আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি রূপগঞ্জ বিদ্রোহ ও অনেক ভাবনা

my country creat me a ginipig

একটি রূপগঞ্জ বিদ্রোহ ও অনেক ভাবনা মেহেদী হাসান পলাশ আর্মি হাউজিং স্কীমের(এএইচএস) জমি কেনা বেচা নিয়ে সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর ঘটে গেলো একটি ভয়াবহ রক্তাত্ত সংঘর্ষ। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১ জনের নিহত হবার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক, নিখোঁজ রয়েছে কয়েকজন। ঘটনার পর পুলিশ অজ্ঞাতনামা কয়েক হাজার লোককে আসামী করে মামলা দায়ের করায় এলাকাটি এখন পুরষ শূন্য। এলাকায় এখানো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে, যে জমি নিয়ে রূপগঞ্জের মানুষের মনে এত বিদ্রোহ সেই জমি কিন্তু তাদের হাতে খুব বেশী নেই। রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষ চাইলেও সেই জমি যে কারো কাছে বিক্রি করতে পারে না। বেশিরভাগ েেত্রই ঐ এলাকার জমি দালালের মাধ্যম ছাড়া অন্য কারো কাছে বিক্রি করা যায় না। এ েেত্র ঐ এলাকায় গড়ে উঠেছে বিশাল দালালচক্র। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় পেশা হয়ে উঠেছে জমির দালালী।

তারা জমির ক্রেতা-বিক্রেতা দুই পরে নিকট থেকেই পেয়ে থাকেন বিশাল কমিশন। এই বাইরেও দূর্বল লোকদের জমি কেনাবেচায় তারা ঠকিয়ে থাকেন বিরাট অঙ্কে। এই দালাালদের ব্যবহার করেই ডেভলপার কোম্পানীগুলো স্থানীয় জনসাধারণের নিকট থেকে নানা কায়দা কৌশল করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে, জোর করে, উচ্ছেদ করে, হামলা মামলা করে জমি দখল করে অথবা বিক্রয়ে বাধ্য করে। এমনকি অনেক েেত্র হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে এই কোম্পানীগুলোর দালালরা। তা নিয়ে এলাকার মানুষের মনে বিশাল ােভ থাকলেও এত বড় বিােভের ঘটনা ঘটেনি।

কিন্তু সঙ্গত কারণেই সেনাসদস্যদের জমি ক্রয়ের েেত্র ডেভলপার কোম্পানীর মতো বাড়াবাড়ি করা সম্ভব নয়। কিছুটা অনিয়ম বা ভুল থাকতে পারে। কিন্তু সেনাসদস্য বলেই তাদের সীমাবদ্ধতাও অনেক। কাজেই একটা স্টান্ডার্ড তাদের রাখতে হয়েছে। রূপগঞ্জের লোকরাও তা বিশ্বাস করেন।

তবুও কেন বেসরকারী ডেভলপারের শত অত্যাচার সয়েও যে জনতা মুখ বুঁজে ছিল সেনা আবাসন স্কীমের বেলায় তারা এমন বিদ্রোহী হয়ে উঠল? এটি কি স্বত:স্ফুর্ত বিদ্রোহ ছিল, নাকি এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র, দ্বন্দ্ব, রাজনীতি, আর্থিক লেনদেন কিম্বা সুদুর প্রসারী কোনো চক্রান্ত ছিল? বিষয়টির খোঁজ নিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে রূপগঞ্জে আমার নিজস্ব কিছু সোর্সের সাথে আলাপ করেছি। তাদের সাথে সে আলোচনায় রূপগঞ্জ বিদ্রোহের অন্তরালের অনেক আজানা কাহিনী বেরিয়ে আসেছে। এ লেখায় সে বিষয়ে কিছু আলোচনার আশা রাখি। নাটের গুরু জমির দালাল এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, রূপগঞ্জ বিদ্রোহের মূল হোতা স্থানীয় কিছু জমির দালাল। এ জমির দালালরা আবার স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী।

ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পর্যায়ের রাজনীতির শীর্ষ পদগুলো তাদের দখলে। স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত পদগুলোতেও তারাই নির্বাচিত হন। ফলে শুধু সাধারণ মানুষই নয় স্থানীয় পুলিশ ও প্রসাশন ও তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ব্যবস্থা নিতে বেশিরভাগ সময়ই অসহায়ত্ত্বে ভোগে। রূপগঞ্জ এলাকার সাধারণ মানুষের জমি ডেভলপার কোম্পানীগুলোর কাছে বিক্রি করে দেয়ায় তাদের কাজ। এ েেত্র ক্রেতা বিক্রেতা দু’প থেকেই তারা কমিশন নেন।

অনেক সময় ডেভলপার কোম্পানীগুলোর কাছ থেকে দর নিয়ে এই দালালরা অনেক কম দামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে তাদের লাভ হয় বিপুল অঙ্কে। তাদের এড়িয়ে কোনো সাধারণ মানুষ সরাসরি ডেভলপার কোম্পানীগুলোর কাছে জমি বিক্রি করতে পারেনা। ডেভলপার কোম্পানীগুরোর পে সাধারণ মানুষের জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে জবর দখল, উচ্ছেদ, বিক্রিতে বাধ্য করা, হুমকি, হয়রানী এমনকি হত্যার মতো ঘটনাও এরা ঘটিয়ে থাকে। কয়েক বছর আগেও রূপগঞ্জের জমির দাম এত ছিলনা।

নীচু জমি ২-৩ লাখ টাকা বিঘার বেশী দামে বিক্রি হতো না। কিন্তু রাজউকের পূর্বাচল স্কীম, ড্যাপ ও আর্মি আবাসনের স্কীমের পর এই জমির দাম হঠাৎ করে বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে। মাত্র ৫ বছরের মধ্যে এই এলাকার জমির দাম কোনো কোনো েেত্র ২০গুণ বেড়েছে। রাজউকের পূর্বাচল প্রজেক্টের আওতায় এই এলাকা অধীভূক্ত হওয়ায় বিভিন্ন ডেভলপার কোম্পানী রাজউকের পূর্বাচল প্রজেক্টের আশেপাশের জমি কিনতে এই এলাকায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের একটি বড় ডেভলপার কোম্পানী এই এলাকার জলমগ্ন জমি ২-৩ লাখ টাকা দরে ক্রয় করেছিল, পরে আর্মি হাউজিং স্কীম চালু হওয়ায় তারা তাদের ক্রয়কৃত বিপুল পরিমাণ জমি ১৮-২০ লাখ টাকা দরে সেনা সদস্যদের কাছে বিক্রয় করেছে।

সেনাসদস্যরা পরবর্তীতে জমিক্রয়ের েেত্র সরাসরি ক্রয় না করে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে জমি ক্রয় শুরু করে। কিন্তু দালালরা সেনাবাহিনীর নাম করে সাধারণ বা একটু দূর্বল গোছের লোকদের সেনাবহিনীর নামে নানা ভয় দেখিয়ে সেনাসদস্যদের প্রদত্ত দরের থেকে অনেক কম দরে জমি বেচতে বাধ্য করে। আর এভাবে তারা কমিশনের বাইরেও বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। ধীরে ধীরে প্রতারণার বিষয়টি সাধারণ মানুষ জেনে যাওয়ায় তারা দালালদের মাধ্যম ছাড়া সরাসরি সেনাসদস্যদের কাছে জমি বিক্রির জন্য দাবী জানাতে থাকে। একপর্যায়ে সেনা সদস্যরাও জনগনের দাবী মেনে নিয়ে সরাসরি তাদের নিকট থেকে জমি কিনতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এতে করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের নিশ্চিত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় দালাল চক্র নাখোশ হয় এবং তারাই আর্মি হাউজিং স্কীমের নানা অপপ্রচার ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে উষ্কাতে থাকে। এরই চুড়ান্ত পর্যায়ে ২৩ অক্টোবর জনতার বিপ্লব সংঘটিত হয়। কাজেই রূপগঞ্জ বিদ্রোহের খলনায়ক কতিপয় জমির দালাল এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ডেভলপার কোম্পানীর ভূমিকা ড্যাপ, রাজউক, পূর্বাচল সিটি, আর্মি হাউজিং স্কীম চালুর পর একথা সকলেই বুঝতে পারছে রূপগঞ্জে আর কোনো কৃষি জমি থাকছে না। বরং তা হতে চলেছে রাজধানী ঢাকার আগামী দিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আবাসিক এলাকা।

