ছাত্র
ইউরোপ বা আমেরিকা সবসময়ই আমাদের হাতছানি দেয়। উন্নত দেশ। সেখানে গেলে নিশ্চিত একটি ভবিষ্যৎ পাওয়া যাবে। অনেক অর্থ উপার্জন করা যাবে, দূর্নীতি হবে না, ছেলেমেয়েদের উন্নত শিক্ষার ব্যবস্থা হবে। সর্বোপরি সেদেশের সিটিজেনশিপ পাওয়া যাবে।
মোটামোটি বড় দাগে এটিই হলো উদ্দেশ্য।
এই সব সুবিধাগুলো পেতে হলে যে কতো কঠিন বাস্তবতা পার হতে হয় তার উপরই একটি অত্যন্ত ভালো মুভি ক্রসিং ওভার। পৃথিবীর অনুন্নত দেশের নাগরিকরা অবৈধভাবে বর্ডার পার হয়ে উন্নত দেশে পাড়ি জমান। প্রায় প্রতি নিয়তই আমরা খবর পাই অবৈধভাবে বর্ডার পার হতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। বৈধ-অবৈধ, স্টুডেন্ট ভিসায় আমাদের দেশের তরুণরাও অনেক পূর্বে থেকেই উন্নত দেশে যাচ্ছেন।
তাদের আশা এক সময় না এক সময় সিটিজেনশিপ পেয়ে যাবেন। কিন্তু এই জন্য বিভিন্ন ধরনের বিপদও হতে পারে। যেমন, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিচ্ছেদ, ব্ল্যাকমেইলিং কিংবা জেলও হতে পারে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
মুভিটির একটি বড় দিক হলো ছোটখাটো ব্যাপার থেকে শুরু করে বর্তমানে সাড়া পৃথিবী জুড়ে যেটি সমালোচিত অর্থাৎ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের যে সন্দেহের চোখে দেখা হয় তা ও উঠে এসেছে। তবে একটি ব্যাপার এই মুভি থেকে বোঝা যায়, সেখানে গেলে গ্রীন কার্ড বা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য অনেকেই অনেক ধরনের সেক্রিফাইস করেন।
আর এই সেক্রিফাইসগুলো যে অনেক সময়ই মোটেই নৈতিক পর্যায়ে পড়ে না তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এমনকি যারা এই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন তারাও শেষ পর্যন্ত অনুশোচনায় ভোগেন। তাই যারা ইসলাম ধর্মের লোক সেখানে যান তাদের পূর্বেই ঠিক করে নেওয়া ভালো যে সেখানে তাদের চলাফেরা, কথাবার্তা, বেশবুষা বিশেষত নিজের উপস্থাপনটা কেমন হবে। এর একটি প্রধান কারন হলো ইসলাম ধর্মের লোকরা প্রতি নিয়তই বিভিন্ন জায়গায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন কেবলমাত্র মুসলমান হওয়ার জন্য।
আমাদের দেশে প্রতি নিয়তই জিরো টলারেন্স, ট্রান্সপারেন্সী, ল এন্ড অর্ডার, সেক্সোয়াল হেরাসমেন্ট নিয়ে মতামাতি হয়।
তবে এই সমস্যা যে শুধু আমাদের এখানেই আছে তা ঠিকনা। গ্রীন কার্ড পাওয়ার জন্য এক অস্ট্রেলিয়ান মেয়ে পরে যান ব্ল্যাকমেইলিং এ। গ্রীন কার্ড পাওয়ার বিনিময়ে তাকে নিজের ইচ্ছার বিরুধেও ইমিগ্রান্ট কর্মকর্তার সাথে সেক্স করতে হয়। পরে অবশ্য ঐ কর্মকর্তাকে এরেস্ট করা হয়।
স্টুডেন্ট ভিসায় যারা যান তাদের বৈধভাবে কাজ করার পারমিট আছে উয়িকলি বিশ ঘন্টা।
কিন্তু তারা নিজের খরচ এবং দেশে টাকা পাঠানোর জন্য লোকিয়ে কাজ করে থাকেন যেটি ইমিগ্রান্ট আইন অনুযায়ী বেআইনী। আর এই লোকদের ধরার জন্য প্রায়ই পুলিশ বিভিন্ন প্রতিষঠানে অতর্কিতে রেইড দেয়। যাদের আটক করা হয় তাদের হয়তো জেল খাটতে হয় নতুবা স্বদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঠিক একই সমস্যায় পড়েন একটি স্পেনিশ মেয়ে। একটি ফ্যাকটরিতে কাজ করার সময় ইমিগ্রান্ট পুলিশ হানা দেয়।
এবং আটক করেন মেয়েটিকে, সাথে আরো অনেক অবৈধ কর্মী। অনেক রিকুয়েস্ট সত্ত্বেও পুলিশ তাকে ছাড়েন না। শেষ পর্যন্ত মেয়েটির লাশ পাওয়া যায় বর্ডার এর কাছাকাছি। সম্ভবত পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে এই দূর্ভাগ্যের শিকার হন।
মুভিটিতে বাংলাদেশকে নিয়ে আসা হয়েছে।
এখানে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের এক সময়ের অভিনেত্রী নূপুর (আইএমডিবি সাইটে নাইলা আজাদ)। বাংলাদেশি পরিবারকে পরিবার বিচ্ছেদের সম্মুখীন হতে হয়। যে মেয়ে আমেরিকাতে জন্মগ্রহন করেনি অথচ সেখানে আছেন তাকে আবার স্বদেশে ফেরত আসতে হয়। কিন্তু থেকে যায় তারই ছোট ভাই বোন। এটি আসলেই একট করুন দৃশ্য।
এমনও দেখা যায় সেখানকার উঠতি স্পয়েলড ইয়ংদের হাতে পড়ে সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়ার ঘঠনাও ঘটছে। তেমনি এক চাইনিজ বালক পড়ে যান হাইজ্যাককারী দলের হাতে। যদিও তিনি পরে ঘঠনাক্রমে বেচে যান। তেমনি ভাগ্যক্রমে গ্রীন কার্ড পেয়ে যান এক ইহুদি যুবক।
হেরিসন ফোর্ড অভিনিত মুভিটির ডিরেক্টর ওয়েন ক্র্যামের।
ড্রামা নির্ভর এই মুভিটি আমেরিকাতে প্রথমে সিমিতভাবে রিলিজ দেওয়া হয় ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০০৯-এ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।