আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিসকো বান্দরের সাথে ইফতার @ ব্যাটন রুঝ

"প্রত্যেক সত্ত্বাকে মৃত্যু আস্বাদন করতে হবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, নিঃসন্দেহে সে হল সফল। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়। " আল ইমরান,আয়াত ১৮৫ ডিসকো বান্দর এর সাথে নিশ্চয় আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই।

কিছুটা আদি রস মিশ্রিত কমেডি লেখাতে তার জুড়ি নেই। তার প্রথম যে পোস্টটি আমি পড়ি সেটি ছিল সম্ভবত রক্তাক্ত মুরগী,বিধ্বস্ত ডিসকো বান্দর ও আফ্রিকান রমনীর লালসার ফাঁদ (মারাত্মক ১৮+) । ওই পোস্ট পড়ার পর থেকেই আমি আসলে তার ফ্যান হয়ে যাই। এত মজা করে কেউ পোস্ট লিখতে পারে ! আমি অন্তত সামুতে দ্বিতীয় কাউকে পাই নি, জানি না আরো কেউ হয়ত থাকতে পারেন, কিন্তু আমি হয়ত দেখিনি ! তো ৪/৫ মাস আগে আমি একবার ওনাকে মেইল করেছিলাম যে আপনার ফোন নম্বর দিন, কথা হবে। যাইহোক, এবার উনি নাস্তিকদের বাড়াবাড়িতে অতিষ্ট হয়ে ওনার ডিসকো বান্দর, আফ্রিকান নেংটু বাবা, নাস্তিক ভাইগন এবং মডারেটররা! পোস্টে যখন ইফতারের দাওয়াত দিয়েই ফেললেন, তখন সেটা লুফেই নিলাম !! বিকেল সাড়ে পাচটায় ব্যাটন রুঝে দেখা হল ভাইয়ার সাথে।

হাস্যোজ্বল এবং অত্যন্ত হ্যান্ডসাম একজন মানুষ! যদিও ফোনে ভয়েস শুনে আরেকটু বয়স্ক ভেবেছিলাম ! অনেক কথা হল। অনেক ব্যাক্তিগত বিষয় জানা হল। কথা যত এগুতে লাগল, আমি বুঝতে পারলাম চরম আত্মবিশ্বাসী এবং উদ্যমী একজন মানুষের সাথে আমি কথা বলছি। ভাইয়া এসএসসি এবং এইচএসসি দুটোতেই মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া একজন ছাত্র। এইচএসসি তে মেধা তালিকায় প্রথম ! এরপর জীবনে কখনো তাকে দ্বিতীয় স্থানে যেতে হয়নি ! "“আপনি যদি মন থেকে কোন কিছু করতে চান, সেটা অর্জন করতে চান, তবে সেটা আপনি অবশ্যই পাবেন, আপনার মেধা যেমনই থাকুক না কেন! আপনার আন্তরিক চেষ্টা থাকার পরও যদি আপনি কোন কিছুতে ব্যর্থ হন, তবে বুঝতে হবে স্রষ্টা সেটা চান নি এবং সেটা আপনার জন্য মংগলজনক ছিল না !"” এই কথাগুলো ভাইয়ার মুখ থেকে শুনে আমি আমার নিজের চিন্তা ভাবনাগুলোকে আরেক প্রস্থ বিন্যস্ত করে নিলাম ! আলাপ চারিতা যখন তুঙ্গে তখনই হঠাৎ ওয়েটার বলল, স্যার আজান দিয়েছে, ইফতার শুরু করুন।

শুরু হল ব্যাটন রুঝের শাহী ইফতার ! অনেক দিন পর এই রেস্টুরেন্টটায় ইফতার করলাম। সেজন্যই কিনা জানি না, প্রতিটি আইটেমই আমার কাছে জম্পেশ লাগল ! সিলেটিদের বাসায় খাওয়া দই বড়াতো ওখানে চরম লাগল ! মোটামুটি ভাইয়ার টাকা উসুল করে খেয়েছি, যদিও ভাইয়া ছিলেন অনেক সংযমী ! এর আগেই ভাইয়ার কাছ থেকে খুব সুন্দর একটা উপহার পেলাম ! কি, ধারণা করুন তো? ভাইয়ার লেখা প্রথম উপন্যাস The Peacekeeper তার সুন্দর অটোগ্রাফ সহ ! আফ্রিকায় ভাইয়া জাতিসংঘ শান্তি মিশনে ছিলেন, সেখানকার অভিজ্ঞতার উপরই লেখা তার এই উপন্যাস। বইটি যুক্তরাষ্ট্রের iUniverse, Inc থেকে ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বেরিয়েছে এবং amazon.com এ কিনতে পাওয়া যায়। আর বইটি বাংলাদেশে বের করেছে সাহিত্য প্রকাশ। সম্প্রতি তার এই উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে সিনেমা তৈরীর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতাদের সাথে কথা চলছে।

