পাখি এক্সপ্রেস
প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন ড. মুহম্মদ ইউনূস। তখন দেশের ক্ষমতায় ছিলো বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার। নোবেল বিজয়ের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল থেকে ড. ইউনূসের জন্য প্যাকেটে প্যাকেটে হাততালি গিয়েছিলো। বিপুল পরিমান প্রশংসার লালার মাঝে কোনমতে নাক উঁচিয়ে জান রক্ষা করেছিলেন ড. ইউনূস। সে এক ঐতিহাসিক মধুচ্ছাসে ভেসেছিলো রাজনীতির নদী নালা, খাল বিল।
তখনকার পরিস্থিতিতে ড. ইউনূস এবং নোবেল নিয়ে দু’চারটে কথা না বললে যেন রাজনীতিবিদদের মানসম্মান আর থাকছিলো না। ক্ষমতাসীন দল আর বিরোধীদলের মাঝে সেয়ানে সেয়ানে সে স্তুতির লড়াইয়ে কেউই হারেনি।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মোবাইল ফোনে মুহাম্মদ ইউনূসকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেন, “এই অর্জনের মাধ্যমে তিনি দেশ ও জাতির জন্য গর্ব বয়ে এনেছেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে পরিচিত হয়েছে এবং জাতীয় মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে”। অতি উৎসাহী প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে গিয়ে আরও বলেন,“কিছুক্ষণ আগে আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছেও বলেছি আপনাকে অভিনন্দন জানাতে”।
ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সফররত বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাও ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইন সংবাদপত্র বিডিনিউজ২৪ কে টেলিফোনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার খুশির কথা জানান। পাশাপাশি নোবেল বিজয়ের সাথে নিজ কৃতিত্ব যোগ করতে গিয়ে ১৯৯৬ পর্বের শাসনামলের প্রসঙ্গ এনে বলেছিলেন, “১৯৯৭ সালে তিনি বিশ্বমানের মোবাইল ফোন প্রযুক্তি ব্যবহার করার সাহস দেখিয়েছেন। যদিও সাফল্য নিয়ে তখন অনেকের মনেই সন্দেহ ছিল। আজ সব সন্দেহ ভুল প্রমাণিত হয়েছে”।
গরম গরম প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সংবাদ মাধ্যমগুলোয় সিলেট থেকে টেলিফোনে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, “প্রফেসর ইউনূস কেবল সারাবিশ্বে নয়,বাংলাদেশের একজন গর্বিত ব্যক্তিত্ব। তার ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি বাংলাদেশের আঙ্গিনা ছাড়িয়ে আফ্রিকা ও আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত ও অনুন্নত দেশে সাফল্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে সম্মানের আসনে আসীন করেছেন”।
দলীয়ভাবে বিএনপি মহাসচিব মরহুম আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া অভিনন্দন বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত হননি। হন্যে হয়ে ছুটে গিয়েছিলেন মিরপুরে ইউনূসের বাসায়।
সবাই যখন বাংলাদেশী বাংলাদেশী বলে চিৎকার করেছিলেন, তখন দলীয় সংকীর্ণতায় থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার চরম মাত্রার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অমর্ত্য সেনের পর তিনি বাঙালী জাতিকে আবারও গর্বিত করেছেন”।
ড. ইউনূসের নোবেল বিজয়ের সাথে রাজনীবিদরা যারপরানই চেষ্টা করেছেন নিজেকে সম্পৃক্ত করতে। স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ ইউনূসের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তিতে দাবি করে বসেন অনেকটা কৃতিত্ব। -গ্রামীণ ব্যাংক একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ছিল। অধ্যাদেশ জারি করে তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন।