ফলে দলে দলে ডেভলপার কোম্পানীগুলো ছুটে গিয়েছে রূপগঞ্জের দিকে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পায় বালু ও শীতলক্ষা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানের একটি বিরাট অংশ এএইচএস-এর দখলে। তারা বেশ বুঝতে পারে আবাসনের জন্য এই আদর্শ এলাকাটি তাদের দখলে আসলে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করতে পারতো। ফলে শুরু থেকেই ডেভলপার কোম্পানীগুলোর ঈর্ষা ছিল এই এএইচএস স্কীমের দিকে। অন্যদিকে শুরুর কিছুদিন পর এএইচএস জমির আওতা বাড়ানোর ফলে ডেভলপার কোম্পানীগুলোও ভীত হয়ে পড়ে এ ভেবে যে, ভবিষ্যতে এ স্কীমের আওতা যদি আরো বেড়ে তাদের প্রকল্প এলাকার মধ্যে পড়ে।

ফলে তারাও ভেতরে ভেতরে এএইচএস স্কীমের বিরোধী ছিল। প্রকল্পভূক্ত এলাকায় জমি কেনা নিয়েও এএইচএস ও হাউজিং কোম্পানীগুলোর মধ্যে শুরু হয়েছিল টানা পোড়েন। অন্যদিকে এএইচএস কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকল্প এলাকার একটি স্যাটেলাইট ইমেজ বা ম্যাপ প্রকাশ করে যা মূল প্রকল্পের চেয়ে কয়েকগুণ বড়। ফলে ঐসব এলাকার ডেভলপারগণ এএইচএস স্কীমের বিরোধী ছিল। কাজেই এএইচএস ব্যর্থ করতে ঐসকল ডেভলপার কোম্পানী শুরু থেকেই জনগণের মধ্যে নানা অপপ্রচার চালিয়েছে।

২৩ তারিখের জনবিদ্রোহে এসকল ডেভলপার কোম্পানীর ভূমিকা থাকতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জোরালেভাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে স্থানীয় নিরাপত্তা সূত্রগুলো মনে করে ২৩ অক্টোবরের জন বিদ্রোহের আর্থিক যোগান ঐসকল ডেভলপার কোম্পানীর নিকট থেকে এসেছে। বিশেষ করে বিদ্রোহী জনতার নির্দিষ্ট পোশাক সরবরাহ তাদের কাজ বলেই বেশিরভাগ সূত্রের সন্দেহ। তবে ডেভলপার কোমপানীগুলো এ কাজটি করে থাকলেও তা করেছে তাদের বিশ্বস্ত দালালদের মাধ্যমে। এমপি বনাম উপজেলা চেয়ারম্যান দ্বন্দ্ব রূপগঞ্জ বিদ্রোহের অন্তরালের খবর অনুসন্ধান করতে যেয়ে সবচেয়ে বড় যে কারণটি সামনে এসেছে তা হলো এমপি বনাম উপজেলা চেয়ারম্যান দ্বন্দ্ব।

