আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খোলস পাল্টিয়েছে জঙ্গিরা

আমি নতুন কিছু লিখবো পরনে জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট : জড়িয়ে পড়ছেন নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে খোলস পাল্টিয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। ইসলামী পোশাক ছেড়ে জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট পরে অত্যাধুনিক রূপে আবির্ভূত হচ্ছে তারা। কওমি মাদ্রাসার সীমানা ছাড়িয়ে এখন দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও জড়িয়ে পড়ছেন জঙ্গি কার্যক্রমে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোপনীয় ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে কওমি মাদ্রাসাগুলোতে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর প্রভাবের কথা ওপেন সিক্রেট হলেও সম্প্রতি হযরত শাহজালাল (রহ.) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের তত্পরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবেদনটি শিক্ষা, ধর্ম ও তথ্য মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডিজিএফআই, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড, এনএসআই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া জঙ্গি ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করার জন্য সব সংসদ সদস্যের কাছে শিগগিরই আধাসরকারি চিঠি পাঠানো হবে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত ‘জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ কমিটির ১১তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘হিযবুত তাহ্রীর’ প্রকাশ্য কার্যক্রম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশেষ করে হযরত শাহজালাল (রহ.) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনটির তত্পরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামী মতাদর্শের আড়ালে এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেশ ও জাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই সংগঠনটির এ ধরনের কার্যক্রমের ওপর বাড়তি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশের সঙ্গে প্রকাশ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কওমি মাদ্রাসাগুলো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো টাকা-পয়সা গ্রহণ করে না।

এমনকি তারা সরকারের নির্দেশমতো কোনো নিয়ম-কানুন প্রতিপালনের বিষয়েও উদ্যোগী নয়। তাই এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ নির্দেশনা থাকা উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জঙ্গি ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে ওই প্রতিবেদনে সরকারের কয়েকটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার কমিটির সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল, প্রতি মসজিদে জুমার নামাজের খুতবার আগে জঙ্গিবাদবিরোধী বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে কি না তা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মনিটরিং সেল নিবিড়ভাবে মনিটরিং অব্যাহত রাখবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা যাতে সহায়তা অব্যাহত রাখেন সে জন্য ওই বিভাগ দেশের সব স্থানীয় সরকার-প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা দেবে।

প্রতি সপ্তাহে ইসলামী ফাউন্ডেশনের কমপক্ষে দশজন প্রতিনিধি পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগরীর ১০টি মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করবেন। ঈমামরা জুমার খুতবার আগে এ বিষয়ে জনসচেতনতামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন কি না তা মনিটরিং করবেন। জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমে কমিউনিটি পুলিশকে সম্পৃক্ত করা হবে। মহানগর ও জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরকে সরকারের কাছে নিয়মিতভাবে প্রতিবেদন দিতে হবে।

তথ্য মন্ত্রণালয়কে জঙ্গিবাদের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে ডকুমেন্টারি, নাটিকা, শর্ট ফিল্ম, বিজ্ঞাপনচিত্র, ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে তা বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে প্রত্যেক মাসে এর অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। নতুন মিডিয়ার (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক) অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা চালানোর শর্ত বাধ্যতামূলক হিসেবে আরোপ করা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ছাড়া স্বনামধন্য নাট্যকারের মাধ্যমে জঙ্গিবাদবিরোধী নাটিকার পাণ্ডুলিপি চিত্রায়নের মাধ্যমে তা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।