়ে র্‌ক্তটা কিসের তা চেনার জন্য। কেউ বলল এটি নীলূর রক্ত, আবার কেউ বলল এটা মুরগী অথবা মশার রক্ত। অবশেষে কামাল প্রস্তাব করে চল এটা নিয়ে আমরা ব্লাড টেষ্ট এক্সপার্টের কাছে যায়। কামালের এই প্রস্তাব সবাই মেনে নেয়। ঠিক হল আগামীকাল এটা পরীক্ষা করতে নিয়ে যাওয়া হবে।

আরে চিঠি চিঠি করতে করতে কি সবাই খাবার কথা ভুলে গেছিস। তবে শুরু করা যাক। ইকবাল মোমবাতি জ্বালিয়ে দিল। বাবু ফুঁ দিয়ে সেটি নিভিয়ে কেক কাটল। বাবু কেকের একটি অংশ কেটে নিপি রুপাকে খায়য়ে দিল।

এবার খাবার পালা। বাবুর মা তার নানা বাড়ি গেছে বলে তাকেই সবকিছুই করতে হচ্ছে। পে­টে খাবারও বাবু সাজাল। তবে তাকে সাহায্য করল তার বন্ধুরা। খাবার পর রাত হয়ে যাচ্ছে বলে সবাই বিদায় নিল।

বাবু বাড়িতে থাকলেও তার মনটি চলে গেল নীলুর কাছে। ১১ নীলু শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছিল বাবুকে ভালবাসার কথা জানিয়ে সে কি ভুল করেছে। না না ভুল করব কেন। কেমন জানি একটা অস্থিরতা তাকে গ্রাস করেছে। একবার শুচ্ছে, একবার বসছে, কখনও বা হাটছে।

কখনও বা তার সিডি পে­য়ারে সাউন্ড বাড়া কমা করছে, এই অস্থিরতা আস্তে আস্তে চাঞ্চলতায় রুপ নিচ্ছে। এই সবকিছু করছে যেন তার ইচ্ছা শক্তির বিরদ্ধে। নীলুর মা সুফিয়া ইয়াসমিন ঘরে এলেন। কিরে জ্বর বাধিয়েছিস নাকি ? এ অসময়ে শুয়ে আছিস যে। কপালে হাত দিয়ে দেখলেন তিনি।

না মা জ্বর টর না। তাহলে শুয়ে আছিস কেন ? এমনি মা ভালো লাগছে না। সে সুন্দরপুর থেকে এসেই তোকে কেমন যেন অস্থির দেখাচ্ছে, কি ব্যাপার বলতো। কই কিছু না, তুমি খামোকা চিন্তা করছ মা। নীলুর মা ঘর থেকে বের হয়ে ইমতিয়াজ সাহেবের কাছে গেলেন।

নীলু কেমন বদলে যাচ্ছে দেখেছো। কই নাতো। তুমিও থাক কেবল টাকা নিয়ে, তুমি কি বুঝবে। মেয়েটির মনে বোধহয় কিছু হয়েছে। আমি ডাঃ এরফানকে ফোন করে দিচ্ছি, উনি এসে দেখে যাবেন।

তা নাহয় হবে, কিন্তু তাকে দেখেতো মনে হচ্ছে কোন এক অস্থিরতায় আছে সে। সেটা ডাক্তার দেখবে। অসুখ শরীরে না মনে সেটা যদি তুমি বুঝবে তাহলে তুমিতো ডাক্তার হয়ে যেতে। ঠিক আছে তুমি ডাক্তারকে এখনই আসতে বল। ডাক্তার সাহেব নীলুকে নানাভাবে পরীক্ষা করলেন।

কিন্তু কিছুই পেলেন না। কই মেয়েতো সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু কেমন জানি সবসময় আনমোনা হয়ে থাকছে যে। তাতো থাকবেই, এ বয়সে একটু আধটু এরকম হয়ই। ডাক্তার সাহেব পাঁচশত টাকার দুটি চকচকে নোট নিয়ে বিদায় নিলেন।

