বাধা পেলেই সৃষ্টি হয় গণজোয়ার।
আসিরাফ ওই দিনের ঘটনা নিজের মুখেই বলেছেন। তিনি বলেছেন- আমি অন্য এক ছাত্রবন্ধুর সঙ্গে সাইকেলে করে অন্য আরেক বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম। পথে প্রায় ২০ জনের এক দল দাঙ্গাবাজ আমাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ সময় আমার ভয় হয় তাদের কারও কাছে হয়তো চাকু আছে।
তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট যে জন তাকে দেখে মনে হয় সে প্রাইমারি পড়ুয়া। তারা দল বেঁধে আমাকে ঘিরে ফেলে। প্রথমেই তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়নি। প্রথমে তারা আমার বাইসাইকেলটি চায়। তার পর তাদের কেউ একজন আমার পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয়।
সে আমার বাইসাইকেলটিও নিয়ে নেয়। এরপর আমি বলতে পারবো না কি ঘটেছে। তবে আমি বুঝতে পারি আমার মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। এ পর্যায়ে আরেক দল লোক দেখে আমার মনে হয় তারা আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে। কিন্তু পরক্ষণেই দেখি তারা একই দলের লোক।
তারা আমার পিএসপি গেম কনসোলটি নিয়ে নেয়। নিয়ে নেয় একটি কন্টেইনার। এ দৃশ্য ভিডিওতে দেখেছেন অনেকে। তারা আমাকে সমর্থন জানিয়েছেন। এতে আমি কৃতজ্ঞ।
আসিরাফ বলেন, এরপর একজন নারী এগিয়ে গিয়ে তাকে তার বাসায় নিয়ে যান। তার পর হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এখন আসিরাফের ভেঙে যাওয়া চোয়াল ও নিচের সারির ভাঙা দাঁতের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আসিরাফের বসবাস পূর্ব লন্ডনের বার্কিং-এ। অন্য ৭ মালয়েশিয়ান ছাত্রের সঙ্গে তিনিও মাত্র এক মাস আগে সরকারি বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে বৃটেন গিয়েছেন।
তাকে বৃটেন পাঠাতে তার পরিবারের ঋণ করতে হয়েছে। এখনও সেই ঋণের দায় টানছেন তারা। তার মা মাজনাহ আবু মানসুর (৪৭) একজন শিক্ষিকা। তাদের বাড়ি মালয়েশিয়ার ক্লাং ভ্যালিতে। সেখান থেকে তিনি টেলিফোনে বলেছেন, আমি ফোনে তাকে বলেছি দেশে ফিরে আসতে।
কিন্তু সে পড়াশোনা শেষ না করে দেশে ফিরতে চায় না। সে বলেছে, এটা এক রকমের অভিজ্ঞতা হলো। এরপর তাকে আরও সতর্ক হয়ে থাকতে হবে, চলতে হবে। এ হামলার খবর জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও দুঃখ পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, যখন একজন যুবককে কতগুলো লোকের হাতে এভাবে অপদস্ত হতে দেখি, তখন এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আমাদের সমাজ খারাপ পরিণতির দিকে যাচ্ছে।
ওদিকে আসিরাফের যেসব জিনিস লুটে নেয়া হয়েছে তা উদ্ধারের জন্য সামাজিক ওয়েবসাইট টুইটারে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।