এ দ্বন্দ্বের পেছনে রয়েছে অর্থ ও মতার স্বার্থ। রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর রাজনীতিবিদের চেয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসাবেই বেশী পরিচিত। এ বছরের এফবিসিসিাই সভাপতি পদে তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতা সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক এমপি জেনারেল সফিউল্লাহকে পেছনে ফেলে এবারই প্রথম তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন। জেনারেল সফিউল্লাহর জায়গায় গাজী সাহেবের নমিনেশন পাওয়ার ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রেখেছিলেন রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহজাহান ভূঁইয়া।

পরবর্তীকালে এই সাহজাহান ভূঁইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তার নির্বাচন নিয়েও রয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এমপি গাজী গোলাম দস্তগীরের সাথে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের অন্যতম কারণও এই জমির দালালী। এএইচ এস প্রজেক্টে জমি ক্রয়ের দালালী করতো কায়েতপাড়া ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি জায়েদ আলী।

তিনি এমপি’র লোক হিসাবে পরিচিত। উপজেলা চেয়ারম্যান সাহজাহান ভুঁইয়া চান তার ঘনিষ্ঠ লোক রূপগঞ্জ সদর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মশিউর রহমান তারেক এই কাজ করুক। কারণ এই দালালীর টাকা উর্দ্ধতন নেতাদের পকেটেও যায় বলে এলাকার লোকেরা বিশ্বাস করেন। সূত্রমতে, এমপি গাজীকে সাইজ করতেই সাহজাহান ভুঁইয়া এলাকার লোকদের ভেতরে নানা ধরণের কথা ছড়িয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে ও ২৩ অক্টোবর আন্দোলনের ডাক দেয়। এসময় সাহজাহান ভুঁইয়ার দলে যোগ দেয় সাবেক এমপি জেনারেল সফিউল্লাহ।

জেনারেল শফিউল্লাহও তার হারানো অধিকার ফিরে পেতে এককালের বৈরী সাহজাহান ভুঁইয়ার আহ্বানে সাড়া দিতে দেরী করেননি। আর্মির বিরুদ্ধে আন্দোলনে প্রভাবশালী এই সাবেক সেনাপ্রধান যোগ দেয়ায় এলাকাবাসীর সাহসও বেড়ে যায় বহুগুণে। ২৩ অক্টোবরের আহুত সমাবেশে তার প্রধান অতিথি হওয়ার কথা ছিল। ফলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। ২১ অক্টোবর এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর এএইচএস প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাসিমুল গনির সাথে বৈঠক করে এলাকাবাসীর মনোভাব জানান।

তিনি একইসাথে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে চারদফা দাবী জানান। এএইচএস কর্তৃপক্ষ সে দাবী মেনে নেয়। এছাড়াও তারা ওয়েবসাইট থেকে মাস্টার প্লান প্রত্যাহারেরও প্রতিশ্রুতি দেয়। ২১ তারিখ রাতেই উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়ার নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সাথে বৈঠক করেন। গোয়েন্দা সংস্থার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে এ বৈঠকে এএইচএস কর্র্তৃপক্ষ প্রতিনিধি দলের প্রায় সকল দাবী মেনে নেন।

উপজেলা চেয়ারম্যানও তার ডাকা ২৩ তারিখের সমাবেশ বাতিল করবেন বলে জানান। ২২ তারিখ দুপুর পর্যন্ত উপজেলা চেযারম্যান আগের রাতের বৈঠকের কথা এলাকাবাসীকে জানিয়ে তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। সমাবেশের ঘোষিত সভাপতি জেনারেল সফিউল্লাহও পিছটান দেন। কিন্তু এলাকাবাসীকে থামানো সম্ভব হয়নি। এদিকে উপজেলা চেয়াম্যানের এ ঘোষণার পরও ২২ তারিখ বিকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্্েরটারী মশিউর রহমান তারেক কায়েতপাড়ায় রহস্যজনক বৈঠক করে।

