সবসময় সবার সাহায্যে………তাই সহায়ক // পার্ট -১//
দেশের নামকরা একটি কলেজের ১ম বর্ষ উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছে রাহেল। আজ তার প্রথম ক্লাস। তাই তার মাঝে বইছে আনন্দের শিহরণ। চিরকালই শুনে এসেছে কলেজ জীবন অপার স্বাধীনতার আধার.। .।
.। । প্রশ্ন হল, একথা কে / কারা বলল???? স্কুলে থাকতে ক্লাস ফাঁকি দিলে, পড়া না পারলে বা বদমাশি করলে শিক্ষকেরা বলতেন, "বাবা একটু কষ্ট কর, স্কুল জীবন সবচেয়ে কষ্টের .। .। .।
। কলেজে উঠলে অপার স্বাধীনতা পাবি। " আজ রাহেলের সেই সাধের কলেজ জীবনের শুরু। তাই ওকে আর পায় কে???????
এস এস সি -তে গোল্ডেন জিপিএ- ৫ অর্জন করার কারণেই এ কলেজে চান্স পেয়েছে রাহেল। তাছাড়া ওর বাবার খুব ইচ্ছা ছিল যে ও এই কলেজে ভর্তি হবে...।
রাহেলের বাসা থেকে কলেজ হাঁটা পথ...। তাই রাহেল হেঁটে চলেছে কলেজের পথে...। । বছরের এই সময়টা প্রচন্ড গরম...। কিন্তু আজ বেশ ভাল ঠান্ডা বাতাস বইছে , , , তাই রাহেলের মনটা বেশ ফুরফুরে...।
নতুন ক্লাস, নতুন বন্ধু, এমনকি বান্ধবি >>>>>>> রাহেল আনমনে হেসে ওঠে...। বান্ধবি বা মেয়েবন্ধু...। সত্যই নতুন এক্সপেরিয়েন্স.........। এর কারণ রাহেল চিরকাল বয়েজ স্কুলে পড়েছে...। ।
আর ও এত লাজুক স্বভাবের যে পাড়ার মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করা , কথা বলা তো দূরে থাক............মেয়েদের দেখলে ও উল্টো দিকে হাঁটা দিত...। । ...। আর এই নিয়ে বাবা-মা যথেষ্ঠ খেপাত ওকে...। ।
বাবাতো মায়ের আড়ালে আবডালে নিজের বান্ধবিদের কথা গর্বভরে (???) স্মরণ করতো......। । যদিও তাতে ওর কিছু আসতো-যেত না...। ।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ও কলেজ কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়েছে বলতে পারবে না......।
একদম প্রথমেই চোখে পড়লো সায়েন্স বিল্ডিং। ভেতরে ঢুকতেই দপ্তরি জিজ্ঞেস করল, "কোথায় যাবেন ?????" রাহেলের সোজা জবাব, " ইলেভেন এস বি "। দপ্তরি বলল, " রুম-১০২, সোজা দক্ষিণ দিকে যাও পেয়ে যাবে। " তাকে ধন্যবাদ দিয়ে রাহেল এগিয়ে চলে তার ক্লাসরুমের দিকে। সহজেই খুঁজে বের করল ১০২ নং রুম...।
-" কিরে শালা , কইত্থুন আইলি, এত দেরি অইলো কেন...। ???? ঠাস করে ঘাড়ে কে যেন বাড়ি দিল। রাহেল পেছন ফিরে দেখে ওর বন্ধু মনির.........। ওরা একই স্কুলে পড়তো।
- " অই ব্যাটা, তোরে না কইসিলাম, আমার লগে আইস,........., তুই তো আগে চইল্লা আইলি!!!!!!"
- "আরে কইস না দোস্ত, জীবনে প্রথম মাইয়াগো লগে বমু...।
। তাই আগে চইল্লা আইলাম, , , তুই মাইন্ড করিস না......। । "
-" হালা তুই বদলাইলি না, তা আমার লেইগা জায়গা রাখসশ??????
- " নারে দোস্ত, আমি তো পিসে মাইয়াগো লগে বমু, আর তুই তো সামনে একলা বইবি, তাই আর রাখলাম না। " মনিরের জবাব।
-" যা শালা ব গিয়া। " বলে হাসতে হাসতে রাহেল সামনের বেঞ্চে বসলো। সাথে আর কেউ বসেনি। প্রথম দিনের ভয় আর কি?????