এবার শুনবো মুদ্রার উল্টোপিঠের খবরাখবর। ৩০ নভেম্বর ২০১০ তারিখে নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে (এনআরকে) “ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদ” নামে একটি প্রামাণ্যচিত্রের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়। যেখানে অভিযোগ করা হয়, “নরওয়ে,সুইডেন,নেদারল্যান্ডস ও জার্মানির দেওয়া অর্থ থেকে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণ নামে নিজের অন্য এক প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেন ইউনূস। ঢাকার নরওয়ের দূতাবাস,নরওয়ের দাতাসংস্থা নোরাড এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকে ফেরত নিতে চেয়েও পারেনি। ১০ কোটি ডলারের মধ্যে সাত কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণ নামের প্রতিষ্ঠানেই থেকে যায়।
এরপর গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ওই অর্থ ঋণ হিসেবে নেয় গ্রামীণ ব্যাংক”।
এমন খবর পেয়ে প্রায় সব দৈনিক কাগজ এবং অনলাইন মিডিয়া ঝাঁপিয়ে পড়ে ড. ইউনূসের উপর। বিডিনিউজ২৪ডটকম কে দেখা গেছে অতি উৎসাহী হয়ে ড. ইউনূসের দুর্নীতির খবর প্রকাশ করতে। তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে বসুন্ধরা গ্রুপের অনলাইন মিডিয়াও প্রামাণ্যচিত্রটি প্রকাশ করতে থাকে। বাংলা ব্লগগুলোতে চলে খোলামেলা সমালোচনা।
একে একে মুখ খুলতে থাকেন সরকার দলীয় সাংসদ এবং মন্ত্রীরা। কিছুদিনের মধ্যেই মুখ খোলাদের মিছিলে যোগ দেন স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকও ড.ইউনূসের দুর্নীতি প্রমাণে আড়মোড় ভেঙ্গে জেগে উঠেছেন।
“ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদ” প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের পর নোবেলজয়ী বাংলাদেশীর দিন বদলে গেছে। তার নামে এখন দই কেলেকাংরির মামলা হয়, রাজনীতিবিদরা টাকার জন্য রাজনীতি করে-এমন মন্তব্যের জন্য মানহানির মামলা হয়।
সে জাতীয় বীর, জাতির চন্দ্রসন্তান এখন রক্তচোষা, সুদখোর, দুর্নীতিবাজ। চলতি হাওয়ায় ড. ইউনূসকে নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কিছু মন্তব্য দেখলেই বুঝা যাবে ড. ইউনূসের বদলে যাওয়া দুর্দিনের ভয়াবহতা। (১) "বাংলাদেশ অনেক কিছুতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। জনগণের টাকা নিয়ে ভোজবাজির খেলার এটাও একটা দৃষ্টান্ত। দরিদ্র মানুষকে ঋণ দিয়ে অর্থ চুষে খাওয়া।
কোথাও তো দরিদ্র মানুষের উন্নয়ন হয়নি। দরিদ্র মানুষকে দেখিয়ে শুধু টাকা নিয়ে আসা হয়েছে। " (২) "বাংলাদেশের মানুষকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এটা কখনোই সমর্থন করিনি। প্রতিবাদ করেছি" (৩) "এটাকে (গ্রামীণ ব্যাংক) এমনভাবে কব্জা করা হয়েছে, যেন এটা ব্যক্তি সম্পত্তি।
এরও তদন্ত করা উচিৎ। গরিব মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। ভালো ভালো কথা বলে গরিব মানুষের রক্ত চুষে খাওয়া হচ্ছে। এখন অনেক কিছুই বেরিয়ে আসছে। " (৪) "গরিব মানুষের রক্ত চুষে খেলে জবাব দিতে হবে;ধরা খেতে হয়।
"
সর্বশেষ খবর হচ্ছে নির্ধারিত বয়সের বেশি সময় বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান পদে থাকার কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণ করা হয়েছে! ড. ইউনূস এখন আইনিভাবে লড়াই করে যাচ্ছেন। নির্ধারিত বয়সটা আসলে কত? বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী কোনো বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ৬০ বছরের বেশি বয়সে ওই পদে থাকতে পারেন না। অপরদিকে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক ড. ইউনূসের বয়স এখন ৭০ বছর। তার মানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখ ফাঁকি দিয়ে ড. ইউনূস ১০ বছর বেআইনিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন!