এ বৈঠকের পরই সন্ধ্যা থেকে বিচ্ছিন্ন মিছিল বের হতে শুরু করে যা পরদিন সকালে জন বি®েফারণে রূপ নেয়। বিএনপি’র সম্পৃক্ততা রূপগঞ্জ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সেনাবাহিনী ও জনগণকে মুখোমুখি করতে বিরোধী দল উস্কানী দিয়ে এই ঘটনা সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে রূপগঞ্জের বিভিন্ন সোর্সের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি। আসলেই কি সেনাবাহিনী জনতা মুখোমুখি করতে অথবা খালেদা জিয়ার বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ঘটনার সাথে রূপগঞ্জ বিদ্রোহের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা? তবে কোনো সূত্রেই এ খবর নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে রূপগঞ্জের বিএনপি সমর্থক এমপি প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত জমির দালালদের বিরুদ্ধে এমপি বনাম উপজেলা চেয়ারম্যান দ্বন্দ্ব প্রত্য ও পরোভাবে উষ্কানী দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ দ্বন্দ্বে ইন্ধন যুগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেছেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর ভূমিকা বাসস্থান মানুষের প্রধান মৌলিক চাহিদার একটি। আমাদের সংবিধানও রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি জনগণের বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে। দেশরার অতন্দ্র সৈনিকদের মাথা গুজবার নিশ্চয়তা নিয়ে কারো বিতর্ক থাকার কথা নয়। কাজেই নীতিগতভাবে এএইচ স্কীমের বিরোধিতা থাকার কোনো কারণ থাকতে পারেনা।

প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাসিমুল গণি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এএইচএস-এর সাথে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু জনগণের মাঝে সে কথা পরিষ্কার করা হয়নি। বরং তারা দেখেছে, এ প্রকল্পের সাথে সেনাবাহিনীর ম্যান এন্ড মেশিনারী ইনভলভ। পোশাকধারী চার প্লাটুন সেনাসদস্য সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করেছে। পোশাকধারী সেনাসদস্যরা টহল দিচ্ছে, জমি কেনা বেচা করছে, সাবরেজিস্টার অফিসে গিয়ে তাদের ক্রয় বিক্রয়ে বাধা দিচ্ছে।

সেনাসদস্যদের নিয়মিত সাধারণ্যে চলাফেরা তাদের কাছে স্বাভাবিক নয়, ফলে তারা আতঙ্কিত হয়েছে। অন্য দিকে এএইএস-এর বাইরে ঢালাও ভাবে জমির ক্রয় বিক্রয় হাতবদল বন্ধ করে দেয়ার ফলেও জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। এর ফলে শরিকানা জমির ভাগবাটোয়ারা ও ওয়ারিশের কাছে হস্তান্তরও বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া এটি একটি কর্তৃত্বমূলক মনোভাব। তাদের একমাত্র পথ হওয়া উচিত ছিল আপোষে জনগণকে বুঝিয়ে, উপযুক্ত তিপুরণের মাধ্যমে জমি ক্রয় নিশ্চিত করা।

