৩ হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম মমি তৈরি করে সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন বৃটিশ গবেষকরা। বৃটেনের সাধারণ এক ট্যাক্সিচালক অ্যালান বিলিসের নশ্বর দেহকে মৃত্যুর পর মমি করে রেখেছেন তারা। কয়েক হাজার বছর আগে মিশরে মমি করে রাখার বিশেষ প্রক্রিয়াটি আবিষ্কারও রপ্ত করতে দীর্ঘ ১৯ বছর বিরামহীন গবেষণা করেছেন বৃটিশ গবেষক ডক্টর স্টিফেন বাকলি। প্রাচীন মিশরে তুতেন খামেনের মৃতদেহকে মমি করে সংরক্ষণের আদলেই বিলিসের মৃতদেহকে মমিতে সংরক্ষণ করেছেন। এ চাঞ্চল্যকর খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
জানিয়েছে, বিলিস ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। আর সে সময় এক বিজ্ঞানী প্রাচীন মমি সংরক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছিলেন। বিলিস সে গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। প্রয়াত বিলিসের স্ত্রী বলেন, সারা দেশে আমিই একমাত্র নারী, যার স্বামীর মৃতদেহ মমি করে রাখা হবে। চ্যানেল ফোর-এর একটি প্রামাণ্য চিত্রে মামিফাইং অ্যালান নামের একটি অনুষ্ঠানে মমিকরণ প্রক্রিয়াটি দেখানো হবে।
আগামী ২৪শে অক্টোবর অনুষ্ঠানটি প্রচার হবে। ইয়ক ইউনিভার্সিটির একজন রসায়নবিদ ও গবেষক হিসেবে কাজ করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্টিফেন বাকলি। মিশরের ১৮তম রাজার শাসনামলে যে পদ্ধতিতে মানুষের মৃতদেহকে মমি করে সংরক্ষণ করে রাখা হতো, সে সম্পর্কে জানতে দীর্ঘ ১৯ বছর গবেষণার পর এ সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। প্রত্নতত্ত্ববিদ ও গবেষক ডক্টর জো ফ্লেচারের সঙ্গে বাকলিও মমি নিয়ে বহু পড়াশোনা করেছেন ও অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। আর শেফিল্ডের মেডিকো-লিগ্যাল সেন্টারে বিলিসের মৃতদেহের ওপর সেটারই বাস্তব প্রয়োগ ঘটালেন।
বিলিস বেশ উৎসাহী ছিলেন। তিনি নিজেকে মিশরের তুতেন খামেনের নামের আদলে তুতেন-অ্যালেন বলে পরিচয় দিতেন। আর মমি তৈরিতে বাকলি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রস্তুত বেশকিছু বিশেষ উপাদানের সহায়তা নিয়েছেন। ওদিকে মমির উপযোগী করতে বিলিসের মৃতদেহ থেকে ফুসফুস ও অন্ত্র কেটে বাদ দিতে হয়েছে। তবে, তার মগজ সরানো হয়নি।
এরপর তার শরীরের আর্দ্র অংশকে বিশেষ ধরনের লবণের সাহায্যে শোষণের মাধ্যমে শুষ্ক করা হয়েছে। এরপর আরও বিশেষ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন গবেষকরা। ত্বককে লবণ থেকে সুরক্ষা দিতে বিশেষ তেল ব্যবহার করা হয়। মৃতদেহ থেকে সব পানি শোষণ করতে বিশেষ লবণের দ্রবণে একমাস ডুবিয়ে রাখা হয়। এরপর সারা শরীরকে লিনেন কাপড়ে মোড়ানো হয় ঠিক যেভাবে পুরনো দিনে মমিকে সংরক্ষণ করা হতো।
ফলে আলো বা পোকামাকড় থেকে মমিটি সুরক্ষিত থাকবে। আর এভাবেই মমির মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়েছে বিলিসের নশ্বর দেহকে।
সূএঃ মানবজমিন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।