আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাল্যবিয়ে দেশকে ভয়াবহতার দিকে ঠেলে দিচ্ছú

বাল্যবিয়ে দেশকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ কারণে দেশের ৪৩ শতাংশ শিশু অপুষ্টি নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে। আর এ সমস্যার সমাধানে গণমাধ্যমের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যম চাইলে বাল্যবিয়ের মতো সামাজিক সংকট মোকাবিলায় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ইংরেজি ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নেতৃস্থানীয়রা অংশ নেন। এতে বলা হয়, দেশের এক-তৃতীয়াংশ কিশোরী বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে। ৪৩ শতাংশ শিশু অপুষ্টি নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে। সভায় বাল্যবিয়ে বন্ধের বিগত কর্মসূচিগুলোর সম্পর্কে এ মুহূর্তে গণমাধ্যমের করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাল্যবিয়ে বন্ধে কাজ করা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও সভায় অংশ নেন। আলোচনার সূচনায় ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, বাল্যবিয়ে দেশকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বাল্যবিয়ের কারণে অপরিণত বয়সে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অসংখ্য কিশোরী যেমন অল্প বয়সেই জটিল রোগের শিকার হচ্ছে, তেমনি অপুষ্টি নিয়ে অসুস্থ শিশুর জন্ম দিচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪৩ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার হয়ে জন্ম নিচ্ছে। তিনি বলেন, পরবর্তী প্রজন্ম এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের শঙ্কিত না হয়ে উপায় নেই। এ কারণেই এ মুহূর্তে কীভাবে গণমাধ্যম বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে ভাবতে হবে।

সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধের খবর প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের নানা ব্যর্থতা আছে। তিনি এ সমস্যা মানুষের মাঝে তুলে ধরতে বিভিন্ন সংবাদপত্রের যে পাঠক সংগঠন আছে সেগুলোকে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসব সংগঠনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে বাল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনতামূলক অনেক কর্মসূচি নেওয়া যায়। দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক মাহবুবুল আলম বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে গণমাধ্যম কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা পর্যালোচনার জন্য দু-তিন মাস পর পর গণমাধ্যমের নেতৃস্থানীয়দের বসা উচিত। মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে ইলেকট্রনিক মিডিয়া। বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বিটিভি দেখে, বিটিভিতে এ ধরনের অনুষ্ঠান বেশি প্রচার করা উচিত। এ ছাড়া বেসরকারি টিভিতে প্রাইম টাইমে এ ধরনের সচেতনতামূলক প্রচার অব্যাহত রাখলে বাল্যবিয়ে বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সহজ হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, গণমাধ্যম চাইলে বাল্যবিয়ের মতো সামাজিক সংকট মোকাবিলায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব। এ জন্য সব সংবাদপত্র এবং বেসরকারি টেলিভিশনে একযোগে প্রচার চালাতে হবে। খবর, অনুষ্ঠান যাই হোক বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত প্রচার করা হলে অবশ্যই সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বাল্যবিয়ে নিয়ে যেসব উন্নয়ন সংগঠন তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছে তাদের একটি সমন্বিত তথ্য সেল থাকা দরকার। ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্সের শর্তেই দিনের একটি অংশে জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচারের কথা রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ টেলিভিশন তা করে না।

চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজ বলেন, চ্যানেল আই জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য নানা অনুষ্ঠান প্রচার করছে। বাল্যবিয়ে বন্ধেও চ্যানেল আই অনুষ্ঠান প্রচার করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বলেন, প্রথম আলো এসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নিয়মিত প্রচার চালানোর এক বছরের মধ্যে এসিড সন্ত্রাস প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। এভাবে বাল্যবিয়ে বন্ধেও বড় ভূমিকা রাখা যায়।

সভায় আরও অংশ নেন সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান, ডেইলি স্টারের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শামসুর রহমান মোমেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের পরিকল্পনা সম্পাদক রাশেদ আহমেদ, চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী সম্পাদক আবদুল মালেক, বগুড়ার দৈনিক করতোয়া সম্পাদক মোজাম্মেল হক লালু। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন, অ্যাকশন এইড, প্ল্যান বাংলাদেশ এবং নিজেরা করির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বাল্যবিয়ে বন্ধসংক্রান্ত প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা আলোচনায় অংশ নেন।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.