তাদের প্রকল্প সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেয়া, যেকোনোভাবে গুজব সৃষ্টি হতে না দেয়া, এলাকাবাসীর সাথে সদ্ভাব তৈরী করা। ২৩ অক্টোবরের মতো পরিস্থিতির উদ্ভব নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরো সতর্ক রাখা। ২২ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে মিছিল বের করার পর থেকেই পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়ন করা এবং প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নেয়া। তাছাড়া সেনাবাহিনী একতরফা আওয়ামী লীগের দালালদের জমি ক্রয়ে নিযুক্ত করায় বিএনপি সমর্থিত জমির দালালরাও বিুব্ধ ছিল।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সাথে বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তেও সেনাবাহিনীকে একতরফাভাবে আওয়ামী লীগের সাথে বৈঠক করে চুক্তি করার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় সেনাবহিনীর এ রকম দলীয় পদপে গ্রহণ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ও প্রকল্পকে আরো বিতর্ক করে ফেলেছিল। তাছাড়া এইচএস স্কীমের চেয়ে আরো কয়েকগুণ বেশী এলাকা নিয়ে ম্যাপ করে ইন্টারনেটে দেয়ায় স্থানীয় জনসাধারণ ও ডেভলপারদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব রূপগঞ্জের সেনা জনতা সংঘর্ষ নিয়ে নানা বিশ্লেষণের মধ্যে একটি কথা বারবার মনে পড়ে, এ সংঘর্ষ কি শুধুই জমি দালালীর টাকা ভাগ নিয়ে, রাজনীতি আর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে, নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র? ঘটনার বিশ্লেষণে দেখা যায়, রূপগঞ্জ বিদ্রোহের ১০ দিনের মধ্যে দেশের তিনটি স্থানে বিভিন্ন কারণে সেনা জনতা মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। গত ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক আন্দোলন মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে তলব করা হলে সেনাবাহিনী ও বিুদ্ধ শ্রমিকরা মুখোমুখি হয়ে পড়ে।

যদিও সেনাবাহিনী দ্রুতই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এদিকে গত ১৮ অক্টোবর সাভারের জিরানীতে সেনাবহিনীতে খেলোয়াড় কোটায় লোক নিয়োগকে কেন্দ্র করে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির ফলে আগ্রহী চাকরী প্রার্থীরা উত্তেজিত হয়ে সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভাংচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ৩০ জন আহত হয়। এরপর ঘটে ২৩ তারিখের রূপগঞ্জের ঘটনা। এর বাইরেও পিলখানার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ভাবেও সেনা সদস্যদের উপর হামলা, মামলা, প্রভৃতি ঘটনা ঘটেছে।

ইতোপূর্বে বাংলাদেশে সেনা সদস্যদের উপর এত সহজে জনগণকে হামলা করতে দেখা যায়নি। সেনাবহিনীর মর্যাদা সবসময়ই জনগনের কাছে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। যখন সবাই ব্যর্থ হয়ে গেছে তখন সেনাবাহিনী সাহায্য প্রতাশা করেছে জনগণ। সেনাবাহিনীও এগিয়ে এসে তাদের উপর স্থাপিত আস্থার প্রতিদান দিয়েছে। কিন্তু সা¤প্রতিককালে সেই সেনাবাহিনীর উপর সামান্যতেই জনগণের এই বিষ্ফোরিত রূপ দেশের জন্য এক অশনী সঙ্কেতের আভাস দেয়।

ফলে একথা ভাবতে বাধ্য করে যে, সেনাবহিনী জনতার এই মুখোমুখি অবস্থান কি শুধুই সাময়িক বিক্ষোভের ফল না এ পেছনে রয়েছে কোনো সুদুর প্রসারী চক্রান্ত? এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড সেনাবাহিনীর বুকে যে আঘাতের ক্ষত সৃষ্টি করেছে তার রক্তক্ষরণ এখনো বন্ধ হয়ে যায় নি। রূপগঞ্জ বিদ্রোহ বা সা¤প্রতিক ঘটনা প্রবাহ সেই রক্তাত্ত ক্ষত আরো দগদগে করার কোনো ষড়যন্ত্র ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা জরুরী। রূপগঞ্জের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, সেদিন মানুষের যে বিপুল বিক্ষোভ ছিল, রাবার বুলেটবিদ্ধ মানুষ, আহত রক্তাত্ত মানুষ যেভাবে মরিয়া হয়ে সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করতে ছুটে গেছে তাতে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার না করা গেলে একজন সেনা সদস্যও অক্ষত অবস্থায় ফিরতো কিনা সন্দেহ। সোর্সটি আরো বলেন, আক্রান্ত হলে সেনাসদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে জনগণের উপর গুলি চালাতো । কিন্তু সেদিন যেভাবে জনতা বিুদ্ধ হয়েছিল তাতে এই হাজার হাজার জনতাকে গুলি করে থামানো যেতো না বরং তাতে আরো উগ্র হয়ে উঠতো জনগণ।

