আগে প্রথম অংশ পড়ুন
Click This Link
তনু সবি দেখছিল, প্রথম দিকে সে অনেক মজা পেলেও পরে কেন যেন শুভর জন্য তার খারাপ লাগল। মায়া হল। সে শুভ’র কাছে গিয়ে জ্ঞিগাসা করলো “ কি ব্যাপার তুমি এখানে একা একা বসে আছ কেন?”
শুভ হাসিমুখে বললো,সুব্রত ফাজলামো করে আমার চশমা নিয়ে গিয়েছে। কখন যে আসবে ও?
তনু ভারি আশ্চর্য হল শুভ কথা শুনে। এমন ধৈয্যশীল মানুষ আর কখনো দেখেনি সে।
শুভর মুখের দিক তাকিয়ে রইল সে। তনুর কেন যেন মনে হয় শুভর কাছে আছে সিমাহীন নির্জণতা। আর অসিম ধৈয্যশক্তি। এমন একজন পুরুষকেই তার চাই।
শুভর হাতধরে বলে
চল তোমাকে বাসায় পৌছে দেই।
শুভ হেসে বলে তোমার কষ্ট হবে নাতো?
আরে না। তুমিতো আমাদের পাশের মহল্লাতেই থাক। চল।
৪.
তনুর নাম্বারে এপযন্ত দশবার কল দিল শুভ। রিং হচ্ছে কিন্তু তনু ধরছে না।
গতকালও সে ফোন রিসিভ করেনি। তনুর জন্য খুব দুঃশ্চিন্তা হয় শুভর। একমাস পর ভাসির্টি খুলেছে। গতকালও তনু ক্লাসে আসেনি। ফাইনাল পরিক্ষার আর মাত্র দুইমাস আছে।
এমন সময় কেউ ক্লাস মিস করে? কি হল ওর?
মনটা খারাপ হয়ে যায় শুভর। সে তনুকে এসএমএস পাঠায়।
কিছুক্ষন পর কল আসে তনুর। রিসিভ করতেই তনু বলে, শুভ তুমি আমাকে ভুলে যাও। আমি তোমার যোগ্য নই।
আমি খুব খারাপ একটা মেয়ে।
শুভ তনুর শিতল কন্ঠে অভস্ত্য নয়। কেমন অচেনা মনে হয় তনুকে। এমন কন্ঠে কখনো তনু তার সঙ্গে কথা বলেনি। বিস্মিত হয়ে তাই শুভ বলে, কি হয়েছে তোমার? ক্লাসে আস।
প্লিজ!
ফোনের ও প্রান্তে তনুর কান্নার শব্দ পেয়ে বিচলিত হয়ে যায় শুভ। বলে, প্লিজ কি হয়েছে বল আমাকে।
তনু কান্না জড়ানো কন্ঠে বলে, তোমার মা গতকাল সকালে আমাদের বাসায় এসেছিল। সবার সামনে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে বকা দিয়েছে। আমার মা বাবাকেও সে অনেক অপমান করেছে।
বাবা তাই আমার কলেজে যাওয়া বন্ধকরে দিয়েছে। আমার বাইয়া সন্ধায় আমাকে এজন্য মেরেছে। তুমি, বল আমার বাবা কি এতই গরিব যে তোমার বাবার সম্পতী পাবার লোভে আমাকে তোমার পেছনে লেলিয়ে দিবে? মেয়ের বাবা বলেই কি তাকে এতসব কথা শুনিয়ে দিতে পারে তোমার মা?
শুভ এসব কথা শুনে যেন পাথরের মূর্তি হয়ে গেল। কষ্টে তার বুকটা ভেঙে যাচ্ছিল। সে তনুর কাছে ক্ষমা চাইল বার বার।
কিন্তু তনুর কান্না তাতে থামলো না।
শুভর খুব অভিমান হল মায়ের প্রতি। সে ক্লাস না করেই বাসায় ফিরে এল। শুভর মা ডোয়িং রুমে বসে টিভিতে হিন্দি সিরিয়াল দেখতে ছিল। শুভ বইর ব্যাগটা সোফার উপর ছুড়ে ফেলে তার মায়ের সামনে গিয়ে দাড়ালো।
তারপর কঠিন গলায় শুভ বললো, আম্মা তুমি কি তনুদের বাসায় গিয়েছিলে?
তার মা কখনোই শুভর এমন অগ্নিমূর্তি দেখেনি। প্রথম দিকে সে ভড়কে গেলেও সে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, হ্যা গিয়েছিলাম। ওদের উচিৎ শিক্ষা দিয়ে এসেছি। হিন্দি সিরিয়ালের মহিলা ভিলেনের মত কওে বলে সে।
- তুমি কিন্তু কাজটা মোটেও ঠিক করনি।
লালচোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে শুভ। কিন্তু তার মা তাকে মোটেও পাত্তা দেয়না। গম্ভীর স্বরে বলে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল তোমার কাছে আমার শিক্ষতে হবে না? বেশি বড় হয়ে গিয়েছো? ঐ শয়তানটা তোমার মাথা খেয়েছে।
এরপর শুভ আর কোন কথা না বলে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। শুভর মা আবার তার হিন্দি সিরিয়ালে ডুবে যায়।
ডাইনীং টেবিলে খাবার সাজিয়ে অনেক বার ডাকার পরও যখন শুভ ভাত খেতে আসেনা, তখন শুভর দরজার কড়া নাড়ে শুভর মা। জোরে জোরে কয়েক বার ডাকার পরও ভেতর থেকে কোন সাড়া নেই। তার মায়ের হটাৎ করেই মনে হয় ছেলেটাকে ওভাবে বকা দেওয়াটা ঠিক হয়নি।
সে আদরভরা গলায় বলে, সরি বাবা আমার ভুল হয়েছে। দরজা খোল।
কোন শব্দ নেই। ক্রমাগত আঘাত করে যায় শুভর মা। কোন শব্দ নেই। অজানা আশংকায় বারান্দা দিয়ে ঘুরে গিয়ে কাচের জানালা ভেদ করে সে শুভর ঘরের ভিতর তাকায়।
শুভ তখন ঝুলছে ফ্যানের সঙ্গে।
চিৎকার করে জ্ঞান হারায় সে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।