স্টেডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে বাসায় ফিরব বলে বাসের অপেক্ষা করছি। এই স্টেডিয়ামটাকে কেউ বলে মুগদা স্টেডিয়াম, কেউ বলে কমলাপুর স্টেডিয়াম আবার কেউ বলে মানিকনগর স্টেডিয়াম। যাই হোক এটা একটা স্টেডিয়াম।
রাস্তার পাশে দাঁড়ানো এক রিক্সাওয়ালা আমাকে জিজ্ঞেস করল, “কই যাইবেন ভাই?”। যদিও বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম তবুও যেচে জিজ্ঞেস করাতে মনের অজান্তেই উত্তরে বললাম, “যাত্রাবাড়ি”।
রিক্সাওয়ালা বলল, “আহেন”। আমি বললাম, “ভাড়া কত?”। সে বলল, “৩৫ টেহা”। আমি বললাম, “৩০ টাকা”। সে রাজি হয়ে গেল।
রিক্সায় উঠে বসলাম।
রিক্সায় উঠেই ভাবলাম, কি ব্যাপার এখান থেকে তো রিক্সাওয়ালারা ৪০ টাকার কমে যেতে চায় না অথচ সে চাইলই ৩৫ টাকা। আবার ৩০ টাকা বলাতে রাজিও হয়ে গেল।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনার গ্যারেজ কই?”। সে উত্তরে বলল, “ধলপুর”।
আমি বুঝলাম তার গন্তব্য এই দিকে অর্থাৎ গ্যারেজ এই দিকেই এবং সে নিশ্চই আজ আর ভাড়া মারবে না তাই যেতে রাজি হয়েছে।
ধলপুর পৌছতেই সে বড় একটা রিক্সা গ্যারেজে রিক্সাটা ঢুকিয়ে দিল। আমি একটু অবাক হয়ে ভয়ও পেলাম বৈকি। সে রিক্সাটা যায়গা মত রেখে আমাকে বলল, “চলেন ভাই বাইরে গিয়া একটা রিক্সা লই”। আমি আরোও অবাক হলাম।
যে পথটুকু সে এসেছে তার ভাড়া হবে আনুমানিক ১৫/২০ টাকা। গ্যারেজ থেকে বের হয়ে সেই ১৫ টাকায় বাকি পথটুকু যেতে রিক্সা ঠিক করল। আমি রিক্সায় চেপে বসলাম। সেও আমার পাশে চেপে বসল।
বুঝতে পারলাম তার বাসাও ওইদিকে।
সে আমাকে বলল, “আপনে যে ৩০ টেহা আমার ভাড়া দিবেন তা থেইক্কা ১৫ টেহা এই বেডারে দিমু আর আমার ১৫ টেহা থাকব”।
আমি অবাক হয়ে বুদ্ধু হয়ে গেলাম। মনের অজান্তেই কিছু সময়ের জন্য হা হয়ে গেলাম। যখন হুশ ফিরল তখন অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “ভাই আপনার বাড়ি কই”।
সে উত্তরে বলল, “কার আমার বাড়ি? আমার বাড়ি ময়মনসিংহ”।
মনে মনে হাসছিলাম আর ভাবছিলাম, হায়রে দেশ বরিশাল, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুরের পর এখন কি ময়মনসিংহের লোক চালাক হইতে শুরু করল নাকি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।