ফলে সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও বিপুল পরিমান ক্যাজুয়াল্টি হতো। পিলখানার ৫৭ জন সেনা অফিসারের লাশের পর যদি রূপগঞ্জে সমপরিমাণ তা তার থেকেও বেশী ক্যাজুয়াল্টি হতো তার প্রতিক্রিয়া সেনানিবাসে কিভাবে হতো তা ভাববার বিষয়। এ পর্যন্ত বলে সোর্সটি প্রশ্ন করেন, এমনই কোনো ষড়যন্ত্র রূপগঞ্জের ঘটনার পেছনে ছিল কিনা তা জোরালো তদন্ত করে দেখা দরকার। করণীয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে, প্রত্যেক নাগরিকের জন্য জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা। কাজেই দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় যারা সর্বদা সর্বোচ্চ ত্যাগে প্রস্তুত তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রর মৌলিক দায়িত্ব।

অন্যদিকে সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের যে কোনো স্থানে বসবাস ও বসতি স্থাপনের অধিকার প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে। কাজেই সেনাসদস্যদের আবাসনের নিশ্চয়তা দেয়া যেমন রাষ্ট্রের কর্তব্য তেমনি কাউকে কোনো স্থান থেকে জোর করে উচ্ছেদ করে অন্যের আবাসন ব্যবস্থা করাও সংবিধান বিরোধী ও মানবাধিকার পরিপন্থী। কাজেই এ দুটি শর্ত সমানভাবে সামনে রেখে এগিয়ে নিতে হবে এইচএস স্কীম। জোর করে কাউকে তার বাপদাদা সাত পুরুষের ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে এএইচএস বাস্তবায়ন কারো কাম্য হতে পারে না। সেনাবহিনীও সেটা চায় না।

কাজেই এএইচএস বাস্তবায়নে সর্বাগ্রে জনগণের মধ্যে মতৈক্য সৃষ্টি করতে হবে। জনসাধারণকে আস্থায় আনতে হবে, তাদের মধ্যে সৃষ্ট সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে হবে। জমি ক্রয়ে প্রতিযোগিতামূলক বাজার মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। দালাল প্রথা বাদ দিয়ে এমন বিকল্প চিন্তা করতে হবে যেন জনগণ জমির সর্বোচ্চ মূল্য পেতে পারে। তবে পোশাকধারী সেনা সদস্য দিয়ে জমি ক্রয় পরিহার করা উচিত।

কেননা এটা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকে বিতর্কিত করতে পারে। বিডিআর সদস্যদের দিয়ে অপারেশন ডালভাত পরিচালনা ও তার ফলাফল পর্যালোচনা করে বিকল্প কোনো সর্বোত্তমপন্থা বের করা উচিত। সেনা অফিসারদের পাশাপাশি জেসিও ও এনসিওদের আবাসন ব্যবস্থার উদ্যোগও জোরালো করা প্রয়োজন। রূপগঞ্জে দ্রুত স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এলাকায় এখনো যেসকল যেসকল গুজব রয়েছে তা বন্ধ করতে হবে।

ভয়ে বা অন্য কারণে এখনো যে সকল লোক নিখোঁজ রয়েছে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। এলাকাবাসীর মন থেকে সকল ভয় দুর করতে হবে। তাদের মন জয় করেই জমি কিনতে হবে। হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা লোকের নামে যে গণমামলা করা হয়েছে প্রত্যাহার করতে হবে। সাত পুরুষের বসতভিটা রক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার।

