রহস্যজনক কোনো কারণেই হবে হয়তো, আমাদের জাতীয় জীবনে ওসমানী একটি আপাঙক্তেয়। অন্য দশজন পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধদের নামের সাথেই পাইকারীভাবে উচ্চারিত হয় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর নামটি। আর হবে না-ই বা কেন! বঙ্গবীরকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক স্বীকার করতেই তো অনেকের আপত্তি।
আজব এক দেশে বাস করি আমরা !
রাজাকার হিসেবে অভিযোগ আছে, এমন লোককেও আমরা দেশের রাষ্ট্রপতির আসনে বসিয়ে দেই। চিহ্নিত রাজাকারদের সংসদে পাঠাই।
এমনকি ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের দাগ লেগে থাকা পতাকাঅলা গাড়ির পর্যন্ত মালিক বানিয়ে দেই অনেক রাজাকারকে। অথচ যে লোকটি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির প্রত্যাশার প্রদীপটি জ্বালিয়ে সদর্পে চষে বেড়ালেন জুলুমের অন্ধকারে, সেই মানুষটির নাম আমরা মুছে ফেলি ইতিহাস থেকে! আবার আমরা চেষ্টা করছি ইতিহাস বিকৃতির ধারাকে রুখে দাঁড়াতে!
আশ্চর্য!
মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস জুড়ে ওসমানী ছিলেন মাঠে। যুদ্ধ থেকে জীবন নিয়ে ফিরতে পারারচে'’ না পারাই ছিলো সেখানে সহজ। তিনি ফিরলেন। অন্ধকার জয় করেই ফিরলেন।
আলোর মিছিলে আহবান জানালেন বাঙালি জাতিকে। সবাই এসে জড়ো হলো। মুক্তিপাগল মানুষ পতঙ্গপালের মতো এসে জড়ো হতে থাকলো রেসকোর্স ময়দানে। সবাই ইতিহাসের অংশ হতে চায়। স্বাধীন বাংলায় প্রথম শ্বাসটি তারা নিতে চায় আমাদের সূর্য সন্তানদের হাতে হাত রেখে।
পারলে কিছু থু থুও নিক্ষেপ করতে চায় পাকিস্তানি অই পিশাচগুলোর মুখে।
২৪ বছর জ্বালাতন করেছে অই পশুগুলো। তাদের বিষাক্ত ছুবলে বিক্ষত হয়েছে আমার সবুজ চত্বর। সবুজ শ্যামল প্রান্তরকে ওরা ভাসিয়ে দিয়েছে লালের বন্যায়। ২৬শে মার্চ ১৯৭১ থেকে নিয়ে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১, এই ৮ মাস ২২ দিনে আমাদের উপর বসিয়েছে অরা মরণ কামড়।
পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে গেছে, তখন পাল্টা আঘাত হেনেছে বাঙালি জাতি। বিষদাঁত ভেঙে দিয়েছে তাদের।
১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ লেজ সোজা করে দাঁড়িয়েছে অই পশ্চিম পাকিস্তানি কুকুরগুলো। গত ৯ মাস ওরা পাগল হয়ে গিয়েছিলো। কুত্তা যব্ পাগল হো যায়ে, তো উস্কো গুলি মারদেনি চাহিয়ে।
বাঙালি জাতি উদারমনা। পাগলা কুকুরগুলোকে গুলি না করে ফিরে যাবার সুযোগ দিলো। ঢাকার রেসকোর্স ময়দান ভরে উঠলো কানায়-কানায়।
পশ্চিম পাকিস্তানি মিলেটারীরা আজ নাকে খত্ দেবে। আত্মসমর্পনের দলিলে স্বাক্ষর করে লেজ গুটিয়ে ফিরে যাবে যেখান থেকে এসেছিলো।
লক্ষ বাঙালির পদভারে মুখরিত রেসকোর্স ময়দান। মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বঙ্গবীর ওসমানী কখন আসবেন! স্বাধীন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যুদ্ধের হাল ধরেছেন বঙ্গবীর ওসমানী। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের মূল বেদিত যে কেবল তাকেই মানায়।
কিন্তু...
বাকিটুকু পড়তে চাইলে এখানে চাপুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।