হঠাৎ বেল পড়লো। স্যার আসার সময় হয়েছে ।
রাহেল রুটিন খুলে দেখলো ইংরেজি ক্লাস...। । রাহেল খাতা বের করল। হঠাৎ কি মনে পড়তে পেছনে তাকালো...। ।
পেছনের অবস্থা দেখে ওর ভীষণ হাসি পেল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যে বেঞ্চে মেয়েরা বসেছে, তার পেছনের বেঞ্চে ছেলেরা, আর খালি মেয়েদের টিটকারি দিয়ে যাচ্ছে। মনিরও ব্যতিক্রম নয়। আর মেয়েদের সাজ দেখে মনে হচ্ছে কোন বিয়ে বাড়িতে এসেছে। কেউ সালোয়ার-কামিজ, কেউ টপ-জিন্স, কেউ আবার শাড়ি পরেছে।
আর তাদের মেকআপের কথা বর্ণনা করার মত ভাষা আমার জানা নেই!!!!! মেয়েগুলো যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত ছেলেদের টিটকারি গিলছে>>> রাহেল আবার আনমনে হাসল।
এমন সময় স্যার ঢুকলেন। রাহেলের তো স্যারের চেহারা দেখে ফিট হবার অবস্থা। ইয়া বড় দেহ, তার মাঝে একটা ছোট্ট ভুঁড়ি। মুখে বসন্তের দাগ, আর ইয়া বড় রাজসিক গোঁফ।
স্যার এসেই বললেন, " আই এম ইজলাম উড্ডিন (ইসলাম উদ্দিন), এসিস্টেন্ট প্রফেসর, ইয়োর নিউ ইংলিশ টিচার। সে হাই টু মি। " পুরো ক্লাস একসাথে ''হাই স্যার" বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো। স্যার সুন্দর করে বাউ করলেন, আর বললেন, " থ্যাঙ্কস ডিয়ার স্টুডেন্টস, আই থিঙ্ক, ইউ আলওয়েজ থিংক মি এজ অয়ান অফ ইউর ফ্রেন্ড। " সাথে সাথে রাহেলের স্যারকে ভাল লেগে গেল।
পেছনে ছেলেমেয়েরা হাততালি দিয়ে উঠল। এবার স্যার বললেন, " ও কে ডিয়ার স্টুডেন্টস, ইটস ইনাফ। নাউ আ'ইল টেক ইয়োর এটেনডেন্স। " বলে স্যার নাম ডাকতে শুরু করলেন।
এমন সময় দরজা থেকে একটা মিষ্টি আওয়াজ ভেসে এল, " মে আই কামিন স্যার।
" - "ইয়েস প্লিজ" স্যার বললেন। পুরো ক্লাসে পিন পতন নিরবতা!!!!!!! কিন্তু উৎসুক ছেলেদের হতাশ করে যে মেয়েটা রুমে প্রবেশ করলো, তার ছোখ দুটো ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। অর্থাৎ হিযাব ওয়ালি...। । ছাই রঙের একটা বোরখা পড়েছে...।
। মেয়েটা ক্লাসে ঢুকে, এদিক-সেদিক দেখে সোজা রাহেলের দিকে এগিয়ে এল। এসে বলল, " আমি কি এখানে বসতে পারি????? আশে-পাশে আর কোন জায়গা খালি নেই। " রাহেল চট করে পেছনে তাকাল। মেয়েটা ঠিকই বলেছে।
তাই অগত্যা ও মেয়েটাকে ইশারা করল পাশে বসার জন্য।
জীবনে প্রথম কোন মেয়ের পাশে বসা। শিহরণে হঠাৎ কাঁপতে লাগল রাহেল!!!!!! একবার মেয়েটার দিকে তাকাল। মেয়েটা ওকে অবাক করে দিয়ে চোখে দুষ্টুমি ভরা হাসি দিল...। রাহেল অবাক হয়ে ওর চোখের দিকে তাকাল...।
। "বাহ!!!! দারুণ সুন্দর তো ওর আঁখিযুগল!!!!!!!!"
[চলবে.........]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।