আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেকড়ে কন্যা



কেউ কেউ তাকে নেকড়েকন্যা বা বাঁদরমুখো বলে খেপানোর চেষ্টা করে। তবে তাতে সুপাত্রা সাসুফানের বয়েই গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে লোমশ বালিকার খেতাব পেয়েই দারুণ খুশি ও। ১১ বছরের এই থাইকে নিয়ে শুরুতে ঠাট্টা-বিদ্রূপ আর তামাশায় মেতে থাকত সহপাঠী আর পাড়া-প্রতিবেশী। তবে এখন গিনেস বুকে নাম উঠে যাওয়ায় উল্টো বেড়ে গেছে তার কদর।

মুখসহ শরীরের অস্বাভাবিক লোমের কারণেই তাকে এই বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস কর্তৃপক্ষ। সুপাত্রা বলেছে, গিনেস বুকে ঠাঁই পেতে কত কী-ই না করে মানুষ। আমি কেবল তাঁদের কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছি, তাতেই আমাকে স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছে তাঁরা। মধ্যযুগ থেকে এখন পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ হরমোনের ত্রুটির কারণে অ্যাম্ব্রাস সিনড্রোম নামের বিরল এ সমস্যায় পড়েছে। অদ্ভুত হলেও এর বৈজ্ঞানিক কারণ জানার আগ পর্যন্ত এ ধরনের মানুষকে ওয়্যারউলফ বা নেকড়ে মানব মনে করত লোকেরা।

এ রোগে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষকে লাঞ্ছনা-গঞ্জনার মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে হলেও সুপাত্রাকে এখন নিজেদের একজন হিসেবেই মেনে নিয়েছে সবাই। ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে সে। 'আগে বাঁদরমুখো বলে খেপালেও এখন আর কেউ খেপায় না। এ অস্থায়ই থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। লোমের কারণেও আর কোনো সমস্যা হয় না।

তবে বড় হয়ে গেলে দেখতে খুব খারাপ লাগে। আমার আশা, একদিন আমি ভালো হয়ে যাব। '_বলে সুপাত্রা। তার বয়সী অন্য শিশুদের মতোই নাচতে আর সাঁতার কাটতে ভালোবাসে সে। গান আর বন্ধুদের সঙ্গে খেলাটাও দারুণ উপভোগ করে।

তবে সবচেয়ে ভালোবাসে টেলিভিশনে কার্টুন দেখতে। আর সুযোগ পেলেই মেতে ওঠে অঙ্ক নিয়ে। অন্যকে অঙ্ক শেখানোর জন্যই এটি খুব ভালোভাবে রপ্ত করতে চাইছে ও। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ডাক্তার হওয়া। ডাক্তার হয়ে অসুস্থদের সেবা করতে চায় সে।

তবে সুপাত্রার ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে তা বলা মুশকিল। কেননা জন্মের পর পরই শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করার জন্য দু-দুবার অপারেশন টেবিলে যেতে হয়েছে তাকে। সুপাত্রার বাবা সামরুয়েং জানান, জন্মের পর পরই তার শরীরে অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনার পর মেয়েকে নিয়ে নতুন করে আবার সমস্যায় পড়েন। দুই বছর বয়সে চিকিৎসকরা লেজার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে সুপাত্রার লোম পরিষ্কার করার চেষ্টা করে, কিন্তু লোম পরিষ্কার করার পর পরই দ্রুত আরো ঘন হয়ে গজিয়ে ওঠে।

লোম বেশি লম্বা হয়ে গেলে মা সাম্ফনই সেগুলো ছেঁটে ছোট করে দেন। বড়দের শ্যাম্পু সহ্য না হওয়ায় ছোটদের শ্যাম্পু ব্যবহার করে সুপাত্রা তার লোম পরিষ্কার করে। সামেরুয়েংর আশা, একদিন সুপাত্রা ভালো হয়ে উঠবে। আমরাও চাই সুস্থ-সুন্দর জীবনে ফিরে যাক ছোট্ট মেয়ে সুপাত্রা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.