ইমতিয়াজ সাহেব ডাক্তারকে টাকা দিতে কখন কার্পণ্য বোধ করেন না। তাই তাকে ডাকা মাত্রই শতকাজ ফেলে চলে আসেন। ১২ নীলুর চিঠির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সকালে বাবু, কামাল, ইকবাল, আখতার ও শিমু পাঁচজনে গিয়েছিল অন্যন্য নার্সিং হোমে। তারা সোজা গিয়ে দেখা করেছিল প্যাথলজী বিভাগের প্রধান ডাক্তার আকবরের সাথে।

প্রায় ৩০ বছর বয়সি আকবর প্রচন্ড রোসিক লোক। চিঠিটি প্রথমে তিনি হাতে নিয়েই হেসে ফেলেছিলেন। তারপর মাইক্রোসকোপের সামনে বিভন্নি রাসায়নিক দ্রব্য চিঠিটিতে মিশিয়ে স্লাাইডে ঢুকালেন । কিক্কুক্ষণ পর মুচকি হেসে বললেন ‘পজেটিভ’ এটি খাঁটি মানুষের রক্ত দিয়ে লেখা। রক্তের গ্রুফ এ নেগেটিভ।

ধন্যবাদ স্যার । বাবু পকেট থেকে চক চকে একটি পঞ্চাশ টাকার নোট এগিয়ে দিল ডাক্তার সাহেবের দিকে। আরে করছ কি তুমি ? জীবনের প্রথম এমন একটা কাজের মুখোমুখি হলাম এর জন্য টাকা পয়শা নেবনা তবে ছোট ভাই হিসেবে একটা উপদেশ দেব, এমন শাহস যে মেয়ে দেখিয়েছে তার সাথে প্রতারনা করনা ভাই এবং দোয়া করি তুমি সার্থক হও। ডান হাতটি তিনি সামনে বাড়িয়ে দিলেন। একে একে সবাই হাত মেলাল তার সাথে।

ক্লিনিক থেকে তারা বেরিয়ে তারা একটি রেষ্টুরেন্টে ঢুকল। বাবু ক্লিনিক থেকে বের হবার সময় খাবার কথা ঘোষনা করেছিল। রেষ্টুরেন্টে ঢুকে দুইটি করে সিঙ্গাড়া ও চায়ের অর্ডার দিল। এবার বাবু মিয়া রক্ততো তোমাকে ঝরাতেই হচ্ছে। তাইতোরে কামাল।

কি করা যায় বলতো? এটা আমার বা আমাদের দ্বারা সমাধান দেওয়া সম্ভব না আমাদের বিখ্যাত কবি সাহিত্যক নিপা এব্যাপারে হয়তোবা কিছু বলতে পারবে। ঠিক ,সবাই চেচিয়ে উঠল। তাহলে চল এখন নিপার কাছে যাওয়া যাক। কি বলিশ? বলল বাবু। যাবতো আবশ্যই তবে আগে কিছু খেয়ে নিই।

হোটেল সিঙ্গাড়া খেতে গিয়ে বাবু মুখ পুড়িয়ে ফেলল। শালা পুরো পুরো শরু না হতেই পুড়াপুড়ি শুরু হয়ে গেছে ? আরে আক্তার তুই দেখি কিছুই জানিসনা । এটাই তো মুখ পুড়ার পুরোপুরির উপযুক্ত সময়। এখন চলছে এক নম্বর বিপদ সংকেত। এরপর সংকেত যত বাড়বে পোড়া কাটাও ততো বাড়বে।

তাদের টিপ্পনিতে নাক না গলিয়ে বাবু অতি সাবধানে চা খাওয়া শরু করল। এবং কোন প্রকার দুর্ঘটনা না ঘটিয়ে চা শেষ করল। হোটেল সুরমা থেকে বের হয়ে তারা নিপাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল। হোটেল থেকে নিপাদের বাড়ি খুব একটা দুরেনা। পায়ে হেটে যাওয়া যায়।