আশা করছি, একদিন সিনেমা হলে গিয়ে ছবিটি দেখতে পাব। যারা ভাইয়ার IELTS এবং TOEFL স্কোর দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছিলেন, তারা নিশ্চয় এবার হাড়ির খবর জানতে পারলেন ! যেই ব্যক্তির ইংরেজিতে লেখা বই যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার কাছে IELTS/TOEFL তো কোন ঘটনাই না !! বইটির পেছনে দেয়া সারমর্মটি দেখুনঃ Deep inside the jungles of Congo, Samir, on his peacekeeping mission, comes face to face with all the incredible challenges Africa has to offer. Cloaked in a cover of uncertainty, his only hope for surviving the mayhem of the brutal cannibals, gun-trotting child soldiers and the bloodthirsty belligerent rebels is his wit which he finds challenged every single day. As he lives through his ordeal, Africa surfaces to life with all her magnificence, seduction, gloom and gore from the pages of the books he read back home. Death hovers over his head like a cloud yet he is awed by the beauty of Africa, humored by the non-congruity of life and excited about his job of bringing peace in the war ravaged country. বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অবসর নেয়া এই চৌকস অফিসার খুব শীঘ্রই একটি বড় কোম্পানীর একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দিচ্ছেন, ভাইয়ার জন্য রইল শুভ কামনা ! ফেরার পথে ভাইয়া খুব মজার একটা কাহিনী শেয়ার করলেন, আপনাদের বলার লোভ সামলাতে পারছি না, আর এটা বলেই পোস্ট শেষ করব। আপনারাতো নিশ্চয় ভাইয়ার ডিসকো বান্দরের ১৭ তম বিবাহ বার্যিকী আজ!! ৬২০৫ দিন আগে এই দিনে উনি আসিলেন বান্দরের জীবনে! পোস্ট পড়েছেন, জেনেছেন কিভাবে আমাদের সুন্দরী ভাবী ভাইয়ার জীবনে এল। তো ভাবীর জীবনে কিন্তু তিনিই প্রথম বান্দর নন ! ভাবীর জীবনে আরো একজন বান্দর ছিল ! ভাইয়ার আরেক ভাই মেজর, তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে একটা সত্যিকারের বানর ধরে এনেছিলেন যেটা কিনা ওনাদের বাড়ীতেই থাকত ডিসকো বান্দর ভাই এর বিয়ের আগ থেকেই। ভাবী এসেই সেই বানর দেখে বলেছিলেন এই বানর থাকলে তিনি ও বাড়ীতে থাকবেন না ! একদিন হয়েছে কি, নতুন ভাবী গোসল করে বেরিয়েছেন, আর ওই বান্দর কিভাবে যেন ওর শেকল খুলে এক লাফ দিয়ে ভাবীর গায়ের ওপর গিয়ে পড়েছে ! ভাবীতো চিৎকার করে একাকার ! আর যায় কোথায়, এর পর ওই বান্দরের জায়গা হল গিয়ে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ! ভাবীর জীবনে থেকে গেলেন শুধু আমাদের প্রিয় ডিসকো বান্দর ভাই !! ডিসকো বান্দর ভাই এবং তার পরিবারের জন্য অনেক শুভ কামনা রইল।

ডিসকো বান্দর এর প্রতি দুটো কথাঃ Sir, I felt really honored and privileged to have your company this evening and thanks for the awesome treat! ভালো থাকবেন। মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বি.দ্র ঃ ভাইয়েরা, আপুরা, দয়া করে ইন্টারনেট ঘেটে ডিসকো বান্দর ভাই এর ছবি এখানে পোস্ট করে দিয়েন না। তিনি সারা জীবন আপনাদের সামনে বান্দর হিসেবেই থাকতে চান, কখনো মানুষ হিসেবে আসতে চান না !! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.