আমি বাংলার...।
বাংলাদেশের ঢাকায় একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান সহ ১৮ জন নতুন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হয় ২৪ জন।
এর আগে দুপুরে তারেক রহমান সহ ৩০ জনকে নতুন করে অভিযুক্ত করে গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত মামলায় সম্পূরক অভিযোগ-পত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি।
আদালতে জমা দেয়া হয় ওই সম্পূরক অভিযোগ-পত্র, মূলত পৃথক দুটি অভিযোগ-পত্র, একটি বিস্ফোরক আইনে অপরটি হত্যা মামলা এবং দুটিতেই নতুন করে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এই মামলায় অভিযুক্ত তারেক রহমান অন্য একটা মামলায় জামিন নিয়ে এখন চিকিৎসার জন্য ব্রিটেনে অবস্থান করছেন।
কেউ আগে ষড়যন্ত্রের সাথে আছে। কেউ ঘটনার সময় আছে। কেউ ঘটনার পর নানা ভাবে হামলাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। তারেক রহমানের নাম ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত হিসেবে এসেছে।
সিআইডি পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা, আবুল কাহার আকন্দ
সিআইডির দেওয়া এই সম্পূরক অভিযোগ-পত্রে বিএনপি নেতা তারেক রহমান ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্র-প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা হারিস চৌধুরী, পুলিশের তিন জন সাবেক আইজি, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা বা এনএসআই এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর কর্মকর্তা সহ সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা রয়েছেন।
সম্পূরক অভিযোপত্রে যেসব ব্যক্তির নাম নতুন এসেছে তারা কিভাবে ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িত এ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সিআইডি পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা, আবুল কাহার আকন্দ বিবিসিকে জানান, ‘কেউ আগে ষড়যন্ত্রের সাথে আছে। কেউ ঘটনার সময় আছে। কেউ ঘটনার পর নানা ভাবে হামলাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে’।
মি আকন্দ জানান বিএনপি নেতা ‘তারেক রহমানের নাম ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত হিসেবে এসেছে’।
প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন ২০০৮ সালে
পুলিশ ২১ শে অগাস্টের এই গ্রেনেড হামলার প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তিন বছর আগে ২০০৮ সালে।
সেই অভিযোগ-পত্রে মুফতি হান্নান সহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
রোববার জমা দেয়া সম্পূরক চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে। (ফাইল ফটো)
পরবর্তীতে ২০০৯ এর মাঝামাঝি সময়ে রাষ্ট্র-পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি পায় সিআইডি পুলিশ।
অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতের ওই নির্দেশে গ্রেনেডের উৎসস্থল ও খুঁজে বের করতে বলা হয়েছিলো।
সম্পূরক অভিযোগপত্রে গ্রেনেডের উৎসস্থল পাকিস্তান বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ মামলায় রাষ্ট্র-পক্ষের কৌসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান।
তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন ‘পাকিস্তান থেকে এই আর্জেস গ্রেনেডগুলো এসেছে। মাওলানা তাজউদ্দিন, আবদুল মজিদ বাট এরা এগুলো এখানে এনে মজুদ করেছে এবং সরবরাহ করেছে’।
পাকিস্তান থেকে এই আর্জেস গ্রেনেডগুলো এসেছে।
রাষ্ট্র-পক্ষের কৌসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান।
বিএনপির প্রতিক্রিয়া
এদিকে তারেক রহমানের আইনজীবীরা এ অভিযোগ-পত্রকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মিস্টার রহমানের একজন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেছেন ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তারেক রহমান সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং কিছু সংখ্যক সাবেক আমলাকে এ মামলায় পুনরায় চার্জশিটভূক্ত করা হয়েছে। এই চার্জশিটের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে সরকার এই মামলার সুষ্ঠু বিচার চায় না। শুধু রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য সরকার এটা করছে’।
সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার সময় মিছিল
শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তারেক রহমান সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দকে এ মামলায় পুনরায় চার্জশিটভূক্ত করা হয়েছে।
তারেক রহমানের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া
দুপুরে অভিযোগ-পত্র জমা দেয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা পাল্টাপাল্টি মিছিল করে।
এ মামলায় এখন মোট আসামীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জন যার মধ্যে ২৬ জন কারাগারে রয়েছে এবং অভিযোগ-পত্রে বাকিদের পলাতক হিসেবে বলা হয়েছে।
২০০৪ সালের ২১ শে অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ চলাকালীন সময়ে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।