নিপা রুপাদের বাড়ি পাশাপাশি। তারা দুজন চাচাতো বোন। বাবু, কামাল, আখতার,ইকবাল ও মিতুল এদের সবার বাড়ি একই জায়গায়। আর বাবুদের বাড়ি থেকে নিপা রুপাদের বাড়ি মাত্র দুই কিলোমিটার। কিন্তু সবার সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল নিলুদের বাড়ি শহর ছেড়ে বেশ কিছুদুরে।

সে শহরের গার্ল স্কুলে পড়ার সুবাদে নিপার রুপার সাথে বন্ধুত্ব। ইসলামপুরে নিপাদের বাড়িটি বেশ সুন্দর। আধুনিক প্যাটানের লাল রঙের দুই তলা বিশিষ্ট বাড়ি। তার পাসেই রুপাদের বাড়ি। তাদের বাড়িটিও বেশ সুন্দর।

কিন্তু একতলা। তাদের পরিবারের সদস্য কম তাই দোতলার কোন প্রয়োজনও নেই। তারা দুই ভাই বোন এবং বাবা মা এই নিয়েই তাদের পরিবার। নিপার বড় দু ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে। তাদের ছেলে মেয়ে এবং বাবা মা এক সাথে থাকেন।

কলিংবেলে হাত দিতেই মিতুল হাত সরিয়ে নিল। কিজ ব্যাপার? পুশ কর। ভয় লাগছেরে আখতার। ভয় কিসের ভূত না প্রেতর ? নারে ভয় আমার নিজের জন্য না ভয় হচ্ছে বাবুর জন্য। আমার জন্য ? হ্যা দোস্ত ।

কেন? এ ধর নিপা বলেই ফেলল তোকে রক্ত দিয়ে লিখতে হবে। তখন? মিতুলের রসিকতাই সবাই হেসে উঠল। বাবু গম্ভির ভাবে কলিংবেলের সুইচে টিপ দিল। প্রায় তিনবার বাজার পরে দরজা খুললেন নিপার মা। স­ামালেকুম খালাম্মা।

সবার পক্ষ থেকে সালাম দেয় বাবু। আরে তোমরা এতদিন পর তা কেমন আছ ? ভাল। বাবু ও তার বন্ধুরা কিভাবে দুষ্টু ছেলেদের হাতে মেয়ের অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছিল তা তিনি তার মেয়ের মুখ থেকে শুনেছিলেন। এবং শিহরিত হয়েছিলেন। তিনি বাবু ও তার বন্ধুদের বড়িতে আসতে বলেছিলেন।

সে থেকেই বাবুরা এ বাড়িতে আসা যাওয়া করে। তোমরা বস আমি নিপাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তিনি ভিতরে চলে গেলেন। কিছুক্ষন পরে ভেজা চুলে নিপা এল। ভেজা চুলে তাকে এত সুন্দর লাগছিল তা বলারনা।

বাবুরা সবই এক সাথে মিতুলের দিকে তাকাল। কারণ সে নিপা বলতে পাগল। নিপা মিতুলকে একদম পাত্তা দেইনা বললেই চলে। এতে অবশ্য কোন দুঃখ নেই। কারণ তার মতে ভাল বাসার সঙ্গা একটু অন্য রকম।

সে নিপাকে ভালবাসে সারা জীবন ভালবেসেও যাবে। তার যদি অন্য যায়গায় বিয়ে হয়ে যায় তবুও সে তাকে ভালবাসবে। ভালবাসলেই যে বিয়ে করতে হবেএটা সে বিশ্বাস করেনা। কিরে কি ব্যাপার? ব্যাপার ভাল নারে। চিঠির রিপোর্ট পেলাম।

কি বলে রিপোর্টে। আসল রক্ত। সাবাস নিলু। তুই নিজেকে আনেক বড় প্রমান করলি। প্রমাণ নাহয় পরে হবে।

এবকার বল আমি কি করব। কি আবার তুইও চিঠি দে। কিসের রক্ত না কলম? রক্ত দিয়ে ভয় পেলে কলম দিয়ে লিখ। আমরা রক্ত বলেই নিলুর কাছে চালিয়ে নিব। ছি নিপা তুই আমাকে এত কাপুরুষ ভাবিস ।