প্রথম বাংলাদেশীর নোবেল প্রাপ্তির পর বিভিন্ন শ্রেনীর নাগরিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটা অংশ শর্ত সাপেক্ষে আনন্দ প্রকাশ করেছিলো। ক্ষুদ্র ঋনের জালে আটকা থেকে এসব মানুষ নি:শর্ত আনন্দ প্রকাশ করতে পারেনি।
তবুও নোবেল বলে কথা! খুশিতে পুরো গালে হাসতে না পারলেও ফাটা কপালের নিচের চোখ দু’টো কিঞ্চিত জ্বলে উঠেছিলো। অপরদিকে ক্ষমতার আশেপাশে ঘুরঘুর করা শীর্ষ রাজনীতিবিদরা প্রতিযোগিতায় নেমেছিলো ইউনূস বন্দনায়। জীবিত মানুষের নামে মাজার করার রেওয়াজ থাকলে পুরো বাংলাদেশ ভরে যেতো “ইউনূস মাজার” এ। যদিও সুদের বেড়াজালে ঘুরপাক খাওয়া ঋণগ্রস্থ মানুষের কপালে থেতলে আছে ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার। খুশির উল্লাসে অনীহা দেখানো গরীবের জাতকে শেখানো হয়েছিলো ‘ন’ তে নোবেল একটি পুরস্কারের নাম, ‘ই’ তে ইউনূস আমাদের পূর্ণিমার চাঁদ।
রাজনৈতিক লিপির এ পাঠ উচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন মানুষকে শোনানো হচ্ছে বেঈমান, নিকৃষ্ট এক শোষক রাজার গল্প।
চিরাচরিত বিরোধিতার রীতি ভুলে বিরোধীদল এ ইস্যুতে কোন কথা বলছে না। নোবেল বিজয়ের পর বেগম জিয়ার অভিনন্দন বার্তার কথাগুলো সত্য প্রমাণের তাগাদা পাচ্ছেন না বিএনপি। এরশাদ সাহেবতো সরকারেরই অংশ।
আবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশি কথা বলা উনার জন্য নিরাপদও না। বামপন্থী দলগুলো আগেও ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ঘরোয়া উত্তেজনায় ভুগতো, এখনো তাই ভোগে। পরিস্থিতি এমন, বিশ্ব নেতৃবন্দের অনেকেই ড. ইউনূসের পাশে থাকলেও দেশের পুরো রাজনীতি উনার বিপক্ষে চলে গেছে। কিন্তু জনগনের পক্ষে বিপক্ষে থাকা না থাকা নিয়ে কোন হিসেব কেউ করছেন না। না ড. ইউনূস, না সরকার, না বিরোধী দল।
ক্ষুদ্র্রঋণ একটি জনপ্রিয় ব্যবসার নাম। গ্রামীণ ব্যাংকের সফলতার পর জাতীয় এবং আঞ্চলিকভাবে পুরো বাংলাদেশে কলেরার মতো মহামারি লেগেছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানে। ক্ষুদ্রঋণ এখন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংসারেরই একটা অংশ। অভাবে জর্জরিত মানুষগুলো ঘূর্নির মতো বিভ্রান্ত হয়ে ব্যক্তিগত ঋণ থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণে দেউলিয়া হচ্ছে প্রতিদিন। এসব পুরোনো সত্য খবর।
১৯৮৬ সাল থেকে বর্তমান সরকার স্বীকৃত চোষাচুষি চালিয়ে আসছে গ্রামীণ ব্যাংক। তখন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কোন সরকার গ্রামীণ ব্যাংকসহ অন্যান্য আধুনিক দাদন মহাজনদের উপর নজরদারি করেননি। ভিনদেশী এক অনুসন্ধানী সাংবাদিক এসে আমাদের সম্ভ্রান্ত রাষ্ট্রীয় অভিভাবকদের চোখের পর্দা সরিয়ে দিয়েছেন। তার মাথার উপর লবন রেখে তেতুল খেয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দল।
২০০৭ সালের পরিবর্তিত শাসন ব্যবস্থায় ড. ইউনূস আবির্ভুত হতে চেয়েছেন জাতির কান্ডারি হিসেবে।
রাজনীতিতে আসার ঘোষনা দিয়ে তুমুল আলোচিত এ ব্যক্তির আমলনামায় লিপিবদ্ধ হয়ে যায় শনির দশা। যা এখন ভোগ করে যাচ্ছেন। এ দেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ভ্যানিটি ব্যাগ চুরি থেকে শুরু করে পুকুর চুরির মামলাও হয়। সম্মানহীন রাজনৈতিকরা প্রতিপক্ষের সম্মানহানি করার সাথে সাথে নিজ সম্মান বিসর্জনের প্রস্তুতিও নিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রচলিত রাজনীতির বাইরে থাকা ড. ইউনূস রাজনীতির পলিটিক্সটা আন্দাজ করে পেরে ওঠেননি বলেই নিজ সম্মানের বীমা করিয়ে রাখতে পারেননি।