জীবনভরই মানুষ এ ভিটা রক্ষায় সংগ্রাম করে। ঝড়, বন্যাসহ নানা আগ্রাসনের হাত থেকে মানুষ তার বসতভিটা রক্ষায় নিরন্তর সংগ্রাম করে। যে ভিটায় তার পূর্ব পুরুষের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে ভিটায় তার বাপদাদা স্বজনের কবর আছে সে ভিটা সে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে চাইবে এটা খুবই স্বাভাবিক ও মানবিক। ২৩ তারিখের বিক্ষোভ এর থেকে ভিন্ন কিছু নয়। তবে তাদের কথা ভিন্ন যারা মানুষের এই স্বাভাবিক আবেগকে আর্থিক, রাজনৈতিক, ক্ষমতার স্বার্থে ব্যবহারের নিমিত্তে উষ্কে দিয়েছে।

কিম্বা রূপগঞ্জের ঘটনার পেছনে যদি কোনো ভিন্ন ষড়যন্ত্র থাকে তবে তা চিহ্ণিত করে চক্রান্তকারীদের খুঁজে বের করতে হবে। রূপগঞ্জের ঘটনার মূল আসামী তারাই। অতি দ্রুত তাদের সুনির্দিষ্টবাবে চিহ্ণিত করতে হবে, মামলা করতে হবে তাদের বিরুদ্ধে। উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বাকি সকল জনগণকে মুক্ত করে দিতে হবে।

কারণ তাদের জমি কিনতে হলে এ ভিন্ন বিকল্প নেই। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে ও ইউএন মিশনে যেভাবে সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এখানেও সেভাবেই এগুতে হবে। যাদের জমি ক্রয় করা হবে এবং যারা তাদের পূর্ব পরুষের ভিটাতে থাকতে চায় তাদের জন্য প্রকল্পের মধ্যেই প্লট বরাদ্দ নিশ্চিত করা যায় কিনা ভেবে দেখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাজউকের মতো করে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্লট বিতরণ করা যেতে পারে যারা প্রকল্পের মূল নকশা অনুসরণ করেই সেখানে ভবন নির্মাণ করবে। জমির মালিকগণ প্রকল্প এলাকায় বসবাস করতে চাইলে তাদের উচ্ছেদ করা যাবে না।

অন্যত্র জমি কিনে তাদের আপসারণ উচ্ছেদেরই নামান্তর। এ চিন্তা বাদ দিতে হবে। অন্যদিকে এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও জনগণকে মুখোমুখি করার কোনো চক্রান্ত ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত বিডিআর সদস্যদের বিচার শুরু হয়েছে। ঐ হত্যাকাণ্ডে গঠিত দুইটি তদন্ত কমিটিই তাতে দেশী বিদেশী শক্তির সুদুরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেছে।

কিন্তু পেছনের শক্তির বিচার তো দুরের কথা আজো চিহ্ণিত করাই সম্ভব হয়নি। তা করা হলে হয়তো আরো অনেক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা যেতো। এ কথা অনস্বীকার্য যে যদি রূপগঞ্জে একটি বিশ্বমানের স্যাটেলাইট শহর গড়ে ওঠে তার প্রতিফলন এলাকার সকল ক্ষেত্রে পড়বে, তার আলোর রোশনাইয়ে আশপাশের এলাকার অন্ধকারও দুর হবে। আবার স্থানীয় জনগণকে বাদ দিয়ে বা তাদের বৈরী করে সেনা অফিসারগণ বিশ্বমানের স্যাটেলাইট শহর হয়তো তৈরী করতে পারবেন, কিন্তু বাস করতে পারবেন না। কারণ তাদের স্বাচ্ছন্দময় জীবনের সাপ্লাই লাইন এই রূপগঞ্জের জনগণই।

তারাই তাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। সুখে দুঃখে, বিপদে আপদে আত্মীয়ের থেকে প্রতিবেশীরাই আগে এগিয়ে আসে। কাজেই এএইচএস হোক সেনা অফিসার ও স্থানীয় জনগনের উইন উইন সিচুয়েশনের ভিত্তিতে, আন্তরিক যুথবদ্ধতায়Ñ এ প্রত্যাশা সকলের। সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব, ৩০ অক্টোবর, ২০১০ইং।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.