আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বর্গ সুখ



রিকশা খুজছিলাম। যাব নাবিস্কো থেকে তেজগাও সাব রেজিস্ট্রি অফিস। এক বুড়ো রিকশাওয়ালা অনেক আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এলেন। সাধারনত বুড়ো রিকশাওয়ালাদের এ্যাভয়েড করার চেষ্টা করি। একেতো আস্তে চালায়,আবার ভাড়াও দাবি করে বেশী।

অল্প পথ টেনে এসেও তাদের মনে হয়,অনেক মাইল পেরিয়ে এসেছে। তাছাড়া,মেজাজটাও হয় খিটখিটে। কিন্তু এই বুড়োর চোখে কি এক আকুতি ছিল,চেহারায় কেমন একটা মায়াবি আর্তি..না করতে পারিনি। ভাল করে খেয়াল করতেই বুঝলাম,বয়স অন্তত ৬৫-৭০ হবে। খারাপই লাগলো ভেবে।

এই বয়সী একটা মানুষ এত অসহায়!যে বয়সে মানুষ নাতি নাতনী নিয়ে আনন্দ করে,যে বয়সে ছেলে মেয়ের সেবা যত্নে একটু আরামে থাকার কথা,সে বয়সে কিনা জিবীকার টানে রিকশা চালাতে হচ্ছে! "খবরদার,অতিরিক্ত হাটাচলা করবেননা কমপ্লিট বেডরেষ্টে থাকবেন"-ডাক্টারের এমন সতর্কবানী,ছেলেমেয়েদের অনুযোগ মাখা শাসন..এই নিয়েইতো জীবনটা হবার কথা ছিল আরামের, স্বাচ্ছন্দের। অথচ দুমুঠো খাবারের আশায়, জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় রোদে পুড়ে ,বৃষ্টিতে ভিজে উদায়স্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। শক্তিতে কুলোয়না,তাও মুক্তি নেই.. ভাড়া ছিল ১০ টাকা। দুটি দশ টাকার নোট বাড়িয়ে দিলাম। কাঁপাকাঁপা হতে নোটদুটো নিয়ে আমার গায়ের উপর ঝাঁপিয়েই পড়লেন প্রায়।

প্রথমটায় চমকে উঠেছিলাম। পরে বুঝলাম,মাথায় হাত বুলাচ্ছেন,আশীর্বাদের বৃষ্টিতে ভিজিয়ে চলেছেন আমাকে। মুখের সমস্ত বলি রেখা মিলেমিশে হাসিতে হাসিতে আলো ছড়াচ্ছিলো যেন। অকৃত্রিম আনন্দে স্বর্গীয় আলোয় সমস্ত চেহারা উদ্ভাসিত। মনটা প্রশান্তিতে ভরে গিয়েছিল।

একটা মানুষকে খুশী করার মাঝে যে কি আনন্দ,কিযে সুখ। আফসোসই হল শেষে,কেন ১০০ টাকাই দিলামনা?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.