বলেই সে হাতের সুচল আঙটিটি খুলে মধ্যের আঙ্গুলে আঘাত করল। সাথেসাথে আঙ্গুল বেয়ে রক্ত বেরিয়ে পড়ল। একি করলি তুই, বলেই নিপাঘরের দিকে ছুটল। এবং তুলা এবং ডেটল নিয়ে ফিরল। বাবুর বন্ধুরাও নির্বাক।

নিপা অতি দক্ষতার সঙ্গে বাবুর হাতে কাপড় জড়িয়ে দিতে লাগল। তোর মাথার তার টার কি ঠিক আছে ? নারে কামাল, কেউ অপমানের চেষ্টা করলে মাথা ঠিক থাকে না। আচ্ছা হাত কতবার ফুটো করবি তুই ? একবার যখন ফুটো করে ফেলেছিস তখন চিঠিটা এখানেই লিখে ফেললেই হয়। ঠিক বলেছিস আখতার। যা নিপা কাগজ আন, বলে বাবু।

না বাবু তোকে রক্ত দিয়ে লিখতে হবে না। কেন আমি কি নীলুকে ভালবাসি না। ভালবাসলেই যে রক্ত দিয়ে লিকতে হয় এটা তোকে কে বলেছে ? কেউ বলেনি তবে আমি নীলুর কাছে ছোট হয়ে যাব। গাধা বালবাসার কাছে চোট বড় কি ? তাছাড়া মনে কর তোর রক্তের চিঠি দেখে নীলু আবার রক্ত দিয়ে লিখল তখন ? তখন আবার আমিও লিখব। তারপর নীলু আবার রক্ত দিয়ে লিখল তখন ? আমিও লিখব।

আচ্ছা তোর কথা বাদ দিলাম। এভাবে রক্ত নষ্ট করলে নীলুর শরীরে আর রক্ত থাকবে ? তাই তো এটা তো ভেবে দেখিনি। এই বুদ্ধির জন্য তোর কাছে আসা। ধন্যবাদ নিপা। কথা এখনও শেষ হয়নি বাবু, কি বলবি আবার বল্‌।

নীলু তোকে কত ভালোবাসে এটা প্রমান করে দিয়েছে রক্ত দিয়ে লিখে। তাহলে কি আমাকেও প্রমান করতে বলছিস ? হ্যাঁ। কিভাবে ? এটা সময় বলে দিবে। এখন বস, দুপুরে খেয়ে যাবি। নারে, বাড়ি গিয়ে গোসল সারতে হবে।

সবাই মিলে বাথরুমে ঢুকে দিহম্বর হয়ে সেরেনে তারপর না হয় কাপড় পড়ে নিবি। তোর মুখের ব্রেকসু কি ক্ষয়ে গেছে। কি সব যা তা বলছিস ? দুঃক্ষিত চা নিয়ে আসি বস। নিপা চা নিয়ে এল। চা খেতে গিয়ে বাবু মুখ পুড়িয়ে ফেলল।

তার মুখ পুড়িযে ফেলা দেখে সবাই হো হো করে হেসে উঠল। নিপা সবার দিকে তাকিয়ে এটাতে হাসার কি হল ? কামাল হোটেলের ঘটে যাওয়া ঘটনাটি এবং মিতুলের উক্তিটি সব কিছু নিপাকে ব্যা³ করল। নিপাও রসিকতার সুযোগটি হাত ছাড়ল না। মুচকি হেসে বলল, বাবু তোর কিন্তু মিটে গেছে। এখন থেকেই যদি পুড়োপুড়ি করিস তবেই বিপদ।

চা শেষ না করেই বাবু উঠে পাড়ল। কিরে কোথায় যাচ্ছিস ? বাড়ি। দাড়া ওরা চা শেষ করে নিক। বাবু ওদের অপেক্ষা না করেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। চলবে____________________________ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.