সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,
এসএসসি পরীক্ষা দেয়া হলো না রংপুরের মেধাবী ছাত্রী টুম্পা আখতার রুমার। তার আগেই ইভটিজিংয়ের জ্বালাতন সইতে না পেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রুমা।
এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে রংপুর সদর উপজেলার উত্তম বানিয়াপাড়া গ্রামে। স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা ইভটিজার নাজমুল ইসলাম নাহিদকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা তিনজনকে আসামি করে গতকাল রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
এদিকে এলাকাবাসী ইভটিজারদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সদর উপজেলার উত্তম বানিয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর নুর ইসলামের মেয়ে রংপুর রাইফেলস পাবলিক স্কুলের ছাত্রী রুমা। চলতি বছর তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। স্কুলে যাওয়া আসার পথে নানাভাবে উত্ত্যক্তসহ প্রেম, কুপ্রস্তাব করতো একই গ্রামের ওহাব আলীর ছেলে নাহিদ। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশও বসে।
সালিশে নাহিদকে জুতাপেটা করা হয়। কিন্তু এতেও সে ক্ষান্ত হয়নি। উত্ত্যক্ত করার পাশাপাশি মোবাইলে নানা ধরনের বাজে ম্যাসেজও দিয়েছে সে। বৃহস্পতিবার ছিল রুমার মডেল টেস্ট বাংলা পরীক্ষা। পরীক্ষা দিয়ে সে বিকালে বাড়ি আসার পথে আবারও নাহিদ উত্ত্যক্ত করে অশালীন কথাবার্তা বলে।
এক পর্যায়ে বখাটে নাহিদ তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় এবং রুমার বড়ভাই জহুরুল ইসলামের মোবাইলেও তার বোন সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেস দেয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে রুমা বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে সন্ধ্যায় ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর আগে রুমা চিরকুটে লিখে যায়, তার মৃত্যুর জন্য বখাটে নাহিদ, তার মা ও নানী দায়ী। রুমার আত্মহত্যার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইভটিজার নাহিদকে আটক করে পুলিশে দেয়। এদিকে কোতোয়ালি থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে রুমার ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে
ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
পরে তার লাশ উত্তম বানিয়াপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। রুমার লাশ এলাকায় পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শত শত নারী-পুরুষ রাস্তায় বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জোনাব আলী, জয়নাল আবেদীন, খয়বর আলী, আমিনা খাতুন, নিহতের ভাই জহুরুল ইসলাম প্রমুখ। তারা অবিলম্বে নাহিদ, তার মা নাজমা বেগম ও নানী কদবানুর ফাঁসি দাবি করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হায়দার আলী মোল্লা জানান, নিহতের বাবা নুর ইসলাম বাদী হয়ে ইভটিজার নাজমুল ইসলাম নাহিদ, নাজমা আখতার ও নানী কদবানুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।