আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে...
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে কারা আছে জানেন? আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। সরকার তাদের পরিচালনা পর্ষদগুলোতে নিয়োগ দিয়েছে যোগ্যতা না থাকার পরও। সবুজকানন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক যেমন আছেন সেখানে, তেমনি আছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতাও। ছাত্রলীগের নেতারা যেমন আছেন, যুবলীগারও কম নয়। এদের প্রায় কারোরই ব্যাংকিং তো নয়ই, এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়েও ন্যূনতম ধারণা নেই।
পরিচালনা পর্ষদের এইসব সদস্যের মূল কাজ হল অর্থের বিনিময়ে বিশেষ বিশেষ লোককে ঋণ পাইয়ে দেওয়া, বদলি আর পদোন্নতিতে প্রভাব বিস্তার। প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূসকে সরিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের দখল নিতে সরকার মরিয়া হয়ে ওঠার পর এই প্রশ্ন এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, গ্রামীণ ব্যাংক সরকারের দখলে যাওয়ার পর সফল ওই বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির ভাগ্যে কী ঘটবে? তার আগে দেখা যাক, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের কী হাল-
অগ্রণী ব্যাংক
চেয়ারম্যান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক।
পরিচালক :
১. বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন
২. যুক্তরাজ্য আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা জাকির আহমেদ
৩. আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক আবদুস সবুর
৪. আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক নাগিবুল ইসলাম
৫. সাবেক কমিউনিস্ট নেতা, মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্টের সম্পাদক শেখর দত্ত।
৬. আওয়ামী লীগ সমর্থক আবদুজ জহির চৌধুরী
৭. গ্লোবাল নিউজ এজেন্সির প্রধান সম্পাদক কে এম এন মঞ্জুরুল হক (প্রকৃতপক্ষে গ্লোবাল নিউজ এজেন্সি নামের কোনো সংবাদ সংস্থার অস্তিত্বই নেই)
সোনালী ব্যাংক
চেয়ারম্যান : কাজী বাহারুল ইসলাম (সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা )
পরিচালক :
১. মাদারীপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি লুত্ফর রহমান খান
২. কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতা সাইমুম সরওয়ার
৩. আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কমিটির সদস্য কাশেম হুমায়ুন
৪. সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সত্যেন্দ্র চন্দ্র ভক্ত
৫. সবুজ কানন উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মহিলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক জান্নাত আরা হেনরী (তিনি নবম সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন)
৬. বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি কে এম জামান।
৭. সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুভাষ সিংহ রায়।
জনতা ব্যাংক
চেয়ারম্যান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত।
পরিচালক :
১. রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি নজিবর রহমান
২. ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলরাম পোদ্দার।
বেসিক ব্যাংক
চেয়ারম্যান : সাবেক সাংসদ শেখ আবদুল হাই
পরিচালক :
১. চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম
২. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাজিয়া বেগম
৩. অর্থ বিভাগের যুগ্ম-সচিব বিজয় ভট্টাচার্য
৪. সাবেক শুল্ক কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)
পরিচালক :
১. নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া
২. বেসিক ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলাউদ্দিন এ মজিদ
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)
পরিচালক :
১. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও আওয়ামী লীগের সমর্থক রুস্তম আলী আহমেদ
২. কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খোন্দকার জাহাঙ্গীর কবির।
এই হল অবস্থা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।