মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতের আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এই মত দিয়েছে বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণ আন্দোলন থেকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি ইতোমধ্যে উঠেছে।
গোলাম আযমের আগে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আব্দুল কাদের মোল্লা ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানের মামলার রায়েও একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসে।
যুদ্ধকালীন বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের পরিকল্পনা, উস্কানিও সহযোগিতার দায়ে জামায়াতের গোলাম আযমকে টানা ৯০ বছর অথবা আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী হয়ে বাঙালি হত্যাকাণ্ডে রাজাকার, আল বদর, আল শামসের মতো যে সব বাহিনী জড়িত ছিল, সে সব বাহিনীর ওপর গোলাম আযমের নিয়ন্ত্রণ প্রমাণিত হয়েছে ট্রাইব্যুনালে।
ট্রাইব্যুনাল বলেছে, সাধারণ জ্ঞান ও দালিলিক প্রমাণাদি থেকে এটা স্পষ্ট যে, জামায়াত ও এর অধীনস্ত সংগঠনের প্রায় সবাই সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছেন।
“গোলাম আযমের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী একটি ক্রিমিনাল দল হিসাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকালে। ’
১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার সময় গোলাম আযমের ‘গুরু’ আবুল আলা মওদুদী তার বিরোধিতা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় সেই ধরনের ভূমিকাই ছিল গোলাম আযমের।
জামায়াত দুই সময়েই সাধারণ মানুষের মন বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল মন্তব্য করে ট্রাইব্যুনাল দলটির দূরদৃষ্টির অভাবের পেছনে উগ্র মৌলবাদী চেতনাকেই চিহ্নিত করেছে।
“স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও স্বাধীনতাবিরোধী কিছু মানুষ জামায়াতের হাল ধরে আছেন। যার ফলে জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতাবিরোধী চেতনা ও সাম্প্রদায়িক অনুভূতির মানসিকতায় বেড়ে উঠছে, যা দেশের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয়। ”
ট্রাইব্যুনাল বলেছে, একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধীরা শহীদদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কিংবা অনুশোচনা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছেন বলে কোনো প্রমাণ জাতির সামনে নেই।
রায়ে বলা হয়, একটি গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে সরকারের নির্বাহী বিভাগ, সরকারি বেসরকারি সংগঠনসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের কর্ণধার হিসাবে এ ধরনের স্বাধীনতাবিরোধীরা থাকা উচিত নয়।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে না আসতে পারে, সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে বলে রায়ে বলা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।