দেশের মানুষ গ্রামীণ ব্যাংককে রক্তচোষা বললেও পলিটিশিয়ানরা বলেছিলেন ধোয়া তুলসী পাতা। এখন যখন পলিটিশিয়ানরা রক্তচোষা বলছেন, তখন সাধারণ মানুষ গালের একপাশ দিয়ে চিকন হাসি ছেড়ে দিয়ে নির্ভার হয়। এ ভয়াবহ তিরস্কার অনুধাবন করার মতো বোধ ওনাদের নেই। এ দেশে কোন কিছু নিষিদ্ধ হবার শর্ত হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে টোকা দেয়া। ২৪ বছর ধরে ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ পেতে যাওয়া ড. ইউনূস ১০ বছর ধরে বেআইনিভাবে একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান হিসেবে কাজ করে গেছেন এবং নোবেল জিতেছেন এবং দলবিভেদ ভুলে শীর্ষসারির সবগুলো রাজনৈতিক দলের বুকের উষ্ণতা পেয়েছেন।
আর এখন আকাশে বাতাসে ভেসে চলছে ঠাকুরমার ঝুলির গপসপ। ড. ইউনূস কেন রাজনীতিতে নামতে চেয়েছিলেন এবং কেনইবা ক্ষমতাজীবীদের নিয়ে কটু কথা বলেছিলেন! যার খেসারতে একজন মহল্লার পাতিনেতাও ইউনূসকে সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দিচ্ছেন। অথচ ড. ইউনূস সম্পর্কে হয়তো দু’চার লাইনের বেশি কোন তথ্য তার কাছে নেই।
দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি একজন ড. ইউনূসকে বানিয়েছে সুদ ব্যবসায়ী। একজন মেধাবী অর্থনীতিবিদের পরিচয় এখন রক্তখোর মুদ্রাজোঁক।
অলস সরকারের নাকের ডগায় সুষম পরিকল্পনাহীন ঋণ বিতরণ করে দেশের এনজিওগুলো রাষ্ট্রকে পরিণত করেছে ভাঙাচোরা কাচারি ঘরে। আর এসব ব্যর্থতার পেরেক ঠোকা হয় অসহায় নাগরিকের বুকে পিঠে। আসলে মূলকথা হচ্ছে একজন মেধাবী ইউনূস কিংবা ফজলে হাসান আবেদের পরিকল্পনা বুঝে ওঠার মতো দেমাগ শাসকগোষ্ঠীর নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক অক্ষম গ্রামীণ ব্যাংক বা ব্র্যাকের কার্যক্রমে নজরদারি করতে। ওনারা কেবল পারবেন নির্বোধ জনগনকে কাগজের ঠোংগার মতো মুছড়িয়ে পকেটে পুরে রাখতে এবং প্রয়োজন শেষে দলা করে ফেলে দিতে।
এর বাইরে কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই। একজন বিদেশী টম হেইনমান এসে কানে কানে বলে যেতে হয় “ওই বাংলাদেশ, তোমাদের নোবেল বিজয়ী একজন দুর্নীতিবাজ!” না, এ লজ্জা কোনভাবেই বাংলাদেশের সাধারণ জনগনের নয়। দু:শাসন আর অনাচারে ডুবিয়ে রেখে সাধারণ মানুষকে অতটুকু বুদ্ধিমান করে তোলেনি, যটতুকু বুদ্ধিমান করে তুললে একজন নাগরিক নির্বাচিত শাসকের কাছ থেকে নায্য হিস্যা বুঝে নিতে পারে।
একদিকে ধর্ম ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব্য এবং ক্ষমতার অপেক্ষায় থাকা চাতক বিরোধীদল, অন্যদিকে নাগরিক দুর্ভোগ মোকাবেলায় ব্যর্থ অদূরদর্শী শাসকগোষ্ঠী। সাধারণ মানুষ মাঝ দরিয়ায় লবনজল খেয়ে ডুবে আছে নাকউঁচু বাস্তবতায়।
বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, যোগ্য বিকল্পের অভাবে জ্বলে উঠতে পারছে না। তার উপর অস্থিতিশীলতায় সুযোগ সন্ধানী জলপাই গোষ্ঠীতো আছেই। সবকিছু মিলিয়ে দীর্ঘমেয়াদী কচ্ছপগতির পরিবর্তনের সামনে চিকন কোমরের মানুষদের হাতের গামছা হাতেই থাকছে। নইলে দেশের মেধাবী মানুষদেরকে দুর্নীতিবাজ হতে প্রচোরিত করা এবং পরিশেষে চরিত্রহণনের বিচার চেয়ে কোমরে গামছা বেঁধে নেমে যেতো সাধারণ জনগন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।